অরুণ কুমার সাউ , মহিষাদল : আবারও মানু্ষের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার মাশুল নিজের জীবন দিয়ে মেটাল এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। রাস্তা জুড়ে নির্মান সামগ্রী ফেলে রাখায় সংকীর্ন পরিসরের রাস্তায় পথ করে নিতে না পারায় বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল ওই ছাত্রীর। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের এই মর্মান্তিক ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটেন পড়েন জনতা। জনতাকে শান্ত করতে ছুটে আসতে হয় পুলিশকে।
এদিন দুপুরে হলদিয়া- মেচেদা রাজ্য সড়কে ঘটনাটি ঘটে লক্ষ্যা হাইস্কুলের কাছেই যে স্কুল থেকে অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে মৃত পরীক্ষার্থীর নাম বনশ্রী রাউল(১৭)। বাড়ি মহিষাদল থানার অন্তর্গত লক্ষ্যা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মাসুড়িয়া গ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রী সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল। পথে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে।
পেছনেই ছিল হলদিয়া থেকে পাঁশকুড়া হয়ে পশ্চিমমেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোড গামী একটি বাস। ঘটনাস্থলে রাস্তার ওপর বাড়ি তৈরির নির্মান সামগ্রী পড়ে থাকায় ছাত্রীটি বাসটিকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ পায়নি। সে ভেবেছিল দ্রুত জায়গাটি পেরিয়ে গিয়ে বাঁদিকে সরে গিয়ে রাস্তা করে দেবে। অন্যদিকে বাসের চালক সম্ভবত ভেবেছিল ছাত্রীটি নির্মান সামগ্রীর আগেই দাঁড়িয়ে পড়বে। বাসটি যথেষ্ট দ্রুতগতিতে থাকায় মুহূর্তের এই বোঝাপড়া কাজে লাগেনি। বাসটি সরাসরি ছাত্রীর সাইকেলের পেছনে সজোরে ধাক্কা মারে। সাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর।
এদিকে রাস্তার ওপর ফেলে রাখা এই নির্মান সামগ্রীর জন্য প্রায়ই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে এই কারনে মানু্ষের ক্ষোভ বাড়ছিল। চোখের সামনেই এই জলজ্যান্ত কিশোরীর মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। শুরু হয় হলদিয়া- মেচেদা রাজ্য সড়ক অবরোধ। ভাঙচুর করা হয় বাসটিতে।খবর পেয়ে স্থানীয় মহিষাদল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশকে ঘিরে ধরে স্থানীয় মানুষজন বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। অবরোধকারীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষন আলাপ আলোচনার পর উপযুক্ত ব্যবস্থার নেওয়ার আশ্বাস দেয় পুলিশ। তারপরই প্রত্যাহৃত হয় অবরোধ। মহিষাদল থানার ওসি পার্থ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক হয়েছে ঘাতক বাসটি তবে বাসের চালক ও খালাসি পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ছাত্রীর এই মর্মান্তিক পরিনতিতে শোকের ছায়া স্কুল ও পরিবারে।