নিজস্ব সংবাদদাতা: শুক্রবার রাজ্যে আংশিক লকডাউন ঘোষণা করতে গিয়ে তাড়াহুড়োতে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে তাতে রাজ্যবাসী এবং ব্যবসায়িদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থেকে গেছিল যা শনিবার ফের পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা দিয়েছে নবান্ন। সেই নির্দেশিকার ফলে বেশকিছু সরলীকরণ করা হয়েছে বিশেষ করে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে। এই অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিষয়টিকে রাজ্য প্রশাসনের চোখে একটু ভিন্নভাবে দেখা হয়েছে আর তারফলেই বেশকিছুটা ছাড় মিলছে বাজার হাটে।
শুক্রবার বলা হয়েছিল ওষুধ, মুদি দোকানের মত অত্যাবশ্যকীয় দোকান ছাড়া আর সমস্ত দোকান খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং দুপুর ৩টা থেকে ৫টা অবধি। শনিবার রাজ্য যা বলেছে তার মর্মার্থ এই যে মানুষের দৈনিন্দন প্রয়োজনীয় খাদ্যের তালিকায় থাকা সমস্ত দোকানই সারাদিন খোলা রাখা যাবে। অর্থাৎ মুদি দোকান তো বটেই সঙ্গে সারাদিনই খোলা রাখা যাবে শাক-সবজি, দুধ দই ইত্যাদি দুগ্ধজাত উপকরণের দোকান। মিষ্টি দোকান, মাছ, মাংস, ডিম দোকান খুলে রাখতে পারা যাবে দিনের যে কোনো সময়। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক ইত্যাদি করোনা বিধি মানতে হবে ক্রেতা এবং বিক্রেতাকেই।
এছাড়া এখন প্রচন্ড গরম। অসুবিধা নেই খোলা থাকতে পারে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকান। ফ্যান, আলো, এসি, কুলার, মাইক্রোওভেন, ইন্ডাকশন ওভেন, হিটার সবই বিক্রি হতে পারে দিনের যে কোনও সময়। রান্নার গ্যাস সরবরাহে বাধা নেই। টেলিফোন সম্পর্কিত বিষয়, মোবাইল বিক্রি, মোবাইল মেরামত, রিচার্জ ইত্যাদি টেলিকম সম্পর্কিত বিষয়ে কোনও বিধি নিষেধ থাকছেনা। ঠিক তেমনই পরিবহন সম্পর্কিত বিষয় যেমন গ্যারেজ খোলা রাখা যাবে। রাস্তায় গাড়ি কিংবা মোটরবাইক খারাপ হলে মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকতে পারেনা।
শুক্রবার বিকেলে নবান্ন থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল বন্ধ রাখতে হবে শপিংমল, সিনেমাহল, রেস্তরাঁ, পার্লার, সুইমিং পুল, জিম ইত্যাদি যাবতীয় স্থান যেখানে একই সঙ্গে অনেক মানুষ সমবেত হন। সেই নিয়ম বহাল থাকছে। কিন্তু তার সাথে বিয়েবাড়ি বা অন্নপ্রাসন ইত্যাদি সামাজিক অনুষ্ঠানেও বিধি নিষেধের কথা বলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে সামাজিক অনুষ্ঠান। কিন্তু শনিবার বিকেলে শর্ত স্বাপেক্ষে আরও একদফা বিজ্ঞপ্তি জারি করে এখানেও কিছু ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য প্রশাসন। যার মর্মার্থে বলা হয়েছে বিয়েবাড়ি পৈতে, শ্রাদ্ধ কিংবা যে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান করা যেতেই পারে কিন্তু পরিবারের সদস্যদের বাইরে অনধিক ৫০ জন অতিথি আমন্ত্রিত হতে পারেন। এই নিয়ম মানলে জন সমাগমে বাধা থাকছে না।
রাজ্য প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে নির্দেশিকা জারি করার জন্য শনিবার সর্বত্র সঠিকভাবে নির্দেশিকা কার্যকর হয়নি। এছাড়াও শনিবার যে বিষয়গুলি ছাড়ের মধ্যে আনা হয়েছে সেগুলিও শুক্রবার নির্দেশিকায় ছিল না। তাই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হল। আসলে প্রথম দিনের নির্দেশিকায় নির্দিষ্ট করে বেশ কিছু ক্ষেত্রে কথা বলা ছিল না। তাই মানুষের মধ্যে সন্দেহের জায়গা তৈরী হয়েছিল। এই সন্দেহ নিরসনে রাজ্য সরকার শনিবার নতুন নির্দেশিকা জারি করল। যদিও আবারও মনে রাখতে হবে সব ক্ষেত্রেই করোনা বিধি কঠোর ভাবে পালন করতে হবে অর্থাৎ পারস্পরিক দৈহিক দূরত্ব, মাস্ক, স্যানেটাইজ ইত্যাদি মানতে হবে।