Homeএখন খবরঅবশেষে মিলল স্বস্তি, ২২ দিন পর সন্ধান মিলল নবান্ন অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ...

অবশেষে মিলল স্বস্তি, ২২ দিন পর সন্ধান মিলল নবান্ন অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ দীপক পাঁজার

অশ্লেষা চৌধুরী: অবশেষে খোঁজ মিলল দীপক পাঁজার। দীর্ঘ ২২ দিন পর বালি স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয় পাঁশকুড়ার বাসিন্দা বাম কর্মী দীপক পাঁজাকে; যিনি ১১ই ফেব্রুয়ারি বামেদের নবান্ন অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন।

জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বালি স্টেশনে ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় দীপককে। এই ক’দিনে তাঁর চেহারায় অনেক বদল হয়েছে। ধকলের ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু তারপরেও স্টেশন সংলগ্ন একটি দোকানের মালিক তথা বাম কর্মী তাঁকে দেখতে পেয়ে চিনতে পারেন। তিনি খবর দেন বাকিদের। তারপরেই স্থানীয় বাম কর্মীরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।
শুক্রবার রাতে বাম ছাত্র-যুবর তরফে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয়, দীপককে হাওড়া জেলা সিপিএম পার্টি অফিসে রাখা হয়েছে। তাঁর বাড়ীর লোককে খবর দেওয়া হয়েছে। দীপকের কোনও শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হয়েছে কিনা তা জানার জন্য ডাক্তার দেখানো হয়েছে। সব কিছু মিটে গেলেই তাঁকে পরিবারের লোকের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

২২ দিনের চিন্তার শেষে দীপককে খুঁজে পাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বাম কর্মী ও নেতারা। যদিও এই খোঁজ পাওয়ায় পুলিশের কোনও কৃতিত্ব নেই বলেই অভিযোগ তাঁদের। বারবার পুলিশের কাছে আবেদন ও বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার পরেও পুলিশ কোনও সাহায্য করেনি বলেই দাবী তাঁদের। শনিবার সকালেই দীপকের বাড়ির লোকেরা হাওড়া জেলা সিপিএম পার্টি অফিসে পৌঁছেছেন। তাঁকে বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, ১১ই ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার কলকাতায় ১০টি বামপন্থী ছাত্র যুব সংগঠনের ডাকে নবান্ন অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান পাঁশকুড়ার বহরপোতা গ্রামের বাসিন্দা দীপক পাঁজা। পুলিশের তরফে বাম যুব কর্মীদের আটকানোর জন্য ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। এমনকি নির্মম লাঠিচার্জ, জলকামানকাঁদানে সেল ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। আর তারপর থেকেই রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যান দীপক বাবু। আর পরিবারের কর্তার অন্তর্ধানে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তাঁর স্ত্রী সরস্বতী দেবীর। দীপক বাবুর স্ত্রী সরস্বতী জানান, ‘‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে কলকাতার যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান উনি। সন্ধ্যায় আমাদের প্রতিবেশীরা জানান ওঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উনি পড়াশোনা জানেন না। কোথায় আছেন? কি অবস্থায় আছেন কিছুই জানি না। পুলিশ ওঁকে খুঁজে বার করে দিক।’’ বাঁকুড়ার যুবক মইদুল ইসলাম মিদ্যার পরিণতি জানার পর থেকেই আরও অস্থির হয়ে উঠেছেন তিনি। দরিদ্র পরিবার। দিনমজুরি করে কোনওরকমে দীপকবাবু সচল রাখতেন সংসারের চাকাটা। আর সেই মানুষটাই যে নিখোঁজ।

তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য দলের কর্মীদের সঙ্গে রওনা হয়েছিলেন কলকাতার দিকে। তারপর বাড়ী ফেরেননি আর। কলকাতার নিউমার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর পরিবার। জানানো হয় লালবাজারেও। কিন্তু কোনও খোঁজ মেলে না দীপক বাবুর। এরপর নবান্ন অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত বাঁকুড়ার ডিওয়াইএফআই কর্মী মইদুল ইসলাম মিদ্যার মৃত্যুর খবর পেতেই অজানা আতঙ্কের কালো ছায়া গ্রাস করেছে সরস্বতী দেবীকে। অবশেষে মিলল স্বস্তি, ২২ দিন পরে খোঁজ পাওয়া গেল নিখোঁজ দীপক পাঁজার।

RELATED ARTICLES

Most Popular