নিজস্ব সংবাদদাতা: আধ গন্ডা খানেক কাচ্চা বাচ্চা নিয়ে প্রায় ১৪ জনের সংসার। শুক্রবার সেই ভরা সংসার নিয়েই বাজার দেখতে বেরিয়ে পড়ল দলমা থেকে আসা দাঁতালের দল। আর তাদের দেখতে ভিড় জমে গেল ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়খন্ড সীমান্ত মফঃস্বল শহরের মানুষদের। গিধনি রেল স্টেশন আর স্টেশন লাগোয়া বাজার, বাজার লাগোয়া নির্মীয়মান দুর্গাপূজার মন্ডপ ইত্যাদি দেখার পর হাতির পাল ঢুকে পড়ল রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় অনুকুল ঠাকুরের আশ্রমে। তারপর সেখানে বিশ্রাম সেরে হেলে দুলে হাতির দল ফের ফিরে গেল জঙ্গলে। অবশ্য স্বেচ্ছায় নয়, বনকর্মীদের তাড়ায়।
শনিবার ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি থানার ছোট্ট রেল শহর গিধনিতে প্রকাশ্য দিনের আলোতে হাতির পাল ঢুকে পড়ায় এমনই হৈ চৈ বেঁধে গেল। বেলা ১০ টা, তখন রীতিমত ভরা বাজার। বাজার করতে আসা লোকজনে গমগম করছে এলাকা আর তার মধ্যেই হঠাৎ হাতির পালের আগমনে হুলুস্থুল পড়ে যায়। বাজারের থলে ফেলে ক্রেতা আর সবজির ঝাঁক ফেলে বিক্রেতারা এদিক ওদিক দৌড়ে পালাতে থাকে। ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়ে দোকানদারেরা দৌড় দেন। মানুষজনের হৈচৈ, দৌড় ছুটে আরও বিভ্রান্ত হাতির দল বাজারেই ঘুরতে থাকে।
প্রায় এক ঘন্টা বাজার পরিদর্শনের পর হাতির দল রওনা দেয় বাজারের পাশেই থাকা অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমের দিকে। আশ্রমের ফটক দিয়ে ঢুকে পড়ে হাতির দলটি। অতর্কিতে হাতির দলের আগমনে ত্রাহি ত্রাহি রব ওঠে আশ্রমিকদের মধ্যে। প্রায় ৪০ মিনিট পরে বনদপ্তরের লোকেরা আশ্রমের পেছনের অংশের প্রাচীর ভেঙে দিয়ে হাতিদের বেরুনোর পথ করে দিলে হাতিরা ওই পথে বেরিয়ে যায়।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লোকালয় থেকে হাতির দলটিকে ড্রাইভ করে ঝাড়খণ্ডের দলমা পাঠানোর চেষ্টা করছিল কিন্তু দলে দুটি শাবক থাকায় হাতির দলটি নড়তে চাইছিল না। শুক্রবার ২৫ হাতির এই দলটি ঝাড়খন্ড লাগোয়া কাজিয়া বড়শোল এলাকায় ঢুকে পড়ে। সেই দলটিকে লোকালয় থেকে বের করার জন্য শনিবার সকালে হুলা পার্টি ও বনদপ্তরের কর্মীরা উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই পথেই টুকুরিয়া দিয়ে হাতির দলটি যাওয়ার সময় হঠাৎ করে গিধনী বাজারে ঢুকে পড়ে। আপাতত হাতির দলটি শালিকার জঙ্গলে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। রাতে ফের ড্রাইভ শুরু করার কথা রয়েছে বন দপ্তরের।