নিজস্ব সংবাদদাতা: দেশ জুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে রাশ টানতে সভা সমিতি ইত্যাদি জন সমাগম যতদুর সম্ভব না করার পক্ষেই কেন্দ্র। বিরোধী দল কংগ্রেসও রাশ টানছে জনবহুল কর্মসূচীতে। কিন্তু এবার করোনার প্রভাব পড়তে চলেছে দেশের চিরাচরিত উৎসব এবং পর্যটনেও। যেমন আগ্রার মেয়র নভীন জৈন কেন্দ্রের কাছে তাজমহল বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন। যতদিন না পরিস্থিতি ঠিক হচ্ছে ততদিন এই ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। ঠিক একই ঘটনা ঘটার আশংকা দেখা দিতে পারে অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলির ক্ষেত্রেও।
ইতিমধ্যেই ইউজিসির নির্দেশিকা মেনে বিশ্বভারতী বাতিল করেছে তাদের ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উৎসব। আগামী ৯তারিখ হওয়ার কথা ছিল এই উৎসবের। বাংলা ও বাংলার বাইরে, মায় বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু এই উৎসব বাতিল হওয়ায় মন খারাপ পড়ুয়াদের। অন্যদিকে এবার ভাটা মায়াপুরের ইসকন মন্দিরেও। বহু বিদেশী পর্যটক ও ভক্ত বাতিল করেছেন মায়াপুরে আসা আবার অনেকের অনুমতি মেলেনি। দোল উপলক্ষ্যে চিন থেকে পঁয়তাল্লিশ জন আসার কথা থাকলেও নিষেধাজ্ঞার ফলে এসেছেন মাত্র দু’জন। বাকিদের ইচ্ছা থাকলেও আসা সম্ভব হয়নি।
আসলে ওই পঁয়তাল্লিশ জনই চিনের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা। তাঁরা দল বেঁধে দোলের সময়ে মায়াপুর ইস্কনের নবদ্বীপ মণ্ডল পরিক্রমায় নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন। কয়েক মাস আগে যখন তাঁরা এ সব পরিকল্পনা করেছিলেন, তখনও করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়নি চিন সহ অন্যান্য দেশ।
জাপান, কোরিয়া, হংকং থেকে কারও আসার কোনও উপায় নেই। শুধু বিদেশি ভক্ত বলে নয়, সামগ্রিক ভাবেই এবারে মানুষের ঢল এখনও পর্যন্ত বেশ কম।’
মায়াপুর ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাস বলেন, ‘অন্য বারের তুলনায় এবার আড়ম্বর কম। করোনার সংক্রমণ নিয়ে সারা বিশ্ব আতঙ্কিত। ফলে অনেকেই ঝুঁকি নিতে চাননি। যে সমস্ত বিদেশি ভক্তরা এসেছেন তারা এই সংক্রমণের আগেই এসেছেন। অন্যদিকে করোনা নিয়ে আজ বৈঠকে বসবেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষবর্ধন ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বর্তমানে দেশজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে ৩১ জন। ভারতের পাশাপাশি ইরান, ইরাক, ইতালি, আমেরিকাতেও থাবা বসিয়েছে করোনা। বিভিন্ন দেশ থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর এসেছে।
করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সেব্যাপারে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যগুলির আলোচনা চলছে। বিদেশি নাগরিককে এ দেশে ঢুকতে হলে মেডিক্যাল স্ক্রিনিং-এর মধ্যে দিয়ে যেতেই হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ভারতে। ইতিমধ্যেই ভারতের বিভিন্ন শহরে করোনার চিকিৎসার জন্য অনেকগুলি সেন্টার খোলা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালেও আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যেহেতু করোনা ভাইরাসটি মূলত বিদেশ থেকেই এদেশে ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই এখনই করোনা আক্রান্ত দেশগুলিতে না গেলে বা সেখান থেকে নতুন করে কেউ দেশে না এলে ভারতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে সবসময়ই সাবধানতা অবলম্বন করে চলার পরামর্শ দিয়েছে হু। আর সেই পরামর্শ মেনেই চলছে কাজ ।