ওয়েব ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যখন খুলে গিয়েছে দোকানপাট, রেস্তোরাঁ-শপিং মল, সেই সময় করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে দার্জিলিংয়ের বাণিজ্য ও পরিবহণ সংগঠনের তরফে আগামী ১৫ জুন থেকে ২১ শে জুন পর্যন্ত ৭ দিন দার্জিলিং শহরের সমস্ত দোকান-বাজার ও শপিং মল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শনিবারের বৈঠকে তাদের সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়। উত্তরবঙ্গে ক্রমশই বাড়ছে সংক্রমণ। এর জেরে নিজেদের শহরকে সুরক্ষিত রাখতে শুক্রবার দার্জিলিং পুর এলাকার অধীনে থাকা সমস্ত দোকান এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করে সেভ দার্জিলিং কোভিড-১৯ প্রোটেকশন কমিটি।
এই কমিটির অধীনে চেম্বার অফ কমার্স দার্জিলিং, পথ পাসালে সংঘ এবং হিমালয়ান ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটির সহ মোট ১৬টি সংগঠন রয়েছে। সরকারের তরফে লকডাউন শিথিল করার পর থেকেই দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বিধি ঠিকঠাক পালন করা হচ্ছে না। দোকানে বাজারে রীতিমতো ভিড় করে কেনাকাটা করছেন৷ মানুষ একপ্রকার ভুলেই গেছেন যে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে৷ ফলে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে আপাতত ব্যক্তিগত বিচ্ছিন্নতা প্রয়োজন। সেই কারণেই দার্জিলিংয়ে নবনির্মিত বাণিজ্য ও পরিবহণ সংগঠনের তরফে শহরের সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, দোকান-বাজার এবং গাড়ি চলাচল এক সপ্তাহর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কমিটির তরফে এই পরিকল্পনা প্রত্যাহার করা হয়। শুক্রবারের পর শনিবার ফের বৈঠকে বলা হয়, ১৫ জুন থেকে এক সপ্তাহ দার্জিলিং শহরে সমস্ত দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে কমিটির এই সিদ্ধান্তে বাধা আসায় কমিটিরভতরফে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।
এ বিষয়ে দার্জিলিং এর হিমালয়ান ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটির সভাপতি এস এন প্রধান জানান, “আমরা বনধ ডাকিনি তবে দার্জিলিং শহরের মধ্যে দার্জিলিং মিউনিসিপ্যালিটির অধীনে থাকা সবাইকে ২১ জুন পর্যন্ত বাড়ির ভিতরে থাকতে ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে এবং রাস্তায় গাড়ি না বের করতে অনুরোধ জানিয়েছি।”
এবিষয়ে পথ পাসালে সংঘের সম্পাদক মীরা বরাইলি জানান, “বাড়িতে বন্দি থাকার আবেদনের সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত কারণ অথবা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের সম্পর্ক নেই। প্রত্যেকের নিরাপদ থাকার অধিকার রয়েছে এবং শুধুমাত্র করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের স্বার্থেই দোকান-বাজার ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৬টি সংগঠন। এই সময় সরকারি ও বেসরকারি সব রকম পরিবহণও বন্ধ রাখা হচ্ছে।”
এদিকে, পরিযায়ী শ্রমিকদের আসার পর থেকেই শিলিগুড়িতে দিন দিন বাড়ছে সংক্রমণের হার৷ এমনকি বাজারে আসা কিছু দোকানীদের মধ্যেও করোনা সংক্রমণের হদিশ মিলেছে। এর জেরে জেলা প্রশাসনের তরফে সপ্তাহখানেকের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে মাছ বাজার, ফল ও সব্জির বাজার৷ অন্যদিকে, দার্জিলিঙে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ১৮৪ জন ও মৃত ৩ জন।