নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বেশ খানিকটা থমকে ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরে। গত ১৫ই জুন থেকে ধিরে ধিরে নামতে থাকে দৈনিক করোনা সংক্রমনের গ্রাফ। ওই দিন যা ১১১ ছিল পরের দিন অর্থাৎ ১৬ই জুন তা প্রথম একশ’র নিচে নেমে ৯৩ য়ে দাঁড়ায়। এরপর যা আর তিন অংক ছাড়ায়নি। এই ভাবে ১৭জুন ৮৬, ১৮ই জুন ৮৪, ১৯ শে জুন ৯০ জনের নেমে যায়। ২০শে জুন সর্বনিম্ন ৫৫ জন অবধি নেমে যায় দৈনিক সংক্রমন। গোটা রাজ্য এমনকি দেশেও এই প্রবণতা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় সেই অগোছালো জীবন। মাস্ক না পরা, দৈহিক দূরত্ব না মানা, দোকানে উপচে পড়া ভিড়, চায়ের দোকানে আড্ডা। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে ফের বাড়তে শুরু করেছে করোনার আক্রমন।
মঙ্গলবার ২২শে জুন ফের একশ’র ঘর ছাড়িয়ে ১২৪ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন। পরের দিন ২৩ শে জুন তা একলাফে গিয়ে পৌঁছেছে ১৬২ জনে। প্রবণতা এই ভাবে চলতে থাকলে একদিনের ব্যবধানেই জেলায় ২০০ছুঁয়ে যাবে দৈনিক সংক্রমন। উল্লেখযোগ্য এই যে এদিন এমন কোনও থানা মেলেনি যেখানে করোনায় আক্রান্ত মেলেনি। অথচ গত ৬দিন বেশকিছু থানায় করোনায় নতুন করে আক্রান্ত পাওয়া যাচ্ছিলনা। যে আইআইটি ক্যাম্পাসে বেশ কয়েকদিন পজিটিভের সন্ধান মেলেনি সেখান থেকেও ২৪ঘন্টায় ৪জন আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে। সংক্রমনের বিপদঘন্টা বাজছে কেশিয়াড়ী, পিংলা, বেলদা, সবংয়ের মত গ্রামীন এলাকায়। মেদিনীপুর শহর ও তার লাগোয়া জনপদে গত ২৪ঘন্টায় প্রায় ৪০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। খড়গপুর শহর ও গ্রামীণ মিলিয়ে আক্রান্ত ৩২জন।
মেদিনীপুর শহরে ঠিকানা বিহীন ২ ব্যক্তি ছাড়াও কোথায় কত আক্রান্ত পাওয়া গেছে তা বন্ধনীর ভেতর উল্লেখ করা হল।বাসন্তীতলা(৪), তাঁতিগেড়িয়া (৩), মহাতাপপুর, বার্জটাউন(২) , মিত্রকম্পাউন্ড(২), আবাস (৩), হবিবপুর(২), মেডিকেল কলেজ,শরৎপল্লী(৩), কালীতেলির চক, নিমতলা চক, খাপরেলবাজার, নজরগঞ্জ, কুইকোটা, জজকোর্ট, অশোকনগর, ধর্মা, বিবিগঞ্জ, রাঙামাটি, খয়েরউল্লাচক (২), হোসনাবাদ ২, মালিয়ানায় আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে।
খড়গপুর শহরের আইআইটি ক্যাম্পাস থেকে ৪ আক্রান্ত ছাড়াও আক্রান্ত পাওয়া গেছে সিআরনগর, দীনেশনগর, ইন্দা বিদ্যাসাগরপুর, হিজলী কো অপারেটিভ, শ্রীকৃষ্ণপুর, কৌশল্যা, ইন্দা , মহকুমা হাসপাতাল আবাসন, আরপিএফ ব্যারাক,রেলআবাসন,ছোটট্যাংরা, জফলারোড, গোলবাজার এলাকায়। খড়গপুর ১ব্লকের ঘোলঘরিয়ায় আক্রান্ত ২জন, এছাড়া হিরাডিহি, শ্রীকৃষ্ণকলোনী, তেলিখানা, গোপালি, বড়কলা এবং খড়গপুর ২ব্লকের আমলপুর, বলরামপুর কসবায় ২জন কদমবাগেড়িয়া শ্যমচক, চকহলদি শ্যমচক, রাউৎমনি থেকে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।
গড়বেতা সদরে ১জন ও কেওতাড়া, জুগিধান গোয়ালতোড় সদরে২ জন ছাড়া, বুলানপুর, কিয়ামাচা, নবকোলা, বারোমেশিয়া এবং কেশপুর সদরে ১ আক্রান্ত ছাড়া আক্রান্ত পাওয়া গেছে আকরপাতা থেকে। শালবনী সদরেও মিলেছে ২ আক্রান্ত। এছাড়াও ট্যাঁকশাল, বাকড়াতে ১ জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছে।
ডেবরা থানায় বৌলাসিনি কাঁটালিয়া, শ্রীকৃষ্ণপুর, মহাদেবপুর ডেবরা বাজার ৩, পূর্ব সাতকোনা ধামতোড়, পলাশী থেকে ৯জন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে।
পিংলা সদরে ৪জন আক্রান্ত সহ মোট ১২জন আক্রান্তের খবর এসেছে, ধনেশ্বরপুর, ক্ষীরাই (২), জলচক,
পাঁচথুবি, যশরাজপুর, রাতরাপুর (২) থেকে। সবংয়ের করকাই, উত্তর নিমকি মোহাড়, জুলকাপুর, বিষ্ণুপুর (২) থেকে নতুন সংক্রমনের খবর এসেছে।
কেশিয়াড়ীর তলকেশিয়াড়ীতেই আক্রান্ত ৪জন। এছাড়াও ভবানীপুর, দুধেবুধে জামশোল, কুলবনী, হাসিমপুর, কারাত কূটকি, আগরপাড়া, দক্ষিণডিহা জুনবালিদা মিলিয়ে মোট আক্রান্ত ১২জন। বেলদা থানার বড়মাৎকাতপুর, অভিরামপুর, লাখনডা কুনারপুর, রবীন্দ্রনগর, শুশিন্দা (২), বাসুদেবপুর মিলিয়ে আক্রান্ত ৭ জন। এছাড়া দাঁতনের চড়কাপাড়া, সড়রঙ (৩), পাইকবাড় শালিকোঠা, রাউতারাপুর এবং মোহনপুর থানার শ্রীরামপুর ও রঘুনাথপুর থেকেও আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।
ঘাটাল মহকুমায় এখনও সংক্রমন নিয়ন্ত্রণে তিন থানায় মোট আক্রান্ত ২২জন। ঘাটাল থানার কুশপাতায় ২জন ছাড়া মোহনপুর ও খড়ারে আক্রান্ত ১জন করে। চন্দ্রকোনার তাতারপুরে ও চরকোলায় ২জন করে আক্রান্ত। এছাড়াও আক্রান্ত মিলেছে পুরশুড়ি, ক্ষীরপাই, নতুনগ্রাম থেকে। দাসপুর সদরে ১জন আক্রান্ত কিন্তু সংক্রমন বেশি মিলেছে চককৃষ্ণবাটিতে যেখানে ৬জন আক্রান্ত। এছাড়া কাশীনাথপুরে ২জন ছাড়াও আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে গোবিন্দনগর ও নুনিয়াগাদা থেকে।