নিজস্ব সংবাদদাতা: ১২ ঘন্টাও মিলল না স্বস্তি কাটতে তারই মধ্যে আবার জেলায় এক কোভিড পজিটিভের সন্ধান পাওয়া গেল আর এবারই প্রথম তা মিলল মেদিনীপুর শহরেই। জানা গেছে মেদিনীপুর শহরের নির্নয় হাসপাতালে ক্ষীরপাই পৌরসভার অন্তর্গত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দপুরের যে ৮৪ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ভর্তি ছিলেন এবং পরবর্তীকালে কলকাতার বি.এম বিড়লা হাসপাতালে গিয়ে যাঁর কোভিড পজিটিভ বলে জানা যায় সেই বৃদ্ধের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই তরুণী।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, ”ওই বেসরকারি হাসপাতালের বেশ কয়েকজনের নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছিল করোনা পরীক্ষার জন্য। বৃদ্ধের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পরই এই পরীক্ষা প্রক্রিয়া শুরু হয়। তার মধ্যে বিশেষ ভাবে সন্দেহভাজন তিনজনের নমুনা কনাফার্মেটারি হিসাবে রাখা হয়েছিল যার মধ্যে ১ জনের নমুনা কোভিড পজিটিভ এসেছে।”
উল্লেখ্য মাত্র ১২ঘন্টা আগেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জেলার করোনা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করা গেছিল কিন্তু তারপরেই এই ফলাফল ফের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিল।
গত ২ মে মেদিনীপুরের নির্নয় হাসপাতাল থেকে ওই বৃদ্ধকে বি.এম.বিড়লা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে ওই বৃদ্ধের আর তারপরেই এম.আর. বাঙ্গুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে ওখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন বৃদ্ধ।
এদিকে খবর পাওয়া মাত্রই ওই বেসরকারি হাসপাতালের বড় অংশ সিল করে দেওয়া হয় এবং বৃদ্ধের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত চিকিৎসা কর্মীকেই কোয়ারেন্টাইন করা হয়। তাঁদের নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়। মেদিনীপুর শহরের একটি স্থানে মেস ভাড়া করে থাকা তিন তরুনীকেও ওই মেসেই কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। ওই বেসরকারি হাসপাতালের অনেকের সঙ্গেই এঁদেরও নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়। প্রথম পরীক্ষাতেই তিনজনের ফলাফলের মধ্যে সন্দেহভাজন উপাদান মেলায় তাঁদের ফের পরীক্ষা হয় এবং কনাফার্মেটারি হিসাবে রাখা হয় যা শেষ অবধি ওই তরুনীর ক্ষেত্রে পজিটিভ হয়।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, “আক্রান্তকে আমরা বড় মা হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ওঁর বাড়ি কোথায়, কে কে ওনার সংস্পর্ষে এসেছিলেন তা ট্র্যাক করা হচ্ছে। আমরা আবারও বলছি মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচেতন ও সতর্ক থাকলে কোনও ভয় নেই।”
অন্যদিকে মেদিনীপুরের স্টেশন পাড়া ও গেট বাজার সংলগ্ন কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে আরও ১কিলোমিটার ব্যস এলাকাকে ঘিরে শনিবার সকাল থেকে বাফার জোন তৈরি করা হয়েছে। কন্টেনমেন্ট জোনের অন্তর্ভুক্ত মানুষরা বাড়ির বাইরে বের হতে না পারলেও বাফার জোন এলাকার পরিবার পিছু একজন ব্যক্তি সকাল ৯ টা থেকে ১২টার মধ্যে ১ বার হতে পারবেন। শনিবার বিকালেই বাফার জোনের বাড়ি গুলিতে সেই জন্য বিশেষ পাস দিয়ে এসেছে পুলিশ। প্রত্যেকের বাইরে বেরুনোর ও প্রবেশের সময় নথিভুক্ত করবে পুলিশ।
সমগ্র জেলার হিসাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের এখনও অবধি ১৭ জন আক্রান্ত হলেন যার মধ্যে তিনজন বর্তমানে বাইরের জেলায় থাকেন কর্মসূত্রে। ওই তিনজনকে ধরলে সক্রিয় করোনা আক্রান্ত ৬ জন। বাকি ১১ জন করোনা মুক্ত হয়ে গৃহ কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।