নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজধানী দিল্লির সীমান্তে সরকারের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছে আন্দোলনরত ১২লক্ষ কৃষক। মঙ্গলবার সেই কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে যাওয়ার পথে ৮২ বছর বয়সী বিলকিস বানো, যিনি ‘শাহিনবাগের দাদি’ নামেই খ্যাত তাঁকে আটক করল দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি হরিয়ানা সীমান্তে যাওয়ার পথে সংবাদ সংস্থা ANI কে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমরা কৃষকদের কন্যা। সেই কারনেই তাঁদের সমর্থনের জন্য যাচ্ছি। সরকারকে আমাদের কথা শুনতেই হবে।” বানো এবং আরও দুই দিদিমা বিশ্বের দরবারে আলোকিত হয়েছিলেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের(CAA) বিরুদ্ধে যখন দিল্লিতে দীর্ঘ আন্দোলন চলে সেই সময়ে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে। সেই সময় টাইম ম্যাগাজিন (Time magazine) তাঁকে বিশ্বের ১০০জন প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান দিয়েছিল।
উল্লেখ্য প্রায় ১২লক্ষ কৃষক যাঁর মধ্যে ৮০হাজার কৃষক রমনীও রয়েছেন লক্ষাধিক ট্রাক্টার নিয়ে মূলতঃ হাজির হয়েছেন দিল্লি সীমান্তে। মূলতঃ পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকেই সংখ্যায় বেশি এসেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি সদ্য আইনে পরিনত হওয়া তিনটি কৃষি বিল হওয়া কৃষক উৎপাদিত পণ্যের শিল্প ও বাণিজ্য নীতি (Promotion and Facilitation Act, 2020), কৃষকের ক্ষমতা ও নিরাপত্তা (Empowerment and Protection) , চুক্তিবদ্ধ চাষের ক্ষেত্রে ন্যায্য দামের নিশ্চয়তা ও কৃষি খামার আইন(Agreement on Price Assurance and Farm Services Act, 2020) এবং সংশোধিত অত্যাবশ্যকীয় আইন (The Essential Commodities (Amendment) Act, 2020) বাতিল করতে হবে।
প্রায় ৫০০টি কৃষক সংগঠন যৌথ ভাবে এই আন্দোলনে সামিল হয়েছে। এই দাবির প্রতি সহমর্মিতা জানাতেই যাচ্ছিলেন বানো। যেমনটা ইতিমধ্যে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে এই কৃষকদের আন্দোলনের সমর্থনে কেন্দ্রের দেওয়া বিভিন্ন পুরষ্কার ফেরৎ দিতে শুরু করেছেন দেশের বিভিন্ন ক্রীড়াবিদ এবং খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব।
দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (বহির্দিল্লি, উত্তর) গৌরব শর্মা জানিয়েছেন,”উনি (বানো) একজন বরিষ্ঠ নাগরিক। বর্তমান অতিমারির কথা চিন্তা করেই সিংঘু সীমান্তের কাছে তাঁকে থামিয়েছি আমরা। তাঁর নিরাপত্তা ও মঙ্গলের স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। কোনও ধরনের সংঘাত ছাড়াই পুলিশের দায়িত্বেই তাঁর উত্তর দিল্লির বাড়িতে তাঁকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”
এদিকে বিজেপির একটি অংশ থেকে কৃষকদের এই আন্দোলনকে মাওবাদী ও খালিস্থানপন্থীদের মদতপুষ্ট বলা হয়েছে। পাল্টা বিরোধীদের পক্ষ থেকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে কৃষকদের মুখোমুখি হওয়ার বদলে প্রধানমন্ত্রী দিল্লি থেকে পালিয়ে বারানসীতে গিয়ে প্ৰমোদ তরীতে বিলাস ভ্রমণে ব্যস্ত রয়েছেন। অন্যদিকে কৃষকরা জানিয়েই দিয়েছেন ৬মাসের খাদ্য মজুত করেই তাঁরা দিল্লি সীমান্তে এসেছেন। অন্যদিকে আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে নিজেদের ক্ষেতের শাক সবজি ইত্যাদি নিয়ে হাজির হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।