নিউজ ডেস্ক: শহরের বুকে আবারও অগ্নিকাণ্ড। তপসিয়া রোডে রবারের জুতোর কারখানায় ভয়াবহ আগুন। কারখানার ছাদ ভেঙে উদ্ধার করা হল নিরাপত্তারক্ষীকে। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। ঘিঞ্জি এলাকায় আগুন লাগায় দমকল কর্মীদের আগুন নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয়। কারখানার একাংশ আগুনের গ্রাসে চলে যায়।
জানা যায়, শনিবার ভোর ৪ টে নাগাদ ২১ নম্বর তপসিয়া রোডে রবারের জুতোর কারখানায় আগুন লাগে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুনের গ্রাসে চলে যায় গোটা কারখানা। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। এরই মধ্যে কারখানার পাঁচিলের একাংশ ভেঙে পড়ে। স্থানীয়রাই কারখানার ছাদ ভেঙে নিরাপত্তা রক্ষীকে উদ্ধার করেন।
শহরের বুকে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেই চলেছে। শুক্রবারও জ্যোতি সিনেমার কাছে লেনিন সরণীতে আগুন লাগে। লেনিন সরণীতে একটি বাড়িতে আগুন লেগে যায়। ঘটনাস্থলে দমকলের ৮টি ইঞ্জিন পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। পুরো এলাকা ভরে যায় কালো ধোঁয়ায়। যদিও ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ৮ মার্চ স্ট্র্যান্ড রোডে ভয়াবহ আগুন নেভাতে গিয়ে, আগুনের গ্রাসেই প্রাণ হারালেন কয়েকজন দমকলকর্মী। রেলের কয়লাঘাট ভবনে ভয়াবহ আগুন লেগেছিল। বদ্ধ লিফটের মধ্যে থেকে উদ্ধার হল মৃতদেহ। স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের অফিসে প্রায় ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। সেই আগুনে ২টি লিফটে আটকে ঝলসে মৃত্যু হয় ৯ জনের।
তার আগে ৩১ মার্চ সাতসকালে স্ট্র্যান্ড রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ বহুতলের চারতলায় আগুন লাগে। নীচের তলায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। ইট-পাথর ছুঁড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ভবনের জানালার কাঁচ আশেপাশের ভবনের মানুষরা ভেঙে ফেলেন। এতে করে দমকল বাহিনীর ভেতরে প্রবেশ করতে কিছুটা সুবিধা হয়। দমকলের প্রায় ১০ টি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডে কয়লাঘাট ভবনের ১৩ তলায় রেলের দফতরে। ৪ জন দমকল কর্মীসহ ঝলসে যায় ৯ টি তরতাজা প্রাণ। সেদিন উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে দমকল কর্মীরা দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যান; একদল সিঁড়ি দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন, আর এক দল তাড়াহুড়োয় বেছে নেন লিফট। আর তাতেই বিপত্তি ঘটে। লিফটে আটকে ঝলসে সেখানেই মৃত্যু হয় তাদের। একটি লিফটে ৭ জনের দেহ মেলে এবং অপর লিফটে ২ জনের। কিন্তু কীভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা? জানা যায়নি প্রকৃত কারণ।
গোটা ঘটনায় রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে রেলের পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে ট্যুইট করেন পীযূষ গোয়েল। এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও রেলমন্ত্রী তাঁর ট্যুইটে জানিয়েছেন। মৃত্যু হয়ে যায় দোষ চাপানোর খেলা। রেলের গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে খবর পেয়েও দমকলের বিরুদ্ধেই দেরিতে যাওয়ার পাল্টা অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। দমকলের পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ করেন তিনি।