নিজস্ব সংবাদদাতা: মাত্র কয়েকমাস আগেই সরকারের গতিধারা প্রকল্পের আওতায় একটি আটো রিকশা পেয়েছিলেন কর্মহীন জীবনে গোপীবল্লভপুরের মঠ গোপীনাথপুর গ্রামের ৩৩ বছরের যুবক নেপাল দেহুরী। শুক্রবার সকালে সেই আটো নিয়ে গোপীবল্লভপুর স্ট্যান্ডে যাওয়ার আগে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিজের জীবনেরই গতিধারা হারিয়ে গেল তাঁর। নিজের বাড়ি থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার আগে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে একটি হনুমানকে বাঁচাতে গিয়ে। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে স্থানীয় এলাকায়।
স্থানীয় সুত্রে খবর, লকডাউনে দীর্ঘ কর্মহীনতা কাটিয়ে সবে মাত্র শুরু হয়েছে গনপরিবহন। আর ক’দিন ধরে সেই সুবাদে ফের শুরু হয়েছিল উপার্জন। শুক্রবার বাড়িতে টিফিন সেরেই সাত সকালে নিজের অটোরিকশা চালিয়ে নেপাল বাবু মঠ গোপীনাথপুরের বাড়ি থেকে গোপীবল্লভপুরের দিকে আসছিলেন। কিন্তু মাত্র তিন কিলোমিটার এগোতেই ধর্মপুর মোড়ে তাঁর অটোর সামনে এসে পড়ে একটি হনুমান,আর হনুমানকে বাঁচাতে গিয়ে রাস্তার উল্টো দিকে চলে যান নেপাল কিন্ত ঠিক সেই সময়ে বিপরীত দিক থেকে চলে আসে একটি বাইক। ফলে সরাসরি গিয়ে পড়েন গতিশীল বাইকের মুখে।
বাইকের সঙ্গে সংঘর্ষে উল্টে যায় অটোরিকশাটি আর নেপাল চাপা পড়ে যান তার নিচে। স্থানীয় মানুষজন নেপালকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কিন্তু ততক্ষনে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।আর ঘটনাস্থলে মারা যান অটোচালক নেপাল দেহুরীর।দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দুুুই বাইক আরোহী এমনটাই জানা গেছে। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছে। পুলিশ বাইক ও আটো বাজেয়াপ্ত করেছে তদন্তের স্বার্থে।
স্থানীয় মানুষজন অভিযোগ করেছেন এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী রাস্তার ধারে থাকা ইটের স্তুপ। তাঁদের দাবি উল্টো দিক থেকে আসা বাইক দেখার পরেও নেপাল চেষ্টা করেছিলেন আটোকে আরও বামদিকে, মূল রাস্তা থেকে আরও নিচে নামিয়ে দেওয়ার জন্য কিন্ত রাস্তার পাশে রাখা ইটের জন্য তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। যে কারনে মুখোমুখি বাইকের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ইটের গাদা না থাকলে হয়তো এই দুর্ঘটনা সহজেই এড়ানো সম্ভব হত।
মঠ গোপীনাথপুরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নেপাল দেহুরী স্ত্রী সীমা ছাড়াও দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। রয়েছে বৃদ্ধ বাবা মাও। নেপালকে হারিয়ে দিশেহারা গোটা পরিবার।শুক্রবার সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের পর দেহ আসার পর শোকে ভেঙে পড়েছে গোটা গ্রাম।