নিউজ ডেস্ক:বিধানসভা নির্বাচনের মুখেই তালা ঝুলল হুগলির ওয়েলিংটন জুট মিলে। এমনিতেই চলতি সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসংস্থান নিয়ে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে তার ওপর ভোটের আগেই নতুন করে কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মচারী বেকার হয়ে পড়ার সম্ভাবনায় কপালে চিন্তার ভাঁজ শাসকদলের। এই ঘটনাকে মালিকপক্ষের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগে সরব শ্রমিকরা।
কারখানা টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজ হারালেন অন্তত ২ হাজার শ্রমিক। রবিবার সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে শ্রমিকরা দেখেন, রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিলের গেটে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ লাগানো রয়েছে। তৎক্ষণাৎ মাথায় হাত পড়ে তাদের। প্রতিবাদে সকালেই জিটি রোড অবরোধ করেন কাজহারা শ্রমিকরা।
কংগ্রেস পরিচালিত আইএনটিইউসি ইতিমধ্যেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে রাজ্য সরকারের উদাসীনতার জন্য। বলেছে সরকারের নিস্পৃহ ভূমিকায় প্রাচীন ওয়েলিংটন জুটমিলের অবস্থা এমন। শ্রম দফতরের সঙ্গে একের পর এক আলোচনার পরেও সমস্যার জট কাটেনি।একেই করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের ফলে কাজ বন্ধ ছিল শ্রমিকদের।যাও কাজ করতে শুরু করেছিলেন।তাও বন্ধ হতে চলেছে। শ্রমিকদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি যেমন, তাতে জুটমিল ফের নাও খুলতে পারে। সেক্ষেত্রে স্থায়ীভাবেই বন্ধ হয়ে যাবে রাজ্যের আরও একটি জুটমিল।
গত বছর ডিসেম্বর মাসেই এক সহকর্মীকে ‘অনৈতিক’ ভাবে বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে কাজ বন্ধ রেখেছিলেন রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিলের শ্রমিকেরা। তৎক্ষণাৎ ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করে দেয় মিল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের সেসময় অভিযোগ ছিল, কর্তৃপক্ষ নিয়ম-নীতি মানছেন না। ২০০০ লোকের কাজ করার কথা। অথচ, ১২০০-১৩০০ লোক কাজ করছেন। বাকিরা কাজ পাচ্ছেন না। বদলে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। শ্রমিকদের ইএসআই, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা পড়ছে না বলেও অভিযোগে সরব হয়েছিল তারা।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও তালা পড়েছিল হুগলির ওয়েলিংটন জুটমিলে। হোলির ছুটির পর কাজে যোগ দিতে গিয়ে শ্রমিকদের মাথায় হাত পড়েছিল। শ্রমিকদের অভিযোগ ছিল, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিলে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে শ্রমিক অসন্তোষ এবং কাঁচামালের অভাবকে এর জন্য দায়ী করেছে জুটমিল কর্তৃপক্ষ।
করোনা ও লকডাউনের জেরে এমনিতেই ক্ষতির মুখে রাজ্যের শিল্পাঞ্চলগুলি। রাজ্যের বিভিন্ন কলকারখানায় উৎপাদন নিয়ে শ্রমিক-মালিক অসন্তোষ লেগেই রয়েছে। রাজ্যের শিল্পের এমন হাল নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। তারওপর আজ ব্রিগেডবেলায় এই জুটমিল বন্ধ হওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারকে কী বার্তা দেয় বাম-কংগ্রেস জোট। সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।