নিজস্ব সংবাদদাতা: ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে ২৭টি মৃত্যুর পর দেশের নিরপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অজিত দোভাল যখন জাফরাবাদের বস্তিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তখন বছর ২২য়ের মেয়েটি বলছিল কী ভাবে ২দিন ধরে তাদের এলাকায় তাণ্ডব চললেও পুলিশের দেখা মেলেনি। তাণ্ডবকারীরা মহল্লা ঘিরে রাখায় আহত অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়নি। ৪৮ঘন্টা ধরে গুলির আওয়াজ শুনতে শুনতে নাওয়া খাওয়া রান্নাবান্না ভুলেই গেছে মানুষ গুলো। আর পুলিশ শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রর পরামর্শে তামাশা দেখেছে। সেই পুলিশকে বে নাকাব করে দিয়েছিলেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলিধর। ২৪ঘন্টাও কাটেনি তাঁকে বদলি করে দেওয়া হল পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বুধবার মধ্যরাতে নিজের ঘরেই আদালত বসিয়ে দিল্লি পুলিশকে তুলোধোনা করেছিলেন। তাঁর একের পর এক প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। কার্যত মুখে রা-কাড়ার মতো অবস্থা ছিল না তাদের। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে আগুন জ্বলার সময় যতটা নিশ্চল ছিল দিল্লি পুলিশ তার থেকেও বেশি নীরবতা ছিল গতকাল দিল্লি হাই কোর্টে। দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধর বুধবার রেয়াত করেননি কাউকে। বুধবার তাঁর এজলাসে দিল্লিতে হিংসা মামলার শুনানি চলার সময় কেন্দ্র, দিল্লি পুলিশ, দিল্লি সরকারকে একহাত নেন তিনি। তাই তড়িঘড়ি তাঁকে বদলি করা হল বলে অভিমত অভিজ্ঞ মহলের।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
দিল্লি হাই কোর্টের তৃতীয় প্রবীণতম বিচারপতি হলেন এস মুরলীধর। ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম বদলির জন্য প্রস্তাব দেয়। সরকারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “সংবিধানের ২২২ নম্বর ধারার ১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বদলি করা হল দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধরকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে৷ বিচারপতি মুরলীধরের বদলির সিদ্ধান্তের গত সপ্তাহেই নিন্দা করে বার অ্যাসোসিয়েশন৷ তবে সেই আবেদন ধোপে টিকল না। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম এই বদলির প্রস্তাব তুলে নেওয়া হোক এই দাবিও করে বার অ্যাসোসিয়েশন৷
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বুধবার দিল্লির হিংসা নিয়ে শুনানি চলাকালীন বিচারপতি এস মুরলীধর বলেন, “দেশে আরও একটি চুরাশির দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি আসতে দেওয়া যাবে না। কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারকে একসঙ্গে কাজ করে দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার ও শান্তি ফেরানোর নির্দেশ দেন তিনি। একইসঙ্গে ভরা এজলাসে বুধবার দিল্লিতে উসকানিমূলক মন্তব্য করায় চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কেন কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
শনিবার থেকেই যখন দিল্লিতে হিংসা ছড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি হয় তখন থেকেই কেন কোনওরকম আগাম সতর্কতা জারি করা হল না তা নিয়েও প্রশ্ন করেন। দিল্লি পুলিশকে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, বিজেপি নেতা অভয় ভার্মা ও প্রবেশ ভার্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করারও নির্দেশ দেন৷
সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের দাবি যতই থাকুক না কেন দিল্লি পুলিশের ভর্ৎসনা করায় যে হাই কোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধরকে পত্রপাঠ বিদায় করা হল তা আর বলার আপেক্ষা রাখে না।