নিজস্ব সংবাদদাতা: সামান্য এক বিয়ে বাড়ির ভোজ যেন রাতারাতি কার্গিল বানিয়ে দিয়েছে এগরাকে। পশ্চিমবঙ্গের হটপট মানচিত্রে উঠে এসেছে এখন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা। মাস খানেক আগে এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল একজন চিকিৎসকের বাড়িতে। আর সেই বিলাস বহুল বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন কিছু বিদেশী অতিথিও। হাজির হয়েছিলেন কলকাতার আত্মীয়রাও। এরপরই আতঙ্ক জাগিয়ে কলকাতার এক প্রৌঢ়র ধরা পড়ে করোনা পজিটিভ। পরে কলকাতার ওই পরিবারে আরও একজন আর এগরার বাড়িতে ২জন। ভয় সেখানেই নয়, ভয় আরও যে, সেই বিয়ে বাড়িতে আরও কারা কারা এসেছিলেন ? তাঁদের সঙ্গে আরও কারা কারা মিশেছেন?
এরপরই এগরাকে কার্যতঃ দুর্গ বানিয়ে ফেলেছেন প্রশাসন। ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা এগরা। নিজের অজান্তেই এগরা থেকে যাতে কেউ অন্য কোথাও করোনা বহন করে না নিয়ে যেতে পারে আর ভুল করে এগরাতে কেউ ঢুকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে তাই কড়া প্রহরায় এখন এগরা। এগরা ঢোকা ও বাইরে যাওয়ার রাস্তায় দিন রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন পুলিশ এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জাহালদা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা সীমান্ত মেরে কেটে ১০ কিলোমিটার। মঙ্গলবার সংলগ্ন ওই দুই জায়গার রাজ্য সড়কে মাত্র ১০ মিনিটের বাইক সফরে দেখা মিলল দুই জেলার সীমান্তে কড়া প্রহরায় দুই জেলার পুলিশ। আসা যাওয়ার পথে হেঁটে যাওয়া মানুষ, সাইকেল, বাইক থেকে চারচাকা , লরি ছাড় নেই কারও। একমাত্র মাছ, সবজি আর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের গাড়ি ছাড়া ফিরতে হচ্ছে সবাইকেই। এপার থেকে ওপারে যাওয়ার হুকুম নেই। বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন কোনও অজুহাতেই ছাড় নেই কারও। কার্গিল সীমান্তেও এত কড়াকড়ি ছিল কিনা কে জানে!
জরুরি পন্যবাহী যে গাড়ি গুলিকে এদিক থেকে ওদিক করতে দেওয়া হচ্ছে তার চালক খালাসীদের নামিয়ে স্বাস্থ্য কর্মীরা পরীক্ষা করছেন। থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে মেপে নেওয়া হচ্ছে শরীরে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা রয়েছে কিনা। সর্দি কাশি ইত্যাদি উপসর্গ রয়েছে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। না থাকলে ভেতরে যাওয়া নচেৎ গাড়ি ঘুরিয়ে বিদায় করে দেওয়া হচ্ছে।
পশ্চিমমেদিনীপুর বেলদা পুলিশ মহকুমা শাসক সুমন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, ” অযাচিত ভিড়, অপ্রয়োজনীয় সরবরাহ ইত্যাদি এড়ানোর জন্যই আমরা নাকা চেকিং ও স্ক্রিনিং করছি। এগরায় জেলার সীমান্তের পাশাপাশি আন্তরাজ্য সীমান্তেও সতর্ক আমরা।