নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজ্য সরকার মুখে যা বলছেন কাজে তা করছেননা এমনই অভিযোগে নজির বিহীন বিক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা গেল পরিযায়ী শ্রমিকদের।সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানা এলাকায় এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হন হাজারেও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক যাঁদের বেশিরভাগই সম্প্রতি মুম্বাই,দিল্লি সহ বিভিন্ন প্রদেশ থেকে এসে পৌঁছেছেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি রাজ্য সরকার বলেছিলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রেশন দোকান থেকে খাদ্য সামগ্রী প্রদানের জন্য বিশেষ কুপন দেওয়া হয়নি তাঁদের। পাশাপাশি একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পাওয়ার জন্য যে ফর্ম তাও জমা নেওয়া হচ্ছেনা।
এই দাবি নিয়ে দাসপুর-২ ব্লকের খুকুড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। পঞ্চায়েত অফিসের মূল ফটক ঘিরে ফেলেন কয়েক হাজার শ্রমিক। চলতে থাকে শ্লোগান সাউটিং। ভয়ে পঞ্চায়েত অফিস ছেড়ে বেরুতে পারেননি কর্মী আধিকারিক পঞ্চায়েত সদস্যরা। কয়েক ঘন্টা এই অবস্থা চলার পর ছুটে আসে দাসপুর থানার পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে শীঘ্রই তাঁদের দাবি প্রশাসনের কাছে পেশ করা হবে এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেয় পুলিশ। ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশ আধিকারিকদের জানিয়ে দেন দ্রুত তাঁদের দাবি না পুরন হলে আরও বৃহৎ আকারে আন্দোলনে সামিল হবেন তাঁরা।
বিক্ষোভরত এক পরিযায়ী শ্রমিক বলেন, ” কোয়ারান্টিনে থাকার সময় থেকেই নরক যন্ত্রনা ভোগ করছি আমরা। অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা হয়েছিল আমাদের। আমরা তা মুখ বুঝে মেনে নিয়েছি। এরপর আমাদের বলা হল বিশেষ রেশন ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে আমাদের, দেওয়া হবে ১০০ দিনের কাজ। কিন্ত আমরা যখন অস্থায়ী রেশন সামগ্রী পাওয়ার আবেদনপত্র জমা দিতে যাই স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিস তা গ্রহন করেনি। একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পাওয়ার আবেদনও গ্রহন করছেনা পঞ্চায়েত। বাধ্য হয়েই বিক্ষোভে নামি আমরা।”
দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ওই আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কথা ব্লকে। ভুল করে ওরা পঞ্চায়েত অফিসে চলে গিয়েছিল। সমস্যা মিটে গেছে। তাছাড়া ওরা বাড়ী ফেরার পর রেশোন পাচ্ছে। তিনি বলেন ওরাই আমাদের এলাকার অর্থনীতির মূল স্তম্ভ।’
যদিও পরিযায়ী শ্রমিকদের দাবি, “ঘটনা একদিনের নয়, দিনের পর দিন সরকার ঘোষিত সুবিধা না পাওয়ার পরই আজ বিক্ষোভে নেমেছি আমরা। কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়নি। আশিসবাবুরাই মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন, বলে বেড়াচ্ছেন সরকার নাকি পরিযায়ীদের জন্য বহু ব্যবস্থা নিয়েছেন। আমরা অন্য রাজ্যগুলির শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করেছি, তারাও বাড়ি ফিরেছেন। আশিসবাবুরা খোঁজ নিয়ে দেখুন সেখানকার রাজ্য সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছে পরিযায়ীদের জন্য।”