ওয়েব ডেস্ক : করোনা নামক এই ভাইরাস মানুষের মন থেকে মানবিকতাটা মুছে দিতে সক্ষম হয়েছে তা আরও একটি ঘটনায় চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিল। সম্প্রতি একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনো রোগীর মৃত্যুর পর তাকে সাদা পলিথিনে মুড়ে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সে সব তো দূর হস্ত, মৃত দেহটি মুড়ে রাখা হয়েছে সাদা কাপড়ে। সেই সাথে ভিডিওতে আরও দেখা যাচ্ছে, পিপিই পড়া চার স্বাস্থ্যকর্মী অ্যাম্বুল্যান্স থেকে বের করে আনছেন একটি নিথর দেহ। ঘটনাস্থলে থাকা এক স্বাস্থ্যকর্তার অনুমতিতে তা ছুঁড়ে ফেলছেন খুঁড়ে রাখা কবরে! ঘটনাটি ঘটেছে পুদুচেরিতে। জানা গিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তি আদতে চেন্নাইয়ের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে তিনি পুদুচেরিতে এসেছিলেন।
এই ভিডিও প্রকাশ হতেই কয়েকমিনিটের মধ্যেই সেটি ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। দেশ জুড়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের এই আচরণে ক্ষোভ উগড়াতে শুরু করেন দেশবাসী। পাশাপাশি ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকা না মেনে কোনো পলিথিন ব্যাগ ছাড়াই সেটিকে কবর দিতে নিয়ে গেছেন। এর জেরে সংক্রমণ ছড়ানোর তুমুল সম্ভাবনা রয়েছে বলেই বিশেষজ্ঞদের অনুমান। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে আতঙ্ক।
অন্যদিকে, ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো চাপের মুখে পড়েছেন পুচুচেরি সরকার। দ্রুত ওই ৪ স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এবিষয়ে ইন্ডিয়া এগেনস্ট করাপশন নামে একটি সংস্থার দাবি, মৃতদেহের সঙ্গে অমানবিক আচরণ ভারতীয় দণ্ডবিধি ৫০০ ধারার অন্তর্গত। সুতরাং এক্ষেত্রে অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী এবং তাঁদের ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে মৃতের মানহানির জন্য জরিমানা-সহ শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে।
প্রসঙ্গত, লকডাউনের মাঝে সম্প্রতি কলকাতার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সারা ফেলেছিল। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছিল একজন বৃদ্ধ তিনি অন্যরোগের কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। করোনা আবহে বেশ কিছু হাসপাতাল কোভিড হাসপাতাল হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় অন্যন্য রোগীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই বৃদ্ধ্র বাড়ি থেকে কেউ নিতে না আসায় দেখা গিয়েছিল অ্যাম্বুলেন্সে করে ২ জন স্বাস্থ্যকর্মী ওই বৃদ্ধকে বাড়ি না পৌঁছে বরং মাঝ রাস্তায় নিয়ে এসে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। এরপর অসহায় বৃদ্ধ মাঝ রাস্তাতেই ফুটপাতে বসে থাকেন। এই ভিডিওটি শেয়ার হতে স্বাভাবিকভাবেই অনেকেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিল স্বাস্থ্য কর্মীদের ওপর। যারা প্রথম সারিতে থেকে এইমূহুর্তে দেশবাসীকে বাঁচিয়ে তুলছেন। তাদের থেকে এই ধরনের অমানবিক ব্যবহার আশাহীন।