নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার সকাল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের আনন্দপুর ও চন্দ্রকোনা থানা এলাকায় গ্রামের পর গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি দলছুট দাঁতাল হাতি আর সেই হাতির আক্রমনে প্রাণ হারিয়েছেন এক মহিলা, আহত হয়েছেন আরও ২ ব্যক্তি যার মধ্যে ১জনের আঘাত গুরুতর বলে জানা গেছে। দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় নিজের দলের খোঁজে দিশেহারা হাতিটি ব্যাপক ক্ষতি করে চলেছে ফসলের। বারংবার চেষ্টা করেও হাতিটিকে নিজের দলে ফেরাতে পারেনি বনদপ্তর, ফলে এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে বুধবার সাতসকালে দলছুট দাঁতালটি বনাঞ্চল থেকে ঢুকে পড়ে চন্দ্রকোনা থানা এলাকার কুঁয়াপুর গ্রামে। ওই গ্রামেরই এক ব্যক্তির গোলার ধান সাবাড় করার পর দাপিয়ে বেড়ায় গ্রাম জুড়ে। রাস্তার ধারে থাকা মোটরবাইক ভেঙে কার্যত দাপিয়ে বেড়ায় ওই। এদিকে ওই সংশ্লিষ্ট এলাকা জুড়ে হাজার হাজার একর জমি চাষ করেন স্থানীয় কৃষকরা। গ্রাম ছড়িয়ে হাতি নামে সেই আলুর ক্ষেতে। হাতির এলো পাথাড়ি দৌড়ে বেড়ানোর ফলে আলুর ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করে নিজের উদ্যোগে হাতিটিকে তাড়া করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের উদ্দেশ্য চাষের জমি থেকে দাঁতালটিকে সরানো। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে হাতিটি পালাতে থাকে পিছনে পিছনে ছুটতে থাকে গ্রামবাসীরা। হঠাৎ ই হাতিটি পেছন ফিরে গ্রামবাসীদের পাল্টা তাড়া করলে পালাতে গিয়ে পড়ে যান কয়েকজন। তাঁদেরই একজন হাতি শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারে। ঘটনায় গুরুতর আহত হন চন্দ্রকোনার টুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দা গজানন দাস। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে।
এরপর এসে পৌঁছান বনদপ্তরের কয়েকজন কর্মী এসে হাতি তাড়ানোর উদ্যোগ নেন কিন্তু এবার হাতিটি আরও ক্ষিপ্ৰ হয়ে কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানার খড়িগেড়িয়া এলাকাতে প্রবেশ করে । ওই সময় মাঠে চাষের কাজ করছিলেন এক মহিলা। হাতির সামনে পড়ে যাওয়ায় হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারলে ঘটনা স্থলে মৃত্যু হয় গীতা ঘোষ নামক ৪৫বছরের ওই মহিলার। চন্দ্রকোনা থেকে আনন্দপুর এলাকাতে প্রবেশ করেই বিভিন্ন জায়গাতে হামলা শুরু করে । তারফলে আরও কয়েকজন জখম হন । এদিকে এই ঘটনার পর এলাকা জুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক।
বনদপ্তর সূত্রের খবর, পানিকোটার জঙ্গলে বেশ কয়েকদিন ধরেই রয়েছে হাতির পাল। সেই পাল থেকে কোনোভাবে দলছুট হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে দাঁতাল হাতিটি। হাতিটিকে ফের জঙ্গলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেছিল বনদফতরের কর্মীরা । হাতিটি যত ক্ষন না নিজের দলে ফিরতে না পারবে ততক্ষণই সেটা অস্থির হয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলেই বনকর্মীদের অনুমান এলাকাবাসীকে সতর্ক করেছে বনদপ্তর।