নিজস্ব সংবাদদাতা: ৮ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে খড়গপুর শহরের ৫টি ওয়ার্ড জুড়ে কন্টেনমেন্ট জোন। আর সেই পাঁচ ওয়ার্ড থেকে কোনও ব্যক্তিকেই তাদের ক্যাম্পাসে
ঢুকতে দেওয়া হবেনা বলে জানিয়ে দিল আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur)। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নিরাপত্তারক্ষীরা কড়াকড়ি শুরু করে দেন ক্যাম্পাসে প্রবেশ পথের ৪টি ফটকেই। ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাওয়া মানুষজন যে খড়গপুর পৌর এলাকার অন্তর্গত ৫টি কন্টেনমেন্ট জোনের বাসিন্দা নন তার প্রমাণপত্র দেখাতে বলা হয়। যদিও প্রথমদিন এমন প্রমাণপত্র নেই বলে জানানোয় কিছুটা ছাড় পাওয়া গেছে। কিন্তু শুক্রবার থেকে পরিস্কার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভোটার আইকার্ড অথবা ওয়ার্ড উল্লেখিত আছে এমন পরিচিতি পত্র ছাড়া প্রবেশ করা যাবেনা ক্যাম্পাসের ভেতরে।
উল্লেখ্য আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur) ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কাজে আশেপাশের এলাকার মানুষকে প্রবেশ করতে হয়। প্রথমতঃ স্থায়ী চাকরি করেন এমন মানুষ। অস্থায়ী ভাবে ঠিকাদারের অধীনে থাকা সাফাইকর্মী সহ নানা ধরনের কর্মী। আইআইটির ভেতরে দোকান আছে এমন মালিক ও কর্মচারীরা। ক্যাম্পাসের ভেতরে ব্যাঙ্ক, গ্যাস গোডাউনের কর্মী ও খরিদ্দার, পেনশন গ্রাহক, কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারি ইত্যাদি। আইআইটি কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট নির্দেশ খড়গপুর পৌরসভার ১৩, ১৫, ৩১, ৩২ এবং ৩৫নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা আগামী ১৪ই জুলাই অবধি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেননা। কেবলমাত্র জরুরি বিভাগে যুক্ত এমন স্থায়ী বা অস্থায়ী কর্মী ছাড়া। এক্ষেত্রে অস্থায়ী কর্মীদের জন্য বিশেষ গেট পাশ ইস্যু করবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। শুক্রবার থেকে এই নিয়মের কোনও অন্যথা হবেনা বলেই জানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে খড়গপুর শহরের কন্টেনমেন্ট বলে ঘোষিত ৫টি ওয়ার্ডের ৪টি ওয়ার্ড খড়গপুর টাউন থানার অধীন। ১৩,১৫,৩১ এবং ৩২ নম্বর ওয়ার্ড অর্থাৎ মথুরাকাটি, নিউ সেটেলমেন্ট, নিমপুরার কিছুটা অংশ, বড় এবং ছোট আয়মা, আরামবাটি এলাকায় কঠিন ভাবেই কন্টেনমেন্ট আইন মানা হয়েছে। ওই এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত চিহ্নিত করে ঘিরে দেওয়া হয়েছে বাঁশ অথবা গার্ডরেল দিয়ে। এলাকার ভেতরে কোনও বাজার, একক দোকান খুলতে দেওয়া হয়নি। ১৩নম্বর ওয়ার্ডের বিগবাজারের সামনে দিয়ে নিমপুরা যাওয়ার রাস্তার পূর্বে মথুরাকাটি এবং পশ্চিমদিকের কনকদুর্গা মন্দির সংলগ্ন এলাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে দুই আয়মার প্রবেশ মুখের রাস্তা ঘিরে দিয়েছে পুলিশ।
মেদিনীপুর শহরেও বৃহস্পতিবার রাতে ১,২,৪,১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ‘মাইক্রো কন্টেনমেন্ট’ বোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে পুলিশ। শুধু তাই নয়। যে বাড়িতে করোনা আক্রান্ত হোম আইশোলেশনে রয়েছেন তাঁদের বাড়ির দেওয়ালে অথবা গেটে নীল রঙের ফ্লেক্স লাগিয়ে করোনা পজিটিভ রুগীর নাম, পজিটিভ চিহ্নিত হওয়ার তারিখ, বাড়িতে আক্রান্তের মোট সংখ্যা এবং সম্ভাব্য করোনা মুক্তির তারিখ লিখে দেওয়া হচ্ছে।
যদিও এর বিপরীত ছবি দেখা মিলেছে খড়গপুর গ্রামীন থানার আওতায় থাকা ৩৫নম্বর ওয়ার্ডের তালবাগিচা এলাকায়। কোনও এলাকা ঘেরা তো দূরের কথা বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকায় পুলিশের দেখাই মেলেনি কন্টেনমেন্ট কার্যকরী করার জন্য। তালবাগিচা বাজার খোলা ছিল সকাল ১০টা অবধি নিয়ম অনুযায়ী যা থাকারই কথা নয়। অবশ্য শুধু খড়গপুর গ্রামীন থানাই নয়। ঘাটাল, নারায়নগড়, বেলদা, কেশিয়াড়ী কোনও জায়গাতেই কন্টেনমেন্ট বলবৎ করার জন্য পুলিশ সক্রিয় হয়েছে এমনটা নজরে পড়েনি বলেই দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
এদিকে কন্টেনমেন্ট জোনের আওতায় থাকা নাগরিকরা প্রশ্ন তুলেছেন যদি কন্টেনমেন্ট জোনের ভেতরে বাজার, দোকানপাট বন্ধ রাখা হয় এবং নিয়মমাফিক ওই জোনের মানুষজন বাইরে বেরুতে না পারেন তাহলে তাঁদের রেশনের ব্যবস্থা করছেনা কেন প্রশাসন। যদিও এই দাবি অত্যন্ত সঙ্গত, কারন সরকারের ঘোষিত নীতি অনুযায়ী কন্টেনমেন্ট জোনের আওতায় থাকা নাগরিকদের রেশন ও চিকিৎসার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনকেই নিতে হয়।