Homeএখন খবরদাসপুরে করোনা নেগেটিভ হয়েও মৃত্যু, মৃত্যুর পর এলো পজিটিভ ফল, জেলায় নতুন...

দাসপুরে করোনা নেগেটিভ হয়েও মৃত্যু, মৃত্যুর পর এলো পজিটিভ ফল, জেলায় নতুন আক্রান্ত ১৩

নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলার দ্বিতীয় এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানা এলাকায় এবং এই মৃত্যুকে ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। মৃত ওই পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফেরার সময় নমুনা হিসাবে যে লালারস দিয়েছিলেন পরীক্ষার পর তা নেগেটিভ আসে। কিন্তু তারপরেও ওই ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়ার পর চিকিৎসকদের সন্দেহ হওয়ায় ফের তাঁর লালারস সংগ্ৰহ করা হয় এবং হতবাক করে দিয়ে সেই রেজাল্ট আসে পজিটিভ। শুক্রবার সরকারি নিয়ম মেনে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে না দিয়ে তাঁর সৎকার করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।

ঘটনাটি ঘটেছে দাসপুর ১ব্লকের বাসুদেবপুর গ্রামপঞ্চায়েতের নবীন শিমুলিয়া গ্রামে। মৃত ৪৫বছরের ব্যক্তি তারক বেরা উত্তর প্রদেশের কানপুর শহরে গত প্রায় একদশক ধরেই স্বর্নশিল্পী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। লকডাউন শিথিল হওয়ার পর কয়েকজন মিলে একটি বাস ভাড়া করে বাড়ি ফিরছিলেন। ২১ তারিখ জেলায় প্রবেশের সময় হিজলী গ্রামীন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অন্যদের সঙ্গে তাঁরও লালারস সংগ্ৰহ করা হয়। একসপ্তাহ পরে তার ফলাফল নেগেটিভ আসে।স্বাভাবিক ভাবেই খুশি মনে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কাটিয়েছেন।

পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন দিন তিনেক পরে হালকা জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তারেকের। যেহেতু নেগেটিভ ফলাফল এসেছিল তাই সাধারন সর্দিকাশি মনে করে স্থানীয় গ্রামীন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হয়। কিন্তু এরপরেও সমস্যা বাড়তে থাকায় ২জুন ঘাটালের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয় কিন্তু অবস্থার দ্রুত ও মারাত্মক অবনতি হতে থাকায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পরের দিনই। কিন্তু হাসপাতালের দোর গোড়ায় গিয়ে মারা যান তারক।

যেহেতু হাসপাতালের চত্বরে দেহ প্রবেশ করেছিল এবং ওখানকার চিকিৎসকরাই তারককে মৃত ঘোষনা করেন তাই সন্দেহ হওয়ায় দেহ তখুনি ফেরৎ দেওয়া হয়নি পরিবারের হাতে বরং সাবধানে মৃতদেহটি মর্গে রেখে তাঁর লালারস সংগ্ৰহ করে নমুনার জন্য পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার দেখা যায় ফল পজিটিভ অর্থাৎ করোনা নিয়েই মারা গেছেন তিনি। গোটা ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায় কারন নেগেটিভ হওয়ার পরও যদি কারও করোনায় মৃত্যু হয় তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?

পজিটিভ খবর পাওয়ার পরই তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ প্রশাসন। শুক্রবার সকালেই তারেকের পরিবারের ৮ সদস্যকে নিয়ে এসে মেদিনীপুর শহরের আয়ুষ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গোটা বাড়িটিকে সিল করে দিয়ে বাড়ির দায়িত্ব নেয় প্রশাসন। অন্যদিকে এলাকাটিকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষনা করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশ চন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, সরকারি ভাবে ওই ব্যক্তিকে করোনায় মৃত বলে ঘোষনা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য এই প্রথম জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে কোনও পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হল অন্য দিকে করোনা মৃত্যুর হিসাবে এটি দ্বিতীয়। এর আগে ২৯ মে মৃত্যু হয় খড়গপুর শহরের এক ব্যক্তির। ৪৫ বছরের ওই ব্যক্তিও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হলে চিকিৎসকরা তাঁকে তৎক্ষণাৎই গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালে পাঠান। এক্ষেত্রে পরিবার জানিয়েছিল যে ওই ব্যক্তি কোথাও না গিয়েই আক্রান্ত হয়েছিলেন। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতের খবর অনুযায়ী জেলায় নতুন করে ১৩জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular