পরম্পরা |
গঙ্গাসাগর থেকে নিত্য গুপ্ত: মঙ্গলবার রাতে শিখিয়ে ছিলেন কিভাবে ‘দিয়া’ জ্বেলে ভাসিয়ে দিতেই হয় । বুধবার হিম জলে দাঁড়িয়ে মেয়ের হাত ধরে শিখিয়ে দিচ্ছেন কি কি আচার অনুষ্ঠান পালন করতে হয়। কেমন করে , কোনদিকে মুখ করে জলে ডুব দিয়ে ওঠার পর উচ্চারন করতে হয় দিবাকর অর্চনা। বুধবার ভোরে গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানে এবার অংশ নিয়েছেন প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
তার মধ্যেই আলাদা করে নজর করা যায় মা ও মেয়েকে। এত ভিড়ের মধ্যেও একটু আলাদা জায়গা করে নিয়ে কিশোরী কন্যাকে নিয়ে হাতে ধরে শিখিয়ে দিচ্ছেন গঙ্গাসাগরে স্নানের আচার। মা মেয়ে কেউই নিজের নাম বলতে রাজি নয়, ছবি তুলতে দিতেও ঘোর আপত্তি। তবুও অনেক বলে কয়ে পাওয়া গেল একটা ছবি।
আলো আমার আলো |
পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই ভদ্রমহিলা সলজ্জ হাসিতে বললেন, আমাদের দেশের মেয়েরা নিজেদের সূখ আর ঐশ্বর্যর চেয়ে পরিবার ও সমাজের মঙ্গল কামনা করে থাকেন বেশি। আমার মেয়েও একদিন কোনও না কোনও পরিবারের অংশ হবে। সে যেন সেই পরিবারের সূখ ও সমৃদ্ধির কামনায় ব্রতাচার পালন করে তাই তাকে একটু শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে এসেছি। বুধবার ভোর ২.৫০ মিনিট থেকে গঙ্গাসাগরে শুরু হয়েছে পুণ্যস্নান। পুণ্যস্নান চলবে বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত।৪০ থেকে ৫০ লক্ষ মানুষের ভিড়ে এবার জমজমাট গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণ। কপিলমুনির আশ্রমে উপচে পড়া ভিড়। এরাজ্যে তো বটেই ভিনরাজ্য থেকে লক্ষ-লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড়ে থিক-থিক করছে পুণ্যভূমি গঙ্গাসাগর। বুধবার ভোররাত থেকে গঙ্গাসাগরে শুরু হয়েছে পুণ্যস্নান। কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দিয়ে গঙ্গায় স্নান সারছেন পুণ্যার্থীরা। যে কোনওরকম দুর্ঘটনা এড়াতে পাঁচ হাজার পুলিশকর্মী, ১২০০ সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবী এবং পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সাগরমেলা প্রাঙ্গণে মোতায়েন রয়েছেন। রাখা হয়েছে হেলিকপ্টার পরিষেবাও। একইসঙ্গে নিয়মিত মেলার উপর নজরদারি চালাচ্ছে একাধিক ড্রোন। গঙ্গায় ঘুরছে অসংখ্য স্পিডবোটও।
শাহি স্নান |
গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণের কোথাও এখন তিলধারণের জায়গা নেই। বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, ছত্তীশগড়-সহ একাধিক রাজ্য থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড় গঙ্গাসাগরে। এক কথায় গঙ্গাসাগর এখন যেন মিনি ভারত। বহু ভাষাভাষির মানুষের মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠেছে বাংলার এই পুণ্যভূমি।<ভিড় এড়াতে মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই গঙ্গাসাগরে স্নান সারতে শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
তাঁরই মধ্যে দাঁড়িয়ে মা বললেন, ”প্রতিবছর আমি আসি। এ শুধু মেলা নয়, মহামিলনের মেলাও। এত আনন্দ আমি আর কোথাও পাইনা । আপনি পুজো করুন নাই করুন কিন্তু মানুষ দেখার এই আনন্দ অন্য কোথায় পাবেন? এই যে এক খণ্ড দেশ এখানে, এই সাগরে উঠে এসেছে এটাও দেখার। মেয়েকে তাও দেখাচ্ছি। বলছি এটাই আমাদের ভারতবর্ষ।”