ওয়েব ডেস্ক : দীর্ঘদিন লকডাউনে কাটানোর পর এবার তিন পর্যায়ে আনলকের জেরে দেশকে সচল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্র সরকার। সে অনুযায়ী আনলক ১ এর মাধ্যমে শুধুমাত্র কন্টেইনমেন্ট জোন ছাড়া দেশের প্রায় সর্বত্রই খুলে দেওয়া হয়েছে দোকান-বাজার, শপিং মল, রেস্তোরাঁ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে ইতিমধ্যে খুলেও গিয়েছে রাজ্যের বেশ কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত খোলা হয়নি দিল্লির নিজামুদ্দিন দরগা। করোনার সংক্রমণ রুখতে এখনই দরগা না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দরগা কমিটির।
মাস খানেক আগে দিল্লির এই তবলিঘি জামাতের জমায়েতের জেরেই গোটা দেশে আচমকাই বেড়ে গিয়েছিল করোনার সংক্রমণ। দিল্লির নিজামুদ্দিনে জমায়েত হয়েছিলেন দেশি বিদেশি সহ বহুরাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের। তারা নিজেদের রাজ্যে ফেরার পর দেখা যায় বেশীরভাগ আক্রান্তের সঙ্গেই নিজামুদ্দিনের যোগ রয়েছে। এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যগুলিতে করোনার সংক্রমণ একধাক্কায় অনেকখানি বেড়ে গিয়েছিল। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে তবলিঘি জামাতিদের সমালোচনায় ফুসছিল গোটা দেশ। ঝড় উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকি কয়েকজন মানুষের জন্য গোটা সম্প্রদায়কেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল। ফলে সেই সব ঘটনার কথা মাথায় রেখে সরকারি অনুমতি পাওয়া সত্ত্বেও সংক্রমণ এড়াতে এখুনি নিজামুদ্দিন না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
নিজামুদ্দিন কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তবলিঘি জামাতের জমায়েত থেকেই শিক্ষা নিয়েছেন তারা। যদিও সরকার অনুমতি না দিলে কখনই এত বড়ো জমায়েত করা সম্ভব হতো না। তবুও নতুন করে আর কোনওভাবে সংক্রমণ ছড়াক তা চান না নিজামুদ্দিন কর্তৃপক্ষ। তাই সরকারি অনুমতি মিললেও এই মূহুর্তে দরগা খুলতে নারাজ তারা। এবিষয়ে দরগা কমিটির এক সদস্য বলেন,”দরগা খুলতে কোনও বাধা নেই। তবে এখনই দরগা খোলা হচ্ছে না। দরগা খুললেই ভিড় বাড়তে পারে। সামাজিক দূরত্ব-বিধি শিকেয় উঠতে পারে। তাই এখনই নিজামুদ্দিন দরগা খোলা হবে না।”
মাসখানেক আগে নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাতের জমায়েত ঘিরে গোটা দেশে তুঙ্গে উঠেছিল জল্পনা। দেশে করোনা আক্রান্তের অর্ধেকের নিজামুদ্দিন যোগ রয়েছে এমনটাও শিরোনামে উঠেছিল বারংবার। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে নিজামুদ্দিনে যাননি কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়াতে দিনরাত মানুষের চোখরাঙানী সহ্য করতে হয়েছে, শুনতে হয়েছে তাদের জন্যই দেশে করোনা ছড়িয়েছে। যদিও সরকারী অনুমতি ছাড়া কোনোভাবেই এতবড় জমায়েত করা সম্ভব নয়। ফলে একদিকে যেমন ঘটনায় সরকারি গাফিলতি ছিল, অন্যদিকে ২ মাস পর কেন্দ্রের তরফে ধর্মীয় স্থান খোলার সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় এইমূহুর্তে নিজামুদ্দিন দরগা না খোলার সিদ্ধান্তে ‘ধর্ম’ নয় ‘মানবিকতা’ই যে সবার আগে তা মানুষকে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিল নিজামুদ্দিন কর্তৃপক্ষ