নিজস্ব সংবাদদাতা: ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া করোনার দ্বিতীয় ঢেউ উঁচু হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এপ্রিল মাসে। আর সেই প্রবল ঢেউয়ে অনেকটাই অপ্রস্তুত দেশে এলোমেলো হয়ে গেছিল করোনার সঙ্গে লড়ার যাবতীয় প্রস্তুতি। হাসাপাতালে বেডের ঘাটতি তো ছিলই কিন্তু অক্সিজেনের অভাবে পরিস্থিতি হয়ে উঠেছিল ভয়াবহ। শুরু হয়ে গেছিল দৈনিক মৃত্যুমিছিল। লাশের পাহাড় আর গন চিতা, গঙ্গায় ভাসতে থাকা লাশের পর লাশ মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি আমাদের মরন আতঙ্কে আতঙ্কিত করেছিল। যদিও এখন পরিস্থিতি সামলে উঠে অনেকটাই উন্নত পরিস্থিতি। কিন্তু এরই মধ্যে আশঙ্কা গাঢ় হচ্ছে তৃতীয় ঢেউকে (Third wave) নিয়ে। এমনও শোনা যাচ্ছে, তৃতীয় ঢেউ হবে আরও ভয়ংকর। সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে গোটা দেশ, সমস্ত রাজ্য। কিন্তু না, এরই মধ্যে দেশকে স্বস্তির বার্তা দিলেন AIIMS প্রধান ডা. রণদীপ গুলেরিয়া। বললেন, করোনার তৃতীয় ঢেউ ততটা ভয়াবহ হবে না যতটা প্রচার করা হচ্ছে।
শনিবার বিকালে দিল্লিতে একটি সংবাদমাধ্যমকে ডাঃ গুলেরিয়া বলেছেন, ‘দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকেও তৃতীয় ঢেউ বেশি বিপজ্জনক হবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি মনে করি, আগামী ঢেউ দ্বিতীয়টির মতো অতটা ভয়াবহ হবে না।’’ সেই সঙ্গে তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা প্রসঙ্গে এইমস প্রধান বলেন, ‘‘দ্বিতীয় ঢেউ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আর সেইমতো প্রস্তুতি নিতে হবে সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করার।’’ পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন স্প্যানিশ ফ্লুর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকেই সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছিল। পরে তৃতীয় ঢেউ এলেও তা ছিল দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকে অনেকটাই কম।
করোনার ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনই তৃতীয় প্রবাহকে ডেকে আনবে এমন একটা কথাও শোনা যাচ্ছে। এপ্রসঙ্গে ডা. রণদীপ গুলেরিয়ার মত, এখনও এই স্ট্রেনই ভারতে সংক্রমণের ক্ষেত্রে প্রধান হয়ে ওঠেনি। তবে এটির দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। কিন্তু এই মুহূর্তে ডেল্টা স্ট্রেনটিই দেশে সংক্রমণের প্রধান ভূমিকা পালন করছে। তাই সেটিকেও নজরে রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। AIIMS প্রধান এও বলেছেন, “করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিশুরা। এমন একটা গুঞ্জনও রয়েছে। সেপ্রসঙ্গে তিনি পরিষ্কার জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত এমন কোনও তথ্য মেলেনি যা থেকে এমন কথা বলা যায়।”
ডাঃ গুলেরিয়া বলেছেন, “যদি আমরা করোনা বিধি সঠিকভাবে মেনে চলি, যদি তীক্ষ্ণ নজরদারি এবং যথাযথ ভাবে টিকাকরন এই তিনটি কাজ করতে পারি তাহলে আমরা করোনার তৃতীয় ঢেউকে আছড়ে পড়া থেকে প্রলম্বিত করতে পারি শুধু তাই নয় আমরা হয়ত আটকেও দিতেও পারি। তবে মনে রাখতে হবে ভাইরাসের রূপান্তর (Mutation) উদ্বেগজনক বিষয়। তিনি বলেছেন যে আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে ভাইরাস এখনও রয়েছে এবং তা পরিবর্তন করছে। এটি উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে।