নিউজ ডেস্ক: না, ভারত নয়। এমনকি কোনও তৃতীয় বিশ্বের দেশ নয়, গণতন্ত্রের স্বর্গ বলে পরিচিত খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রতেই এবার গণনায় কারচুপির অভিযোগ আর সেই অভিযোগ আনলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি এবং ফের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প! শোনা যাচ্ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনের জয়ের সম্ভবনা যতই উজ্জ্বল হচ্ছে ততই কারচুপির অভিযোগে সোচ্চার হচ্ছেন তিনি, এমনকি ট্যুইট করে ইতিমধ্যে ভোট গণনা বন্ধ রাখার দাবী করেছেন ট্রাম্প ।
গণনার প্রথমদিকে বেশকিছু অঙ্গরাজ্যে এগিয়েছিলেন রিপাবলিকানরা। কিন্তু পোস্টাল ব্যালট গণনা শুরু হতেই ছবিটা একটু-একটু করে বদলাতে শুরু করে। এগিয়ে যান বাইডেন। তারপরেই সরব হন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, তার প্রতিপক্ষ কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচন চুরির চেষ্টা করছে। হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। যদিও এর পক্ষে তিনি কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি। তিনি বলেন ‘আইন-সম্মত’ উপায়ে ভোট গুনলে তিনি সহজেই বিজয়ী হতেন তিনি। তার ভাষায়, যদি ‘বেআইনি ভোট গোনা হয় তাহলে তাদের কাছ থেকে নির্বাচন চুরি করা হচ্ছে। ট্রাম্প বলছেন যে, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে তিনি অনেক ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু পরে ‘রহস্যজনক ভাবে অনেক নতুন ভোট গোনা শুরু হয়।
তিনি দাবী করেছেন, এখানে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ভোট পাঠানো হয়েছে, বেআইনি ভোট গ্রহণ করা হয়েছে, গোপনে ভোট গোনা হয়েছে, ভোট গণনা কেন্দ্রে রিপাবলিকান দলের পর্যবেক্ষকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তবে তার এসব দাবীর পক্ষে তিনি অবশ্য কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
নির্বাচনের আগে বেশির ভাগ জরিপে দেখা গেছে যে, বাইডেন দেশব্যাপী এগিয়ে আছেন। অনেক পর্যবেক্ষক ধারণা করেছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর বিপুল বিজয় হবে। তিনি নির্বাচনের আগের মাসগুলোতে প্রকাশিত সেই জনমত জরিপেরও তীব্র নিন্দা করে বলেন যে, তার সমর্থকদের নিরুৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে জো বাইডেনকে এগিয়ে দেখিয়ে এসব জরিপ প্রচার করা হয়েছিল।
ট্রাম্প বলেন যে, তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ সব রাজ্যে এগিয়েছিলেন তারপর তাদের সংখ্যা কমতে থাকে হঠাৎ করে। তাঁদের অবজারভারদের বুথে গণনা দেখতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন। পুরো প্রক্রিয়াটিকে আনফেয়ার বলে বর্ণনা করে ট্রাম্প মেইল-ইন- ব্যালট অর্থাৎ পোস্টাল ব্যালট সম্পর্কে নিজের আপত্তি জানান।
তিনি বলেন, যে কোনও যাচাইয়ের প্রক্রিয়া ছাড়াই লক্ষ লক্ষ ব্যালট ডাকের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে ও পুরো প্রক্রিয়াটির মধ্যে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ভরপুর। বিভিন্ন রাজ্য যেখানে ডেমোক্র্যাট গভর্নর আছে সেখানে সঠিক ভাবে গণনা হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাঁর মতে কে জিতল সেটি বড় কথা নয়, কিন্তু প্রক্রিয়াটি সঠিক হওয়া উচিৎ। শেষ পর্যন্ত বিচারকরাই চূড়ান্ত রায় দেবেন বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত জো বাইডেনের দখলে রয়েছে ২৬৪টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। সেখানে ট্রাম্পের ঝুলিতে ২১৪টি। প্রেসিডেন্ট হতে দরকার ২৭০ ভোট। বাইডেন নেভাডায় এগিয়ে আছেন। সেখানে জিতলেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন তিনি। পেনসেলভ্যানিয়া, জর্জিয়াতেও বাইডেন ব্যবধান কমাচ্ছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নেভাদা, অ্যারিজোনা, পেনসিলভেনিয়া ও জর্জিয়ায় পোস্টাল ব্যালট গণনা চলছে। গণনা শেষ না হলে চূড়ান্ত ফল মিলবে না। তবে লড়াইমঞ্চ এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেবেন না বলে ফের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।