নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার ডেবরা থানা এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ ছাড়িয়ে গেল! এদিন বাকলসা সেবকরাম গ্রামের করোনা আক্রান্ত মৃত পোস্ট মাস্টারের পরিবারের আরও ৫জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী বুধবারের রিপোর্ট অনুযায়ী এবার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন পোস্ট মাস্টারের স্ত্রী, পুত্র, মেজো বৌদি, ভাইপো ও ভাইঝি। এই নিয়ে ওই পরিবারের ১০সদস্যের মধ্যে ৭সদস্যই করোনা আক্রান্ত হলেন।
মঙ্গলবার আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছিল তাঁর মা এবং বড়দার। আশ্চর্য জনক ঘটনা এই যে, পোষ্ট মাস্টারের মৃত্যুর পরেই জ্বরে কাবু হয়ে পড়েছিলেন তাঁর মা ও মেজদা। পরিবারে সদ্য পোস্ট মাস্টারের মৃত্যু হওয়ায় কোনও ঝুঁকি না নিয়েই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর দুজনকেই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। আগেই নমুনা সংগ্রহ হয়ে গিয়েছিল তাঁদের। প্রথম দফার রিপোর্টে দেখা যায় মা আক্রান্ত হলেও তাঁরই সঙ্গে নিয়ে আসা মেজো ছেলে আক্রান্ত হননি। পরিবর্তে আক্রান্ত হয়েছেন বাড়িতে থাকা বৃদ্ধার বড় ছেলে।
মঙ্গলবার রাতেই মেজো ছেলেকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে বুধবার বড় ছেলেকে অর্থাৎ পোস্ট মাস্টারের বড়দাকে নিয়ে গিয়ে শালবনী হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এরপরই বুধবার নতুন করে ৫জনের পরিবারের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। এঁদের কী করা হবে তাই নিয়ে পরিকল্পনা করছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। জেলার ২টি হাসপাতালেই বর্তমানে উপচে পড়া ভিড় করোনা রোগীর। এই পরিস্থিতিতে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে উপসর্গহীনদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিতে পারে স্বাস্থ্য দপ্তর।
অন্য দিকে করোনা মানচিত্র ক্রমশ বিস্তার লাভ করছে ডেবরায়। ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চত্বর ছাড়িয়ে জালিমান্দার রঘুনাথপুরে ও বাকলসা সেবকরামে বেশি আকারে সংক্রমন হয়েছিল ঠিকই এবার তার বাইরেও সংক্রমন ছড়ানোর লক্ষন স্পষ্ট হল বুধবার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্টে। এদিন বালিচক ও লোয়াদা এলাকার বারাটিতে নতুন করে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের রিপোর্ট অনুসারে ডেবরা হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স এবং রাঁধুনি বাদ দিলে পরবর্তীতে আরেক চিকিৎসক এবং হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় আরও দুজনের করোনা ধরা পড়েছিল। এরপর একে একে ডুয়া, জালিমান্দা রঘুনাথপুর, বাকলসা সেবকরামে আক্রান্ত হওয়ার নজরে আসে। চিকিৎসক নার্সদের পর করোনার হানা ঘটে পুলিশ কর্মীদের মধ্যেও। এমনকি আক্রান্ত হন পুলিশ কর্মী পরিবারও। বুধবার বালিচকে নতুন করে ৩৫ বছর বয়সী পুলিশ কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই দিনে প্রাক আক্রান্তের সূত্র ধরেই বারাটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬ বছর বয়সী আরও এক ব্যক্তি।
উল্লেখ্য করোনা কালীন পর্যায় থেকে শুরু করলে ১২ই জুলাই অবধি ডেবরা থানা এলাকায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩জন। ডেবরায় করোনা সংক্রমন শুরু হচ্ছে জুলাইয়ের শুরুতে। ১২ তারিখ ১৩ জনের পর ২২তারিখ ১০ দিনের মাথায় সংখ্যাটা ২৫ ছাড়িয়ে ২৭ শে পৌঁছে গেছে। অবশ্য এর মধ্যে ১৩জন বর্তমানে সুস্থ। ১জন মৃত কে বাদ দিলে প্রায় ১৩জন করোনা সক্রিয় রয়েছেন।