মটন বিরিয়ানি সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়
“ঘরে ঘরে ডাক পাঠালো, দীপালিকার জ্বালাও আলো….”
শহর সেজেছে আজ দীপাবলির আলোকে ।উৎসবের শেষ মরসুমে ধানতেরাস উৎসব, শ্যামা মায়ের পুজো, ভাইফোঁটা /ভাইদুজ -যেন একটার পর একটা আলোর ফুলঝুরি ফুটবে মানুষের মনে । এইসময় আমরা , কখনো ধনলক্ষ্মী বা সমৃদ্ধি র দেবীর আগমনে গৃহস্থলী জিনিস কেনাকাটাই মেতে উঠি, তো কখনো অমাবস্যার রাত জেগে শ্যামা মায়ের আরাধনায় মেতে উঠি। ঘরে ঘরে দেয়ালির প্রদীপ জ্বালানো, আলোর রোশনাই এ মেতে উঠি বড়ো থেকে ছোটো সবাই । যদিও এইবছর ফুলঝুরি, চরকি, সাপবাজি, শব্দ বোমা ব্যবহার করা মানা । covid ফাইটার দের কথা ভেবে এইবছর ধোঁয়া /দূষণ মুক্ত পরিবেশ রক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
পরিবেশ, জমায়েত এর ওপর যতই গন্ডি টানা হোক না কেন, ভোজন বিলাসী বাঙালির পেটপুজোয় কোনো গন্ডি টানা হয়নি । তাই মরসুমের শেষ উৎসবের দিনগুলো লুচি, পায়েস, পোলাও, খিচুড়ি, দই, মিষ্টির পাশাপাশি ভাইফোঁটার রাত টা জমে যাক না বিরিয়ানি দিয়ে?
আসুন দেখে নিই, বিরিয়ানির জন্য ঠিক কি কি উপকরণ গুলো লাগছে ।
উপকরণ :বাসমতিচাল 500, খাসি মাংস 700, চিকেন দিয়ে করলে নিয়ে নিন 1কেজি, ডিম,পেঁয়াজ 700, আদা, রসুন, কাঁচালঙ্কা, টোম্যাটো, তেজপাতা, গোটা গরম মশলা,জাইফল, জয়িত্রী, কেশর,আতর, কেওড়ার জল,দুধ, ঘি,টক দই,শসা, গোলমরিচ গুঁড়ো, বিটনুন, বেরিস্তা ।
প্রণালী :
বাসমতি চাল ভালো করে ধুয়ে জলে খানিক্ষন ভিজিয়ে রাখুন । একটি বড়ো ডেগচি জাতীয় পাত্রে জল ফুটতে দিন। ফুটন্ত জলে 2চামচ রিফাইন তেল, 2টি তেজপাতা,2টি গোটা এলাচ,2/3টি লবঙ্গ, ভেঙে নেওয়া জায়ফল, জয়ত্রি, পরিমান মতো নুন দিয়ে দিন । এরপর চাল দিন। চাল লম্বা হয়ে ফুটে গেলে জল ঝরিয়ে নামিয়ে দিন । খেয়াল রাখবেন, চাল যেন বেশি সেদ্ধ না হয় । ভাত কাপড় বা কাগজের ওপর ছড়িয়ে রাখুন, দেখবেন জল টেনে ভাত কেমন ঝুরঝুরে হয়ে গেছে ।
এরপর আসুন, মাংস টা তৈরী করে নিই । যদি মাটন ব্যবহার করতে চান তাহলে তাহলে পরিষ্কার করে ধুয়ে, বেটে রাখা আদা, পেঁয়াজ, রসুন, লঙ্কা মাংসতে ভালো করে মাখিয়ে রেখেদিন ।কড়াই তে তেল দিন, লম্বা করে কুচিয়ে রাখা পেঁয়াজ ভেজে তুলে রাখুন, যাকে আমরা বেরিস্তা বলে থাকি ।বড়ো করে কেটে রাখা আলু ভেজে তুলে রাখুন । ওই এক ই তেলের মধ্যে গোটা গরম মশলা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ হালকা করে ভেজে মাংস দিয়ে দিন । একে একে হলুদ, নুন, জিরে, ধোনে দিয়ে ওভেন ফুল অন করে মাংস কষে নিন ।30মিনিট মিনিট রান্না হওয়ার পর জল দিন ।গুঁড়ো গরম মশলা দিয়ে আরো খানিক্ষন রান্না করে, অল্প ঝোল রেখে নামিয়ে দিন ।
একটি ছোটো বাউল বা বাটিতে, হাফবাটি দুধ নিন, তাতে কয়েক ফোঁটা কেওড়া জল, ও আতর দিয়ে গুলে রেখে দিন ।কয়েকটা ডিম সেদ্ধ করে রাখুন । এরপর একটা হান্ডি জাতীয় পাত্র ওভানে বসান । পাত্র গরম হলে ঘি দিন । বেশ কয়েকটা তেজপাতা হ্যান্ডিতে সাজিয়ে দিন যাতে বিরিয়ানি হ্যান্ডির তলায় লেগে না যায় । এরপর ফুটে রাখা ভাত তেজপাতা র ওপর ছড়িয়ে দিন, ভাতের ওপর একমুঠো বেরিস্তা ছড়িয়ে দিন, তারপর কয়েক টুকরো মাংস, আলু, সেদ্ধ ডিম সাজিয়ে দিন, ও এক হাতা মাংসের ঝোল ছড়িয়ে দিন । সামান্য জায়ফল, জয়েত্রী গুঁড়ো দিন । আবার এক ই ভাবে ভাত, মাংস পরত পরত করে দিতে থাকুন। সব ভাত ও মাংস সাজানো হয়ে গেলে ওপর থেকে গুলে রাখা আতর কেওড়া জল দিয়ে হ্যান্ডির ঢাকা ভালো করে চেপে বন্ধ করে দিন । আঁচ কমিয়ে দম দিতে থাকুন ।
বিরিয়ানি তৈরী হতে হতে আসুন আমরা রাইতটা বানিয়ে নিই । একটি বউল এ 200গ্রাম টক দই নিন. দই ফেটিয়ে নিন । তারমধ্যে একটি শসা গ্রেড করে নিন । কুচোনো পেঁয়াজ দিন । বিট নুন, ও গোলমরিচ গুঁড়ো সামান্য দিয়ে ফেটিয়ে নিন।
খুব সহজেই বাড়িতে বোসে বিরিয়ানি তৈরী করুন । রায়তা দিয়ে পরিবেশন করুন । ভাইফোঁটার রাত জমে যাবে খুুুব ।