নিজস্ব সংবাদদাতা: ঝাড়গ্রামে আবারও একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির মৃত্যু। ঘটনাটি সাঁকরাইল ব্লকের বাকড়া বিটের নিশ্চিন্তা জঙ্গলের ঘটনা। বনদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সাঁকরাইলের এই এলাকায় কয়েকটি রেসিডেন্সিয়াল হাতি রয়েছে । গ্রামবাসীদের মতে, রবিবার রাত্রিতে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির । সোমবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে পড়ে মৃত হাতিটি । নজরে পড়ার সাথে সাথেই বন দপ্তরকে খবর দেওয়া হয় । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বনদফতরের এর আধিকারিকরা উপস্থিত হন এবং হাতিটির চারিদিকে দড়ি দিয়ে পরিধি করে ঘিরে দেন ।খবরটি ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই মৃত হাতিটিকে দেখতে ভিড় জমে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি হাতিটি বনের মধ্যে গাছের পাতা খাওয়ার সময় গাছের উপর থেকে যাওয়া বিদ্যুতের তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। গ্রামবাসীদের একাংশের আবার দাবি হাতিটি শনিবার দিন মারা যেতে পারে। মূলত হাতির মৃত্যু নিয়ে স্থানীয়রাই ধন্দের মধ্যে রয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, বিদ্যুৎ দফতরের অবহেলার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যে বিদ্যুতের তার গুলি গিয়েছে সেগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঝুলে গিয়েছে। এ নিয়ে না বন দফতর না বিদ্যুৎ দফতর কারোরই কোনো হেলদোল নেই। ফলে আজ এই হাতিটিকে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যেতে হল। তবে এলাকায় বন দফতর এবং বিদ্যুৎ দফতরের এই সমন্বয়ের অভাব নতুন কিছু নয়। সাঁকরাইলের ব্লকের একটি বৃহৎ অংশে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ইলেকট্রিক লাইন গেছে। প্রায়ই এই লাইনের আশেপাশের গাছ বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই বিদ্যুৎ দফতর কাটার ব্যবস্থা করে। এর ফলে প্রতিবারই জঙ্গলের বেশ কিছু দামি গাছ চুরি যায়। এবার সেই সমন্বয়ের অভাবেই হাতিটিকে মরতে হল
তবে ঝাড়গ্রামে বিদ্যুৎপিষ্ট হয়ে হাতি মৃত্যুর ঘটনা নতুন কিছু নয় । গতবছর বিনপুরের মালাবতী জঙ্গল সংলগ্ন সাতবাঁকি গ্রামের কাছে ধান জমিতে হাইটেনসন লাইনে বিদ্যুৎপিষ্ট হয়ে তিনটি পূর্ণবয়স্ক হাতির মৃত্যু হয় । এছাড়াও লালগড়ের রামগড়ে ধান খেতে গিয়ে বিদ্যুৎপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির ।
খড়গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম জানান, “একটি পূর্ণবয়স্ক মৃত হাতি উদ্ধার হয়েছে। ময়না তদন্তের পর জানা যাবে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে হাতিটির।” ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা হাতিটির ময়না তদন্তের কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে। হাতির মৃত্যু নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।