ওয়েব ডেস্ক : ফের অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা। প্রতিবেশী করোনায় আক্রান্ত, একথা জানতে পেরে রীতিমতো বাড়ির বাইরে থেকে তালা মেরে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আর এক প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে কেষ্টপুরের তালবাগান এলাকার একটি বাড়িতে। জানা গিয়েছে, ওই এলাকার এক পরিবারের তিন জন সদস্য মারণ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। সে খবর প্রকাশ্যে আসতেই ফ্ল্যাটের অন্যান্য বাসিন্দারা করোনা আক্রান্ত প্রতিবেশীর বাড়ির গেটে তালা আটকে দেন। চিকিৎসকদের তরফে বারংবার বলা হচ্ছে রোগীকে নয় বরং রোগকে ধ্বংস করতে হবে। সেখানে দাঁড়িয়ে করোনা রোগীদের নিয়ে মানুষের মধ্যে এ ধরণের অমানবিক ব্যবহার অজান্তেই মানুষের মনে দুঃখ দিয়ে ফেলছে।
ঘটনায় রোগীর পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, কেষ্টপুরের তালবাগান এলাকার বাসিন্দা সূর্যকান্ত বেড়া প্রথম মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর শরীরে কোনোরকম উপসর্গ না মেলায় চিকিৎসকের তরফে সেসময় তাঁকে হোম আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেশীরা তাকে বাড়িতে থাকতে বাধা দেওয়ায় শেষমেশ তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর কয়েকদিন পর সূর্যকান্তবাবুর মা বীণাপাণি বেরা এবং ছেলে কৌশিক বেরা করোনা পরীক্ষা করালে, তাঁদের রিপোর্টও পজেটিভ আসে।
সূর্যকান্তবাবুর ছেলের অভিযোগ, তাদের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে, এই খবর জানাজানি হতেই তাদের বাড়ি থেকে জোড় করে বের করে দিয়ে বাড়িতে তালা মেরে দেয় ফ্ল্যাটের অন্যান্য বাসিন্দারা। এর ফলে চরম হেনস্থার শিকার হতে হয় বেড়া পরিবারকে। এর জেরে গত ১৫ দিন ধরে বাড়ি ছাড়া ওই পরিবার। বাড়িতে থাকতে না পেরে বাধ্য হয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ঘুরে ঘুরে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। মানুষ শিক্ষিত হলেও কতটা হীন মনের তা শহর কলকাতার এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। একই সাথে প্রশাসনের তরফে “রোগের সাথে লড়তে হবে রোগীর সাথে নয়”, একথা বারংবার বলা হলেও তা সমাজের এক শ্রেণির মানুষ কানে তুলতে নারাজ।