নিজস্ব সংবাদদাতা: যেন সারা রাত ঘুমায়নি মদের খরিদ্দাররা, দোকানের সাটার খুলতে না খুলতেই ভিড় ঝাঁপিয়ে পড়ল দোকানের সামনে। মাথায় উঠল সোশ্যাল ডিস্টেন্স, গুঁতোগুঁতি, ঠেলাঠেলি,হাতাহাতি তারপর শুরু ইট ছোঁড়াছুঁড়ি। সোমবার রেড জোন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমারে এমনই ঘটনা ঘটল। ঘটনা এতটাই নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় যে পুলিশ এসে ঘটনা সামাল দেয়। গ্রেপ্তার করা হয় কয়েকজনকে। লুকিয়ে চুরিয়ে চলছিল, সরকারের গোপন অনুমোদন ছিল কিন্তু খুলে আম অনুমতি পেতেই সোমবার থেকেই খুলে গেছে কয়েক জায়গাতে মদের দোকান আর তার পরেই এমন ঘটনা।
বলা হয়েছিল রেড জোনে ফাঁকায় ফাঁকায় থাকা মদের দোকান খুলবে আর এক সঙ্গে ৫ জনের সঙ্গে দাঁড়াতে পারবেনা। আরও বলা হয়েছিল লাইনে থাকা ব্যক্তিদের কমপক্ষে ৬ ফুটের দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কিন্তু সোমবার সে সব তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে মদের দোকানগুলোতে শয়ে শয়ে মানুষের ভিড় উপচে পড়তে দেখা গেল। নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে এই ভিড় আটকাতে না এসেছে পুলিশ আর না মদ দোকানের মালিকের ছিল কোনও উৎসাহ। আর তার ফলে বেধে গেল মারাত্মক গন্ডগোল।
অবশ্য শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয় সোমবার সকাল থেকে শর্তসাপেক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মদের দোকান খুলতেই ভোর থেকে লম্বা লাইন পড়েছিল সেই দোকানগুলির সামনে। খোদ মমতা ব্যানার্জির কালীঘাটেও একই দৃশ্য চোখে পড়েছে। অভিযোগ, সেই ভিড়ে সামাজিক দূরত্বকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে। কোথাও কোথাও তো আবার ভিড় সামাল দিতে পুলিশকে লাঠিও চালাতে হয়েছে। বন্ধ করে দিতে হয়েছে দোকান। সবমিলিয়ে তৃতীয়দফা লকডাউনের শুরুর দিনই দেশের বিভিন্নপ্রান্তে সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ শিকেয় উঠেছে।কলকাতার কালীঘাট অঞ্চলে ভিড় সামাল দিতে গিয়ে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়।
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার কিংবা কলকাতার কালীঘাটে যখন এই চিত্র তখন ময়না থানার আনন্দপুর এলাকায় মদের দোকান খোলার খবর পৌঁছাতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ল জনতা। মানুষের দাবি, দীর্ঘ স্থায়ী লকডাউন, ৪০ দিন সাধারন গরিব মানুষ উপার্জন হীন। হাতে পয়সা নেই, ঘরে চাল। সরকারের রেশন সবাই পাচ্ছেনা, পেলেও চালের বাইরে থাকে অনেক কিছু। অভিযোগ ত্রান পৌঁছাচ্ছে মুখ দেখে, রাজনীতির রং দেখে। আর সেই পরিস্থিতিতে আগামী ১৪ দিন ফের লক ডাউন। আর এমনই দুঃসহ অবস্থায় মদের দোকান খোলার উদ্যোগ নিল কেন সরকার? শয়ে শয়ে উত্তেজিত জনতা মদের দোকান ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। মানুষ অভিযোগ করতে থাকে এমনিতেই ঘরে পয়সাকড়ির অভাব তার ওপর মদের দোকান চালু হলে মদ্যপায়ীর দল সব পয়সা উড়িয়ে দেবে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করে মদ নয়, ভাত দাও, ওষুধ দাও।