নিজস্ব সংবাদদাতা: লকডাউনে বাজারে বর্বর হামলা চালিয়ে এক যুবককে মারাত্মকভাবে জখম করে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর বাইক , মোবাইল ও মানি পার্স যার মধ্যে অন্তত ৫ হাজার টাকা ছিল বলে যুবকের দাবি। ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পের হয়ে যাওয়ার পরেও কিনারা হয়নি।গুরুতর আহত ওই যুবক বর্তমানে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ী থানার জামবনী এলাকায়, কেশিয়াড়ী-বেলদা রাজ্য সড়কের ওপর শনিবার। প্রশ্ন উঠেছে কতটা নিরাপদ ওই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ক। আহত যুবকের নাম জয়ন্ত পন্ডিত, ২৬ বছর বয়সী জয়ন্তর বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে ১ কিলোমিটার ভেতরে বিদ্যধর গ্রামে। জয়ন্ত সাবমারশিবল পাম্প বসানোর কাজ করেন। তাঁর বাবা লক্ষ্মীকান্ত স্থানীয় বাজারে সবজি বিক্রি করেন এবং জয়ন্তর ভাই বসন্ত বর্তমানে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে আটকে পড়েছে।
ঘটনার বিবরন দিতে গিয়ে বসন্ত বলেছেন, ” শনিবার বেলদা থেকে আমার এক কাকু দাদাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সেই কারনে দাদা বেলদা গেছিল বলে আমাদের জানায়। পাশাপাশি ওর পেশা সংক্রান্ত কিছু বিষয় থাকতে পারে। নিজের হুন্ডা ট্যুইটার বাইকে বাড়ি ফিরছিল রাত সাড়ে আটটা থেকে ন’টার মধ্যে ওই রাস্তার কুকাই সংলগ্ন জামবনীর কাছে এক ব্যক্তি দাঁড়াতে বলে। আমাদের বাড়ি এই এলাকার কাছাকাছি
কোনও প্রয়োজনে কেউ দাঁড় করাচ্ছে মনে করে দাদা বাইকের গতি কমিয়ে দাঁড়াতেই সজোরে লাঠির আঘাত পড়ে দাদার মাথায়
। অন্ধকারে বোঝাই যায়নি যে আড়ালে আরও মানুষ ছিল। এক মারেই দাদা গাড়ি থেকে পড়ে যায়। এরপরই একের পর এক লাঠি পড়তেই থাকে মাথায়, সারা শরীরে।দাদাকে অচেতন করে তার বাইক, মোবাইল,পার্স নিয়ে চলে যায় দুষ্কৃতীর দল।”
জানা গেছে অনেকক্ষণ ওভাবেই পড়েছিল জয়ন্ত। এরপর পাঁচইয়াড় বলে ওই রাস্তার ওপরেই কয়েক কিলোমিটার দুরে একটি জায়গায় কর্মরত কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার ডিউটি সেরে বাড়ি ফেরার পথে তাকে পড়ে থাকতে দেখে চিনতে পারে। জয়ন্তর বাড়ির কাছে এক ব্যক্তি যিনি নয়াগ্রাম থানায় কর্মরত তাকে ফোন করে জানায়। তার মারফৎ খবর পেয়ে বাড়ির লোকেরা এসে জয়ন্তকে উদ্ধার করে কেশিয়াড়ী হাসপাতালে ভর্তি করে, বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন সে।
পরের দিন জয়ন্তর বাবা স্থানীয় একজনের সাথে গিয়ে কেশিয়াড়ী থানায় একটি ডায়রি করে। যদিও এখনও অবধি রহস্যের কোনও কিনারা হয়নি, উদ্ধার হয়নি বাইক,মোবাইল,টাকা। গ্রেপ্তার হয়নি কেউই।
কেশিয়াড়ী হাসপাতালে ভর্তি জয়ন্তর সিটি স্ক্যান হয়। কারা এই কাজ করতে পারে এ সম্পর্কে জয়ন্ত জানায়, তাঁর সঙ্গে পেশাগত শত্রুতা ছিল এমন এক ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটালেও ঘটাতে পারে আবার ছিনতাই কারীর দলও হতে পারে। শত্রুতা চলছিল যে ব্যক্তির সাথে তার নামও পুলিশকে জানিয়েছে সে। অন্যদিকে ছিনতাইয়ের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায়না। কারন জামবনী বা কুকাই সংলগ্ন এলাকায় আগেও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছিল এবং কাছাকাছি জায়গাতে মদের বোতল পাওয়া গেছে।
কেশিয়াড়ী-বেলদা রাজ্য সড়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সড়ক যেখান দিয়ে কেশিয়াড়ী ছাড়াও ভসরা, নয়াগ্রাম, কুলবনী, খাজরা, কুলটিকরি এলাকার সাধারন মানুষ, ব্যবসায়ীরা যাতায়ত করেন এবং অনেকেই বাইকে। কারন এই এলাকার একমাত্র বৃহৎ পাইকারি বাজার বেলদা। এই রকম অবস্থায় এই ধরনের ঘটনা মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পুলিশ অবশ্য গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে বলেই জানিয়েছে।