নিজস্ব সংবাদদাতা: বর্ষা এসে চলে যাবে আর ঘাটালে নৌকা নামবেনা এমনটা হয়? একই মরশুমে পাঁচবার বন্যা হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে ঘাটাল বাসীর কিন্তু বর্ষা এসে চলে গেছে বাড়ি থেকে নৌকা বা ডিঙি বের করতে হয়নি এমন অভিজ্ঞতা বিরল। বর্ষা এলে তাই অন্ততঃ কয়েকদিনের জন্য ঘাটাল হয়ে ওঠে, ব্যাক ওয়াটার অফ বেঙ্গল অথবা বাংলার কেরল। এবারও তার ব্যতিক্রম হলনা, আষাঢ় শ্রাবন কাটিয়ে পচা ভাদ্রেই নৌকা নামল ঘাটালে।
বুধ আর বৃহস্পতিবার সমগ্র দক্ষিনবঙ্গের মতই ক্ষনিকের বিরতি সহ টানা ৪৮ ঘন্টার ভারি বৃষ্টি দেখেছে ঘাটাল আর তাতেই টে-টম্বুর হয়ে উঠেছে ঝুমি নদীর কোল উপচে জল ঢুকে পড়েছে ঘাটাল পৌরসভার ১ থেকে ১২নম্বর ওয়ার্ড। গামলার মত নিচু এই ১২টি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট, মাঠ, পুকুর সবই এখন জলের তলায়। বাজার ঘাট থেকে শুরু করে পড়শির বাড়ি অবধি যেতে গেলে এখন নৌকা অথবা ডিঙি ছাড়া উপায় নেই, সুতারং চল পানসি বৃন্দাবন।
১২টি ওয়ার্ডে হাজার দশেক বাড়ি আর পঞ্চাশ হাজারি বাসিন্দার এখন জলযানই ভরসা হলেও ডিঙি কেনা বা বানানোর ক্ষমতা নেই এমন লোকের সংখ্যা কম নয়। তাঁদের কথা মনে রেখেই গন পরিবহন হিসাবে নৌকা নামানোর কথা ভাবছে ঘাটাল পৌরসভা। ঘাটালের পৌর প্রশাসক বিভাস ঘোষ জানিয়েছেন, “আমরা শুক্রবারের দিনটা পর্যবেক্ষণ করছি। এদিন বৃষ্টি হয়নি। যদি জল নেমে যায় ভাল কথা নচেৎ শনিবার থেকে নৌকা নামানো হবে ১২ টি ওয়ার্ডেই।”
ঘটনা হল বৃহস্পতিবারের মত শুক্রবারও লকডাউন থাকায় মানুষের বাইরে বের হওয়ার দরকার ছিলনা কিন্তু শনিবার নৌকা না নামালে সমস্যা যদি সত্যি জল থেকে যায়।
এদিকে দু’দিনের বৃষ্টিতে শুধুই ঝুমি নয়, শিলাবতী, রূপনারায়ন, কাঁসাই, পারাং, কেঠিয়া সব নদীই ফুলছে। চন্দ্রকোনায় শিলাবতী বিপদ সীমা ছুঁয়ে ফেলেছে এবং ভগবন্তপুর এলাকার কেশেডাল ও ধরমপোতা দুটি জায়গায় কাঠের সেতু জলের তলায় চলে গিয়েছে। ১০/১২টি গ্রামের কৃষি জমি, সবজির ক্ষেত জলের তলায়। স্থানীয় মানুষরা জানাচ্ছেন, এখনও উচ্চ অববাহিকা জল নামেনি। শুক্রবার রাতের দিকে সেই জল নামলে আরও এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়বে।
এদিকে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতই আগামী রবিবার থেকে ফের নিম্নচাপ জনিত ভারি বর্ষনের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। যদি সেই বৃষ্টি হয় আর কোনও কারনে ডিভিসি জল ছাড়তে শুরু করে তাহলে বিপদ ঘনাতে পারে ঘাটালে। ঘাটাল মহকুমা সেচ আধিকারিক সুমিত দাস অবশ্য জানিয়েছেন,”এখুনি ভয়ের কিছু দেখছিনা। নদী গুলির জলস্তর বিপদ সীমা পের হয়নি। আমরা সতর্ক আছি।”