ভীষ্মদেব দাশ, দিঘাঃ পূর্ণিমা কোটাল ও ঘূর্ণাবর্তের জেরে ফের দুর্যোগ আসতে চলেছে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায়। দুর্যোগ মোকাবিলায় তৎপর হয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। উপকূলবর্তী এলাকায় সতকর্তা জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বুধবার থেকে দিঘা এবং সংলগ্ন উপকূল এলাকায় সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হয় পুলিশের তরফে। বুধবার অর্থাৎ ২রা সেপ্টেম্বর থেকে ৬ই সেপ্টেম্বর রবিবার পর্যন্ত সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর ও মন্দারমণিতে। পর্যটকদের সমুদ্র থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে আসার অনুরোধ জানিয়ে বুধবার দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকের মাধ্যমে প্রচার চালানো হয়।
ওল্ড ও নিউ দিঘার বিভিন্ন স্নানঘাটে মাইকিং করেন দীঘা মোহনা থানার পুলিশ। পাশাপাশি সমুদ্রে কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন নুলিয়ারা। ইতিমধ্যেই আবহাওয়া দপ্তরের পূবার্ভাস অনুযায়ী, কোটাল এবং ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গার্ডওয়ালের ওপর আছড়ে পড়তে পারে ১৯ফুট উচ্চতার বড় বড় ঢেউ। আশঙ্কা করা হচ্ছে তীব্র জলোচ্ছ্বাসেরও। দুর্যোগপূর্ণ এই আবহাওয়ার প্রভাব থাকবে আগামী রবিবার পর্যন্ত। বুধবার অবশ্য দিঘা উপকূলের আবহাওয়া ছিল রোদ ঝলমলে।
সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতাও ছিল স্বাভাবিক। সমুদ্রস্নানে ভালই ভিড় ছিল পর্যটকদের। তবে দুপুরের পর স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি হতেই পর্যটকদের উল্লাসে ভাটা পড়েছে। কাঁথির সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ জানিয়েছেন নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও সমুদ্র উত্তাল থাকার জরুরি বার্তা দিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা থাকায় শঙ্করপুর উপকূলের বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নীচু এলাকাগুলি প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা হয়েছে। কয়েকদিন আগে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের ফলে দিঘা, শংকরপুরের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। সেই ঘা এখনও শুকায়নি বাসিন্দাদের।
তারওপর ফের প্লাবনের আশঙ্কায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশাসনের তরফে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে উপকূল সংলগ্ন রামনগর-১ ও ২, কাঁথি-১ ও ২, খেজুরি-২ প্রভৃতি সমুদ্র উপকূলবর্তী ব্লক এলাকায়। রামনগর ১ ব্লকের বিডিও বিষ্ণুপদ রায় বলেন, ‘প্রশাসন পুরোপুরি প্রস্তুত। ব্লকের পক্ষ থেকে নিরাপদ আশ্রয় দিতে রেসকিউ শেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সামগ্রীও মজুত রাখা হচ্ছে। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা চালু থাকবে। খেজুরি-২ ব্লকের বিডিও রমল সিং বির্দি জানিয়েছেন, খেজুরি-২ ব্লকের মুল চিন্তার জায়গা পাঁচুড়িয়া সমুদ্র বাঁধ। সম্প্রতি সেচ দপ্তর বাঁধ মেরামতির কাজ করেছেন। নতুন বাঁধও হচ্ছে।