নিজস্ব সংবাদদাতা: ১২ঘন্টাও গড়ালো না ফের এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হল বাসের মধ্যেই। বৃহস্পতিবার সেই শ্রমিকের মৃতদেহ নিয়ে ঘটালে ফিরে এলেন ঘাটালের পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি দল। পুলিশ ও স্বাস্থ্যদপ্তরের পরামর্শ মেনেই ঘাটালের কুশপাতায় নামানো হয় মৃতদেহটি এরপর ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের গাড়িতে করেই ওই দেহ নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের মর্গে। ওই ব্যক্তির ময়নাতদন্তের পাশাপাশি করোনা পরীক্ষার পর নিরাপদ মনে হলে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হবে শ্রমিকের পরিবারের হাতে এমনটাই জানা গেছে জেলার স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে।
পুলিশ সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার অন্তর্গত সাহড়দা গ্রামের এক ব্যক্তি যিনি মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে কাজ করতেন তাঁর মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছানোর পরই পুলিশের কাছে খবর আসে অন্য একটি বাসে করে মুম্বাই থেকে ঘাটালের উদ্দেশ্যে আসা আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বাসের মধ্যেই। ঘাটাল মহকুমার দাসপুর থানার রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গোকুলনগর গ্রামের বাসিন্দা কমল নায়েক নামে কমল সেনাপতি নামের বছর ৪৫ এর ওই ব্যক্তি মুম্বাইয়ে সোনার কারিগর হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করতেন। লকডাউন পর্বে তিনিও আটকে পড়েন। এরপর দুই সরকারের অনুমতি ক্রমে মোট ৩০জন স্বর্ন কারিগর ও অন্য শ্রমিকরা গত রবিবার একটি বাস ভাড়া করে রওনা দেন ঘাটালের উদ্দেশ্যে।
কমলের সঙ্গীরা জানিয়েছেন, বাসেই প্রচন্ড ডিহাইড্রেশন শুরু হয় কমলের। বমি এবং পায়খানা হতে থাকে। পথে ভিনরাজ্যের দুটি নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় কিন্তু তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক বলে করোনা আতঙ্কে কোনোও নার্সিং হোম চিকিৎসা করতে রাজি হয়নি। একটি নার্সিং হোম অবশ্য কিছু ওষুধ দিয়েছিল যদিও কমলের দরকার ছিল স্যালাইনের। চিকিৎসকদের অভিমত কোনও নার্সিংহোম যদি স্যালাইন চালু করে দিয়ে বাসেই ফেরৎ পাঠিয়ে দিত তাহলেও বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল কমলের। এরপর মঙ্গলবার বিকালের দিকে মৃত্যু হয় কমলের।
সেই বাস সহ বুধবার রাতেই বাংলা ওড়িশার দাঁতন সীমান্তের সোনাকনিয়ায় এসে দাঁড়ায় বাসটি। সেখানেই পুলিশ শ্রমিকদের পরামর্শ দেয় বাসটিকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বৃহস্পতিবার ঘাটালেই প্রশাসনের হাতে লাশ তুলে দিয়ে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় ঘাটাল অরবিন্দ স্টেডিয়ামের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে চলে যান শ্রমিকরা। কোয়ারেন্টাইন নিয়ম মেনে আপাতত ১৪দিন সেখানেই থাকবেন তাঁরা।