Homeআন্তর্জাতিককরোনায় মৃত্যুতে সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে গেল ভারত , গোষ্ঠী সংক্রমনের মুখে এবার সবার...

করোনায় মৃত্যুতে সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে গেল ভারত , গোষ্ঠী সংক্রমনের মুখে এবার সবার জন্যই জরুরি মাস্ক, জানাল আইসিএমআর

নিজস্ব সংবাদদাতা- ভারতে করোনা ভাইরাসে এখনও অবধি মৃত্যু হল ১০৯ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪০৬৭। গত ২৪ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা মিলেছে ৭০০ জন। মাত্র ২৯১ জন করোনা মুক্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। সোমবার সকাল অবধি আপডেট এই তথ্য অনুসারে সংক্রমনের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র যেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯০জন। তারপরই রয়েছে তমিলনাডু ও দিল্লি। আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৭১ ও ৫০৩।

এই সময়কালে সারা বিশ্বে আক্রান্তর সংখ্যা ১২লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আর বিশ্বব্যাপী এখনও অবধি করোনার বলি ৭০হাজার। ৩লক্ষ আক্রান্ত নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন শীর্ষে। স্পেনে এই সংখ্যা এখন ১লক্ষ ৩১হাজার, ইতালি ১লক্ষ ২৮ হাজার। মৃত্যুর হারে ইতালি শীর্ষে, সংখ্যাটা ১৫হাজার। ১২হাজারেরও বেশি মৃত্যু নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। আর ১০হাজার মৃত্যু ছাড়িয়েছে পরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে আশার কথা ইতালি আর স্পেনে মৃত্যুর হার কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে গত ২৪ঘন্টায় বৃটেনে মৃত্যুর হার বেড়েছে লাফিয়ে যা কিনা শতাংশের হারে ইতালিকে ছাড়িয়ে গেছে। রবিবার গত ২ সপ্তাহের অন্য দিনের তুলনায় ইতালিতে মারা গেছেন ৫২৫জন। স্পেনের মৃত্যুর হার কিছুটা কমে ওই একই দিনে ৬৭৪। কিন্তু রবিবার বৃটেনে ৬০০ জনের মৃত্যু হয়েছে যা গত দুসপ্তাহের দৈনিক হারের চেয়ে অনেকটাই বেশি।

ভারতে গত ২দিনের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০%বেড়েছে। যা কিনা গত ৪৮ঘন্টার আনুপাতিক হারে কিছুটা বেশি। কোনও কোনও সমীক্ষার হিসাব অনুযায়ী আগামী ৬দিনে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১০হাজার হতে পারে। যদি এই বৃদ্ধির হার একই থাকে। লকডাউনের ২১দিনের মধ্যে ১৩দিন অতিক্রম করেছে ভারত। এরপরও আক্রান্তর সংখ্যা বাড়ছে যার অন্যতম কারন হিসেবে কিছুটা দায়ী করা হয়েছে দিল্লির নিজামউদ্দিন মসজিদে তাবলিগী জামাতের ধর্ম সম্মেলনে উপস্থিত সংক্রমনকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে কেন্দ্র অস্বীকার করলেও গোষ্ঠী সংক্রমণের স্তরে প্রবেশ করে গেছে ভারত। খোদ পশ্চিমবঙ্গে এমন আক্রান্তের হদিস মিলেছে যারা কখনোই বিদেশযাত্রা করেননি। লকডাউন সত্ত্বেও গত চব্বিশ ঘন্টায় হুহু করে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। যার একটা অংশ দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত। পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ার আক্রান্তের কোনো লক্ষণ না থাকা সত্ত্বেও করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। গোটা দেশজুড়েই চিরুনি তল্লাশি চলছে নিজামুদ্দিন ফেরতদের।

অন্যদিকে রাজ্য সরকার এখনো মানতে নারাজ এই রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। যদিও গোটা দেশের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশ খানিকটা কম। সোমবার বেলা ১০টা অবধি সংখ্যাটা ৮০।এই পরিস্থিতিতে যাতে আক্রান্তের সংখ্যায় লাগাম টানা যায় তাই রাজ্য সরকার হটস্পট চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে। রাজ্যের এক স্বাস্থ্য কর্তা জানান, এই রাজ্যে গত একমাসে বিদেশ এবং অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা নাগরিকদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রত্যেকের ট্র্যাভেল হিস্ট্রি দেখা হচ্ছে। কারন এই সব মানুষের থেকেই আশেপাশে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। ইতোমধ্যেই আশা কর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছেন।নিজামুদ্দিন ফেরতদের ওপরেও নজর রাখার কাজ শুরু হয়েছে। মুখ্যসচিব জানান একবার কারোর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এলেই নজরদারি শুরু হচ্ছে। তাঁর আশেপাশে বা সংস্পর্ষে আশা ব্যক্তিদের কোরানটাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যে আইসিএমআর জানাচ্ছে ভারতের এই মুহূর্তে যা অবস্থা তাতে বাড়ি থেকে বেরোলেই মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। একেই ভারতের বাজারে এন৯৫ মাস্কের অভাব রয়েছে, তার ওপর কালোবাজারির কারনে বাজারে দ্বিস্তর এবং ত্রিস্তর মাস্কও প্রায় অমিল। কোথাও মিললেও তা বিকোচ্ছে চড়া দামে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার মাস্ক ও স্যানিটাইজার মজুত করার ওপর কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে এন৯৫ মাস্ক খুচরো ব্যবসায়ীরা সর্বাধিক ১০০টি এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা সর্বাধিক ১০০০টি মজুত রাখতে পারবেন। দ্বিস্তর এবং ত্রিস্তর মাস্কও খুচরো ব্যবসায়িরা ২০০টি এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা ৩০০০টি মজুত করতে পারবেন। স্যানিটাইজার খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে ৫ লিটার এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ১০০ লিটারের বেশি রাখা যাবেনা। এবার দেখা যাক রাজ্য সরকারের নির্দেশিকায় ডুমুরের ফুল হয়ে যাওয়া মাস্ক স্যানিটাইজার বাজারে দেখা যায় কিনা।

RELATED ARTICLES

Most Popular