Homeএখন খবরনন্দীগ্রামে হিমালয়ের গ্রিফন ভালচার (Griffon vulture)! বিস্মিত বনদপ্তর

নন্দীগ্রামে হিমালয়ের গ্রিফন ভালচার (Griffon vulture)! বিস্মিত বনদপ্তর

নরেশ জানা : হাজার কিলোমিটার আকাশ ভেঙে তিব্বত উপত্যকার এক শকুনের দেখা মিলল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। কী ভাবে এই বিপন্ন প্রজাতির শকুন যা কীনা শকুনদের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন এবং সর্বাধিক বড় এখানে এসে পৌছালো তাই নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই পাখি প্রেমিকদের মনে। নন্দীগ্রামের খোদামবাড়ির কৃষ্ণনগর এলাকায়। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় এই শকুনটিকে মাঠে চরতে দেখেন এলাকার মানুষ। সেটি অসুস্থ অনুমান করে খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরে। উদ্ধারের পরই তাকে চিকিৎসক পর্যবেক্ষনে রেখেছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের ডিএফও (Divisonal Forest Officer )অনুপম খান।

জানা গেছে, ওইদিন সন্ধ্যা স্থানীয় মানুষ ঈগলটিকে এলাকার মাঠে ঘুরতে দেখেন। মানুষ জন কাছে যাওয়ার পরও সেটা উড়ছেনা দেখে স্থানীয়রা সেটিকে অসুস্থ মনে করে বনদপ্তরে খবর পাঠান। এরপরই বনদপ্তরের লোকেরা এসে সেটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রথমে সেটিকে সোনালী চিল (Golden Eagle) মনে করা হয়েছিল। শকুন বলে মনে করেন। পরে বোঝা যায় সেটি আসলে শকুন কারন তার গলদেশ অত্যন্ত লম্বা এবং পালকহীন ছিল যা কিনা মৃত জন্তুর দেহের ভেতরে মাথা ঢুকিয়ে খাওয়ার জন্য শকুনদের প্রকৃতিদত্ত।                                                                          বিশেষজ্ঞরা পরে এটিকে হিমালয়ের গ্রিফন ভালচার (Griffon vulture) বলে সনাক্ত করেছেন। হিমালয়ের গ্রিফন ভালচার শুধু হিমালয়ের সবথেকে বড় পাখিই নয়, বড় জাতের শকুন ও বটে। গ্রিফন শকুনের বাস প্রধানত হিমালয় এবং তিব্বত উপত্যকায়। এছাড়াও এদের আফগানিস্তান , কাজাকস্থান এবং ভুটানেও দেখতে পাওয়া যায়। জিপস গনের (Accipitridae) সবথেকে বড় প্রজাতিটি হল এই গ্রিফন ভালচার। যার বিজ্ঞানসম্মত নাম জিপস হিমালয়েনেসিস।

দেখতে অনেকটা সাধারণ শকুনের মতো কিন্তু আকারে অনেক বড়। সারা শরীর বাদামী রঙের বড় বড় পালকে আবৃত। প্রাপ্তবয়স্কদের বাদামীর মাঝে সাদার প্রলেপ দেখতে পাওয়া যায়। যা প্রাণীটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
ফ্যাকাসে নীল মুখে দৃঢ চঞ্চু উপস্থিত। দুটো পায়ই পুরু চামড়ার আবরণে আবৃত। পা দীর্ঘ নখ যুক্ত, যা সহজেই অনুমান করা যায় যে শিকারকে ধরে রাখার জন্যই বিকশিত হয়েছে।

গ্রিফন ভালচার কে দেখে সবাই চমকে যাবেন এদের ছদ্ম চোখ বা ফেক আই এর জন্য, যা ঠিক মাথার ওপরে অবস্থিত। শিকার কে বোকা বানানোর জন্য এই শকুনেরা এমন বৈশিষ্টের বিকাশ ঘটিয়েছে বলে মনে করা হয়। যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ক্যামোফ্লাজ বলে।

সাধারণ ভাবে এদের দৈহিক ওজন ৬ কেজির আশেপাশে হয়। তবে এই শকুনটি প্রায় ১৪ কেজি ছিল। ডানা মেলা অবস্থায় এদের আকার ১০ ফুটের মতো হয়, যা সাধারণত মিটারে ২.৫-৩ হয়। এই শকুনটি সুস্থই আছে বলে জানা গেছে। সম্ভবতঃ দীর্ঘ উড়ানে ক্লান্তি জনিত কারনেই সে উড়ে যেতে পারেনি। সাধারণত এই এলাকায় গ্রিফন শকুন আসেনা। কী ভাবে সেটি এখানে এল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।   ছবি পরিচিতি: ১. প্রথম ছবি নন্দীগ্রামে প্রাপ্ত গ্রিফন ২. পরের ছবি নেট দুনিয়া থেকে নেওয়া

RELATED ARTICLES

Most Popular