নিজস্ব সংবাদদাতা: যে মাস্কটা আগে থেকে পরলে চারদিনের জন্য খড়গপুরের প্রশাসনকে কোয়ারেন্টাইনে চলে যেতে হতনা সেই মাস্ক পরেই খড়গপুরে ফিরলেন প্রাক্তন উপ পৌরপ্রধান সেক হানিফ। বুধবার দিনের আলোতে রীতিমত বিজয়ীর ভঙ্গিতে হাত উঁচিয়ে আশেপাশের জনতাকে অভিনন্দন জানাতে জানাতে ৪নম্বর ওয়ার্ডের নিজের মহল্লায় ফেরেন তিনি। তাঁকে দেখতে রাস্তার দু’পাশে ভিড় জমে যায়।
সাত রাত্রি শালবনির কোভিড হাসপাতালে কাটিয়েছেন হানিফ। স্বভাবতই তাঁকে ঘিরে অনুগামীদের ভিড় ছিল। বুধবারই বাড়ি ফিরেছেন গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৩শে জুন পজিটিভ রেজাল্ট আসার পরই পরের দিনই আরেকটা বুধবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। মাত্র ৭দিনেই তাঁর করোনা জয় করে ফেরা। যেহেতু করোনা ক্রান্তিকালে তিনি মাস্ক ব্যবহার করেননি তাই তাঁর পজিটিভ আসা মাত্রই তড়িঘড়ি কোয়ারেন্টাইনে চলে যেতে হয় খড়গপুর শহরের শীর্ষ প্রশাসক, সর্বোচ্চ পুলিশ আধিকারিক, বিধায়ক থেকে শুরু করে ২০জনেরও বেশি কাউন্সিলরকে। কারন সেক হানিফ বর্তমান পৌর প্রশাসক দলের সদস্য এবং লাগাতার বিভিন্ন মিটিং করেছেন, একাধিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছেন।
হানিফ আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়াতেই খড়গপুর পৌরসভার একাধিক কর্মীও নিজেদের করোনা পরীক্ষার দাবি করলে প্রথমে তা নাকচ করে দেওয়া হলে কাজ বয়কট করে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে চলে যান কর্মীরা। বেহাল দশা শুরু হয়ে যায় পুর পরিষেবার। পরে পরীক্ষার আশ্বাস দিয়ে কাজ শুরু করা হয়। দফায় দফায় তাঁদের পরীক্ষা চলছে।
নাম না করেই হানিফের এই আচরনকে তীব্র কটাক্ষ করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুর থেকে নির্বাচিত সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, তৃণমূলের নেতারাই খড়গপুরকে করোনা হাব বানিয়ে ফেলেছে। এদিকে হানিফ আক্রান্তের খবর পাওয়ার পরই এক লপ্তে করোনা পরীক্ষা হয়েছিল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, মহকুমা শাসক, বিধায়ক সহ কয়েকডজন মানুষের এমনকি তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও। আশার কথা, এক্ষেত্রে কারুরই পজিটিভ আসেনি।
বুধবার বিকালে নিজের এলাকায় হানিফ ফিরেছেন রীতিমত পিপিই কিট পরেই। না, এবার আর ভুল করেননি। এবার মুখে তাঁর মাস্ক ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল মাস্ক না ব্যবহার করার। তার জন্য অনুতপ্ত হয়েছিলেন তিনি। দু’দিন আগেই হাসপাতাল থেকেই ভিডিও বার্তায় অনুতাপ প্রকাশ করে খড়গপুর বাসীকে মাস্ক পরার জন্য অনুরোধ জানান। বুধবার সেই মাস্ক পরেই হাত উঁচিয়ে বাড়ি ফিরলেন তিনি।