Homeএখন খবরস্কুটি যদি নন্দীগ্রামে গিয়েই পড়া ঠিক হয়ে থাকে আমরা কী করতে পারি?...

স্কুটি যদি নন্দীগ্রামে গিয়েই পড়া ঠিক হয়ে থাকে আমরা কী করতে পারি? কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্টেই কী শ্লেষ আত্মবিশ্বাসী মোদির

নিজস্ব সংবাদদাতা: পেট্রল ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইলেকট্রিক স্কুটি চালিয়ে অভিনব প্রতিবাদ করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু তা যে মোদির মারাত্মক পরিহাস আর কটাক্ষ হয়ে ফিরবে তা কে জানত? ৭ই মার্চ রবিবার ব্রিগেডের সভা থেকে সেই স্কুটিই যদি নন্দীগ্রামে গিয়ে পড়ে যায় তবে আমাদের কী করার আছে বলে উপস্থিত জনতার প্রচুর করতালি কুড়িয়ে নিলেন মোদি।

মোদি এদিন বলেন, ‘দিদি আপনি শুধু বাংলার মেয়ে নন সারা ভারতের। তাই আপনি যখন স্কুটি চালাচ্ছিলেন তখন আমরা খুবই উদ্বেগে ছিলাম। যদি কিছু একটা হয়ে যায় তাহলে কী হবে। আমরা সবাই মনে মনে প্রার্থনা করছি তেমন কিছু না হোক। কিন্তু যদি তেমন কিছু হত তাহলে আপনি দোষ দিতেন সেই রাজ্যকে যে রাজ্যে এই স্কুটি তৈরি হয়েছে।” মোদির এই শ্লেষের মধ্যে ছিল তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাট। মমতা ব্যানার্জী সম্প্রতি বলতে শুরু করেছেন, ‘বাংলাকে গুজরাট বানাতে দিচ্ছিনা।’ যে গুজরাটের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত বিষোদগার সেই গুজরাটে তৈরিই স্কুটি চড়েই তিনি প্রতিবাদ করলেন এমনটাই নাম না বলেই এদিন বুঝিয়ে দেন মোদি।

নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা এমনই স্বভাবের প্রতি কটাক্ষ করে মোদি বলেন, যদি আপনি পড়ে যেতেন তবে এই স্কুটি যে রাজ্য বানিয়েছে সেই রাজ্যের দোষ হত। যদি সাউথ বানাতো সাউথের, নর্থ বানালে নর্থের কিংবা মধ্যপ্রদেশ বানালে তাঁদেরই দোষ দিতেন আপনি। এরপরেই তাঁর তীব্র কটাক্ষ, ‘তা দিদি, আপনি স্কুটিতে চড়ে ভবানীপুরের দিকে না গিয়ে হঠাৎ নন্দীগ্রামের দিকে গেলেন কেন? এখন যদি ঠিকই হয়ে থাকে ওই স্কুটি নন্দীগ্রামেই পড়ে যাবে তো আমরা তার কী করতে পারি?”

উল্লেখ্য এবার ভাবানীপুরের পরিবর্তে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে বিজেপির নির্দেশে এই নন্দীগ্রাম থেকেই লড়াই করছেন এখানকার সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী যিনি মমতা দাঁড়ানোর কথা বলতেই বলেছিলেন, ‘অর্ধ লক্ষ ভোটে মুখ্যমন্ত্রী কে হারাতে না পারলে রাজনীতিই ছেড়ে দেব।’ এই একই কথা শুভেন্দু এদিন ব্রিগেডের ময়দান থেকেও বলেছেন। সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা মোদিজীকে বাংলা দিন আমি মোদিজীকে নন্দীগ্রাম উপহার দেব।’

জানা গেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গোয়েন্দাদের কাছ থেকে অমিত শাহ জানতে পারেন যে, নন্দীগ্রামে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই তৃনমূল। স্থানীয় নেতাদের পাহাড় প্রমান বৈভব, সরকারি প্রকল্পে কাটমানি এবং সর্বশেষ আমফানের দুর্নীতি নিয়ে নন্দীগ্রামে তৃনমূলের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে। যার প্রতিফলন ভোটের বাক্সে পড়তে পারে। এরপরই অমিত শাহ জানিয়ে দেন যে শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রাম থেকেই দাঁড়ান। সেই মত নামও ঘোষণা হয়ে গেছে তাঁর। ফলে লড়াই এখানে জোরদার।

বিজেপির আরও কৌশল, মমতার বিরুদ্ধে শুভেন্দুর মত হেভিওয়েট প্রার্থী দিয়ে তৃনমূলের দলনেত্রী এবং তৃনমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে নন্দীগ্রামের মাটিতেই আটকে দেওয়া। মুখ্যমন্ত্রীর মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে যখন তৃনমূল কংগ্রেস নন্দীগ্রামের মাটিতেই নিজেদের ঘনীভূত করবে তখন প্রথম দু’দফার বাদবাকি ৫৭টি আসনে বিজেপি ঝাঁপাবে সর্বশক্তি নিয়ে। বিজেপির লক্ষ এই ৫৮টি আসনের মধ্যে অন্তত ৪৫টি আসন নিজেদের ঝুলিতে ভরা। রাজনীতিকদের ধারণা নন্দীগ্রামের সেই আশাব্যঞ্জক চিত্রই প্রধানমন্ত্রীকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে যেখান থেকেই তিনি এই রসিকতা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছেন, যদি নন্দীগ্রামে স্কুটি পড়ে যায় তবে আমরা কী করব?

এদিন বিজেপির নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে মোদি আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে আপনাদের ওপর যে আক্রমন হয়েছে তা আমি ভুলে যাইনি। সেই জায়গা থেকেই আপনাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি আপনারা সর্বশক্তি দিয়ে লড়ে যান। নির্ভয়ে কাজ করুন। আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে আমি আপনাদের সঙ্গে রয়েছি। সরকারি আধিকারিকদেরও প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান, ‘আপনারা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করুন, আপনাদের কর্তব্য পালনে ভয় পাবেননা। ২রা মের পর এই সরকার থাকছেনা। জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,’ দ্বিধাহীন, নির্ভয়ে ভোট দিন। আপনার একটা ছাপ, তৃনমূল সাফ।’

RELATED ARTICLES

Most Popular