নিজস্ব সংবাদদাতা: কেন্দ্র সরকার ও বিরোধীদের পর এবার প্রবাসী চিকিৎসক, গবেষক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে। বৃহস্পতিবারই ওই খোলা চিঠি প্রকাশ্যে আসার পর আবারও প্রশ্ন তুলে দেওয়া হল করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে। ওইসব চিঠিতে সহযেদ্ধাদের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিকে ‘চূড়ান্ত বিরক্তিকর’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে তাঁদের সেই চিঠিতে।
কেউ নিজেকে ডাক্তার, কেউ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, কেউ আবার স্বাস্থ্যকর্মী বলে পরিচয় দিয়েছেন চিঠিতে। সকলেরই শিকড় এই বাংলা, একথা উল্লেখ করেই তাঁরা চিঠিতে লিখেছেন, নির্দিষ্ট দুটি বিষয় নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। প্রথমত, বাংলায় করোনার নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা অতি কম। দ্বিতীয়ত, মৃত্যু নিয়ে যে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা কিছুটা বিভ্রান্তিমূলক বলে মনে হচ্ছে তাঁদের। তাঁরা লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি গত দেড় সপ্তাহ ধরে আমরা খেয়াল করছি। রয়টার্সের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, “রাজ্যে প্রতি দশ লক্ষ মানুষ পিছু মাত্র ৩৩.৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। যেখানে গোটা দেশে সংখ্যাটা ১৫৭ প্রতি দশ লক্ষ। যদিও রাজ্যে যে পরিকাঠামো রয়েছে তাতে দিনে এক হাজার জনের নমুনা পরীক্ষা করা যায়।”
তাঁদের বক্তব্য, মৃত্যুর ক্ষেত্রে সঠির পরিসংখ্যান না জানানো হলে তাতে দুটি অসুবিধা হতে পারে। প্রথমত, মানুষ এই মহামারির প্রকৃত ভয়াবহতা বুঝতে পারবেন না।দ্বিতীয়ত, এর মোকাবিলায় সঠিক পথও অজানা থেকে যাবে।”
এই চিঠিতে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে তাঁদের পরামর্শ, এ রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুটি বিষয়ে যেন নজর দেওয়া হয়। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আরও নিখুঁতভাবে পরীক্ষার ফলাফল নির্ধারণ করা। প্রবাসী চিকিৎসকদের এই উদ্বেগপূর্ণ খোলা চিঠিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখলে আখেরে রাজ্যেরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাঁরা লিখেছেন , “সংক্রমণ প্রতিরোধকে হালকা ভাবে নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এতে আখেরে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে রাজ্যের। উপসর্গ নেই এমন সংক্রমিতদের থেকে সংক্রমণের মাত্রা রাজ্যে বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যাঁদের উপসর্গ নেই তাঁরা অন্যদের সংক্রমিত করে চলেছেন।”
তাঁদের দাবি , রাজ্য নিযুক্ত বিশেষ কমিটি একমাত্র সংক্রমণে মৃত্যু কিনা সেটা ঘোষণা করতে পারছে। এর বাইরে সংক্রমিত কারও মৃত্যু হলে, তাঁকে করোনায় মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হচ্ছে না। সেখানে কোভিড-১৯ সংক্রমণে মৃত্যু, এই প্রসঙ্গ উল্লেখ না করে তথ্য বিকৃত করা হচ্ছে। ওই চিকিৎসকদের দাবি, হু আর আইসিএমআর-এর গাইডলাইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, এই ধরনের মৃত্যুতে প্রাথমিক কারণ হিসেবে কোভিড -১৯ প্রসঙ্গ উল্লেখ করতেই হবে।