শশাঙ্ক প্রধান: শুধুই গতানুগতিক খবর নয় মাঝে মধ্যে উঠে আসা অন্যরকম খবর গুলো নাড়িয়ে দেয় মানুষকে। আর সেই খবর যখন গ্রাম কিংবা মফঃস্বল থেকে উঠে আসে তখন আরও ভালো লাগে বইকী। রবিবার এরকমই দু’দুটি মহতী উদ্যোগের খবর পাওয়া গেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ও ডেবরা থানা এলাকা থেকে যেখানে সন্তানের জন্মদিনে হৈচৈ করা আড়ম্বরের পরিবর্তে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন দুই দম্পত্তি যার মধ্যে এক মা নিজেও রক্তদান করেন।
ওই দুই পরিবারই জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক রক্তদান আন্দোলন ভীষন ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যাঁরা নিয়মিত রক্তদাতা তাঁদের অনেকেই যেমন আক্রান্ত হচ্ছেন তেমনই কোথাও কোথাও নিয়মিত আয়োজকরাও আক্রান্ত হওয়ায় নিয়মিত শিবির কম হচ্ছে। অন্যদিকে গ্রীষ্মকালীন রক্তের সংকট থেকেই যায়। এই অবস্থায় জেলায় রক্তের যোগানে নিজেদের কিছুটা
অবদান রাখার জন্যই সন্তানের জন্মদিনকেই বেছে নিয়েছেন তাঁরা।
রবিবার সবং ব্লকের চাঁদকুড়ি গ্রামে নিজেদের মেয়ে অঙ্কিতার ২২ তম জন্মদিনে পালনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন হরিপদ জানা এবং কেয়া জানা। এঁদের মেয়ে অঙ্কিতা বর্তমানে কলকাতায় এম.এস.সি পাঠরতা।
চাঁদকুড়ি প্রাথমিক স্কুলে অঙ্কিতা ছোট বেলায় পড়াশুনা করতো।সেই স্কুলে নিজের জন্মদিনে এই রক্তদান শিবির করলেন। এই রক্তদান শিবিরের প্রায় ৩০ জন রক্তদাতা রক্ত দান করেন। মেয়ের মঙ্গল কামনায় রক্তদান করেন কেয়া নিজেও।
এই শিবিরে তিন জন মহিলাও রক্তদান করেছেন। কলকাতা লাইফ কেয়ার ব্লাড ব্যাঙ্ক এই রক্ত সংগ্রহ করে।
অঙ্কিতার বাবা হরিপদ বাবু বলেন মেয়ে ছোট থেকেই এইরমক মানুষের সেবায় নিযুক্ত থাকতে ভালোবাসে, পড়াশুনার জন্য মেয়ে কোলকাতাতে থাকে সবসময় আমাদের ফোন করে বলতো যে বাবা এই করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের রক্তের সংকট মেটাতে আমার জন্মদিনে আমি রক্তদান শিবির করবো। তার উদ্যোগকেই সহযোগিতা করেছি আমরা।
অন্যদিকে ডেবরা থানার রাধামোহনপুরে এদিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন আরেক দম্পত্তি। ছেলের ৮ বছরের আবির্ভাব মিশ্রের জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই আয়োজন করেন শ্রাবন্তী মিশ্র দাস ও তাঁর স্বামী। শ্রাবন্তী পেশায় একজন আশাকর্মী। যদিও তার বাইরের পরিসরে গিয়েও একজন নিবিষ্ট সমাজকর্মী তিনি। করোনা কালে দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন তিনি। মোট ২৭জন রক্ত দিয়েছেন এই শিবিরে। রক্তদাতাদের হাতে একটি করে চারাগাছ তুলে দিয়ে নিজের জন্য আশীর্বাদ চেয়ে নেন।