নিউজ ডেস্ক: গরু পাচার চক্রের সাথে জড়িত মাফিয়া তথা মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামূল হক অবশেষে আইনের জালে। সিবিআই সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের নজরদারি উপেক্ষা করেই মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি ব্লকের বিভিন্ন এলাকা সুজনিপাড়া, আওরঙ্গাবাদ, চাঁদনী চকসহ ধুলিয়ানের বেশ কিছু এলাকা দিয়ে চোরাইপথে অবাধে এই ব্যবসা চালাতেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বিএসএফের বহরমপুর সেক্টরে কর্মরত জিবিইউ ম্যাথু নামে এক কমান্ডেন্টকে ঘুষ মামলায় কয়েক কোটি টাকা সহ দক্ষিণ ভারতের এর্নাকুলাম থেকে সিবিআই গ্রেফতার করে। সেখানে উঠে আসে প্রথম কুখ্যাত হাওলা ট্রেডার গরু পাচারকারী এনামুল হকের নাম। পরে সিবিআই এনামুলকে গ্রেফতার করলেও সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। এরপর থেকে সে বেপাত্তা। প্রচুর তার সম্পত্তি মুর্শিদাবাদ জেলায় কারখানা রয়েছে বেশ কয়েকটি। কলকাতায় প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। তার তিন ভাগ্নে ওল্টু, বিল্টু, কাল্টু মারফত আরবের টাকা তার কাছে পৌঁছায়। ঠিক সীমান্তের ওপারে এনামুলের আরেক সহযোগী হাজি মস্তান এই কারবারের অন্যতম। এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে দুই দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাদের প্রশ্রয় এই কারবার চলে।
জানা যায়, গবাদি পশু আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে পাচার করতে সহায়তা করার বিনিময়ে এনামুলের পাচার সিন্ডিকেট থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা পেয়েছিল জিবু। ওই বিএসএফ আধিকারিককে জেরা করেই সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, জিবু ছাড়াও, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে কর্মরত একাধিক বিএসএফ আধিকারিক এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর দক্ষিণ বঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের একাধিক শীর্ষ আধিকারিক এনামূলের পাচার সিন্ডিকেটের কাছ থেকে বিপুল অর্থ পেয়ে থাকেন। সেই সূত্র ধরেই গত সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সিবিআই কলকাতা শাখা অফিসে গবাদি পশু পাচার নিয়ে আলাদা একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। তল্লাশি চালানো হয় সতীশ কুমার নামে এক বিএসএফ আধিকারিকের সল্টলেকের বাড়ীতে। ওই মামলায় সতীশ ছাড়াও অভিযুক্ত হিসাবে এফআইআর করা হয়েছে এনামুল হক, সতীশের ছেলে এবং এনামূলের কয়েকজন শাগরেদের বিরুদ্ধে। সতীশের বাড়ির পাশাপাশি ওই দিন বেনিয়াপুকুরে এনামুলের বাড়িতেও তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, এনামুলকে দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে।