এভাবেই ফেলে পেটানোতে মৃত্যু |
নিজস্ব সংবাদদাতা: রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে পাঁচ যুবক। আর তাদের মুখমন্ডল লক্ষ্য করে লাঠি মারছে পুলিশ। চলছে বেধড়ক চর-ঘুষি-লাথি। আর সেই মা তুলে হিন্দি ভাষায় নোংরা গালি। সৌজন্যে দিল্লি পুলিশ। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও তোলপাড় করছে দিল্লি আর দিনের আলোর মত পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে কেন ৭২ঘন্টা প্রশাসন উধাও হয়ে গেছিল দিল্লি থেকে। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রক্তাক্ত যুবকদের জাতীয় সংগীত গাওয়ানো হচ্ছে। গলা নামলেই মুখ, মাথা লক্ষ্য করে বুটের লাথি। এমন কি চুলের মুঠি ধরে রাস্তায় মাথা ঠুকে দেওয়া হচ্ছে। গোঙাচ্ছে যুবক।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পুলিশ তাকে জিজ্ঞেস করছে, ‘আর আজাদি চাই’। আর এমনই অমানুষিক অত্যাচারে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকেরও।
না, এই নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে কোনও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা নয় বরং খোদ দিল্লি পুলিশ। এমনই এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মৃত যুবকের নাম ফয়জান। করদমপুরী এলাকার বাসিন্দা। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ। জানিয়েছে, তদন্ত চলছে।
সরাসরি মুখে মারা হচ্ছে লাঠি |
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, রাস্তায় পড়ে আহত পাঁচজন ব্যক্তি জাতীয় সংগীত গাইছেন। বলা ভাল, তাঁদের গাইতে বাধ্য করা হচ্ছে। রায়ট গিয়ারে থাকা একদল পুলিশকে ওই ব্যক্তিদের চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে দু’জন ওই ব্যক্তিদের দিকে লাঠি উঁচিয়ে রয়েছে। ধমকের সুরে বলেন এক পুলিশকর্মীকে “আচ্ছি তারাহ গা” বলতেও শোনা যায়! পরে দিল্লির গুরু তেগবাহাদুর (জিটিবি) হাসপাতালে ফয়জানকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ফয়জানের পরিবারের অভিযোগ, তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক মারধর করেছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ফয়জানের মা জানান, “আমার ছেলে এবং অন্যদের তাকে লোহার রড দিয়ে মারা হয়েছিল। ফয়জানের পা ভেঙে যায়, মারধরের ফলে ওঁর পুরো শরীর কালো হয়ে যায়। প্রথমে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়েছিল।” জানা গিয়েছে, এক পরিচিত ফয়জানকে চিনতে পেরে পরিবারকে জানিয়েছিল। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ফয়জানের মা। কিন্তু সেখানের তাঁর হদিশ মেলেনি।
রাস্তায় ঠুকে দেওয়া হচ্ছে মাথা |
এরপর ফয়জানের মা জ্যোতি কলোনির থানায় যান। এ প্রসঙ্গে ফয়জানের মা জানান, “ও থানায় ছিল। আমি তাদের ছবি দেখালাম, পুলিশ নিশ্চিত করল যে আমার ছেলে ওখানেই আছে। আমি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম এবং ওকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অনুরোধও করেছিলাম। পুলিশ ফয়জানকে আমার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। আমি রাত ১ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফয়জানের মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনায় আরও একবার বিতর্কের মুখে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা। দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক এম এস রাঁধা জানান, “গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।”ভিডিওতেই দেখা গেছে পুরো ঘটনা মোবাইল বন্দি করেছে পুলিশের এক জওয়ান। মুখে লাঠি মারতে মারতেই চলেছে ভিডিওগ্রাফি। হয়ত গর্ব করে ওই জওয়ানই তাদের ‘বীরত্ব’ শেয়ার করে ছিলেন অন্য বন্ধুদের। সেখান থেকেই ভাইরাল হয়ে থাকতে পারে।