নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা উত্তর দুনিয়ায় বদলে যাবে সামাজিক অভ্যাস থেকে ব্যক্তিগত জীবন যাপনের অনেকটাই। অতিমারি পরবর্তী পর্যায়ে চেনা অভ্যাস ছেড়ে হাঁটতে হবে নতুন অনেক পথে যা আমাদের একেবারেই অচেনা। আর সেই দুনিয়ায় পুরানো আদল ছেড়ে বদলাবে শিল্প বানিজ্যের চেহারাটাও। তৈরি হবে নতুন নতুন উদ্ভাবন আর নয়া উদ্যোগের। কী কী হতে পারে সেই উদ্ভাবন আর সম্ভবনা এ নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে দেশের প্রাচীনতম প্রযুক্তি ও কারিগরী প্রতিষ্ঠান, দেশের অন্যতম উৎকর্ষ কেন্দ্র আইআইটি খড়গপুর। আইআইটি খড়গপুরের ‘রাজেন্দ্র মিশ্র স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্টারপ্রেনারশিপ’ দেশের তরুন ও নয়া উদ্যোগপতিদের জন্য মোট ১৬টি পর্বের এক বিশেষ বক্তৃতামালা পরিবেশন করতে চলেছে যার শিরোনামই হল, ‘ করোনা উত্তর দুনিয়ায় উদ্ভাবন ও উদ্যোগ।” বা আইআইটির ভাষায় “Innovation and Entrepreneurship in a Post-COVID World”.
ভারত সরকারের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অন টেকনোলজি এনহ্যান্স লার্নিং (NPTEL) এর অন্তর্ভুক্ত এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য শিল্প ও বাণিজ্যে ক্ষেত্রে নয়া ও তরুন উদ্যোগপতিদের জন্য সামনের দুনিয়ায় সেই সম্ভবনার কথা তুলে ধরা ও সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করা যা মোট কথায় করোনা উত্তর দুনিয়ায় তাঁদের ব্যবসায়িক সাফল্য এনে দেবে। আইআইটি জানাচ্ছে, তথ্য বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, কৃষি প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ শক্তি, গ্রামীন উদ্ভাবন, আর্থিক প্রযুক্তি এবং সরবরাহ ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রেই কাজের সুযোগ আসছে। কী সেই পরিবর্তন, তার বাস্তবতা, কৌশল ও প্রয়োগ নিয়েই আলোকপাত করা হবে এই বক্তৃতামালায়।
নতুন ও তরুন উদ্যোগপতিদের করোনা উত্তর পর্বের আশু চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে অবহিত করানো, তা থেকে উত্তরনের উপায় বাৎলানো এবং উন্নতির সুযোগ গুলিকে আত্তিকরনে উদ্বুদ্ধ করাই এই ১৬ পর্বের উদ্দেশ্য। পাশাপাশি সামনঞ্জস্যপূর্ন নূন্যতম বিনিয়োগ স্বাপেক্ষে কী ভাবে একটি ব্যবসায়িক উদ্যোগ গড়ে তোলা যায় তার আদর্শ রূপও এখানে বিবৃত করা হবে। পরিবেশন করা হবে স্মার্ট ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতিও।
কলেজ পড়ুয়া, ইতিমধ্যে কর্মরত ব্যক্তিত্ব, উদ্যোগপতি, উদ্ভাবক, চিন্তাবিদ, প্রকৌশলী থেকে শুরু করে
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত ব্যক্তি যারা নতুন কিছু করতে আগ্রহী তাঁরা নতুন অর্থনৈতিক দুনিয়ার সন্ধান পাবেন এই পাঠক্রম থেকে।
আগামী ২২-২৯ জুন ভারত সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক নিজস্ব মাধ্যম স্বয়ংপ্রভা চ্যানেল ছাড়াও জাতীয় ডিজিটাল লাইব্রেরীর নিজস্ব মাধ্যমে সম্প্রচারিত হবে এই বক্তৃতা গুলি। এই বক্তৃতামালা বা পাঠক্রমের সংযোজক অধ্যাপক গবেষক মৃগাঙ্ক শারদ বলেন, “স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত গবেষক অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞরা ৮দিনে এই ১৬টি বিষয় রাখবেন যা কিনা করোনা উত্তর দেশকে নতুন উদ্যোগের দিশা দেখাবে। শুরু থেকেই কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল আইআইটি খড়গপুর, নানা উদ্ভাবনের স্বাক্ষ্য রয়েছে তার। নিরন্তর সেই যুদ্ধে জাতিকে ফের নয়া দিশা দেখানোর অন্যতম উদ্যোগ এই বক্তৃতামালা বা পাঠক্রম।”
আইআইটি খড়গপুরের অধ্যাপক প্রাক্তন ডিরেক্টর পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী, এনআইটিআইই মুম্বাইয়ের ডিরেক্টর অধ্যাপক মনোজ তিওয়ারি, ক্যালিফোর্নিয়ার ‘এসআরআইআই’য়ের ডিরেক্টর অধ্যাপক গবেষক কৃষ সিংহ সহ একগুচ্ছ প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞ এই পাঠক্রম উপস্থাপিত করবেন। রাজেন্দ্র মিশ্র স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্টারপ্রেনারশিপের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক পার্থ প্রতিম দাস বলেন, ” কোভিডের মৃত্যু পরোয়ানার মুখে দাঁড়িয়ে সমস্ত উদ্ভাবন, আবিস্কার, এখন একটি সংঘবদ্ধ প্রক্রিয়ার অঙ্গীভূত হয়ে যাবে যা কিনা এই কঠিন সঙ্কট ও সময়কে অতিক্রম করে সমস্ত জাতিকে উঁচুতে, আরও উঁচুতে উড়তে সাহায্য করবে। এই বক্তৃতামালার মধ্যে দিয়ে নতুন নতুন উদ্ভাবনের সেই গভীরতায় পৌঁছাতে চাইছি আমরা যা কারিগরী ও প্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে।”