ভবানী গিরি: ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্ৰামের ঘন জঙ্গল থেকে সোমবার রাতে একটি কয়েকদিন বয়সের হরিন শাবক কে উদ্ধার করলেন একটি পিক আপ ভ্যানের চালক ও তার সঙ্গিরা। ঘটনাটি ঘটেছে নয়াগ্ৰাম থানার রামেশ্বর এলাকায়। পণ্যবাহী গাড়ির চালক অভিজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, এদিন দুপুরে নয়াগ্রাম থানার কলমাপুকুরিয়াতে কিছু দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহ করে ফের গোপীবল্লভপুর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তাঁরা।
অভিজিৎ ছাড়াও ছিলেন মলয় সাউ,সুধীর অধিকারী এবং মিহির বেরা। কলমাপুকুরিয়া থেকে গোপীবল্লভপুর ফেরার পথেই পড়ে রামেশ্বর ও তপোবনের মধ্যবর্তী ঘন জঙ্গল। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ এই জঙ্গলের মধ্যে দিয়েই গেছে রাস্তা। রাস্তার পাশে হরিন শাবকটিকে বসে থাকতে দেখেন তারা। গাড়ি থামিয়ে ওঁরা শাবক টিকে তুলে নিয়ে নিকটবর্তী বনদপ্তরের কর্মীদের হাতে তুলে দেন। অভিজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন,
”জঙ্গলের পথে মাঝে মধ্যে হরিন চোখে পড়লেও হরিন পালিয়ে যায়। কিন্তু গাড়ির আওয়াজ পেয়েও এই হরিন শাবকটি পালায়নি দেখেও অবাকই হয়েছিলাম। গাড়ির আলোতে প্রথমে মনে হয়েছিল হয়ত কোনো ছাগল বাড়ি ফিরতে পারেনি বনে চরতে এসে। কিন্তু ভাল করে দেখি একটা হরিন শাবক। আমাদের কাছে যেতে দেখেও পালায় নি। আমরা একটু অবাক হয়েছিলাম। আশেপাশে তাকিয়েও হরিনের পাল দেখতে পাইনি। পাছে কুকুর বা বনের নেকড়ের পাল শাবকটিকে খেয়ে ফেলে তাই ওকে তুলে নিয়ে কলমাপুকুরিয়া বীট অফিসের কর্মীদের হাতে তুলে দিলাম।”
বনকর্মীরা জানিয়েছেন, হরিন শিশুটি সদ্য জন্মেছে। বড় জোর চার পাঁচ দিনের বয়স হবে। এখনও মায়ের দুধ খায়। হরিনের পাল রাতে লোকালয়ের ধারে চরতে আসে। কচি ধানের চারা, সবজির ক্ষেত ইত্যাদির লোভে। গাড়ির আলো ও আওয়াজ দেখে হয়ত পালিয়েছে, শিশুটি হতভম্ব হয়ে বসে পড়েছে। আপাতত কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তবুও শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ওকে এই জঙ্গলেই ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে যদি বাকি পালের সন্ধান পাওয়া যায় নচেৎ পরিপূর্ণ বয়স অবধি কোনোও পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হবে।’
রাজ্য বন দপ্তরের ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের আধিকারিকরা সন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছে, এটা খবুই ভাল লক্ষন যে হরিনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বন্যপ্রাণীর সংখ্যা বাড়া আসলে বনের স্বাস্থ্য বৃদ্ধির সুলক্ষন। তাছাড়া মানুষও ক্রমশ বন্যপ্রাণ নিয়ে সচেতন হচ্ছেন বলেই ওই শিশুটি উদ্ধার হয়েছে।