নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা কালে কলঙ্কময় দিন হয়ে রইল মঙ্গলবার। করোনা রোগিদের জন্য সরকারের ‘দারুন উদ্যোগ’ য়ের প্রচারকে খানিকটা বে-আব্রু করে দিয়েই রাস্তা অবরোধে সামিল হলেন করোনা হাসপাতালের রোগিরা এবং সামিল হলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বিধানসভা এলাকা কাঁথিতেই। যেখানে প্রকাশ্য রাস্তায় করোনা রোগিদের ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলতে শোনা গেল, ‘পশুর মত রয়েছি আমরা।’
মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ কাঁথির সঞ্জীবনী করোনা হাসপাতাল লাগোয়া ১১৬ বি জাতীয় সড়ক অবরোধ করতে হাসপাতাল থেকে দলে দলে বেরিয়ে আসা করোনা রোগিদের দেখে এক দিকে যেমন বিড়ম্বনায় পড়ে যায় প্রশাসন তেমনই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় এলাকায়। সংক্রমিত রোগিরা বাইরে আসায় সংক্রমন ছড়াতে পারে এই ভয়ে শুরু হয়ে ছোটাছুটি। এদিকে করোনা রোগীরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করায় স্তব্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়ক। শুরু হয় যানজট, ছুটে আসে পুলিশ।
১১৬ বি জাতীয় সড়ক অর্থাৎ কলকাতা থেকে দিঘা যাওয়ার ব্যস্ততম সড়ক। যার দুদিকেই আটকে পড়ে বেশ কিছু পর্যটক,একাধিক যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী লরি। সড়কের ওপর সারি সারি করোনা রোগি দেখে আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হবার জোগাড় অনেকেরই। অনেককেই দেখা যায় বাস থেকে নেমে ছোটাছুটি করতে। ঘন্টা দেড়েক বিক্ষোভ অবরোধ চলার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ একটি বাহিনী ছুটে আসে। শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকরা যথাযথ জায়গায় বিক্ষুব্ধদের দাবি তুলে ধরবেন আশ্বাস দেওয়ার পর অবরোধ প্রত্যহৃৎ হয়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে মানুষ।
বিক্ষোভরত রোগিদের অভিযোগ, প্রায় জীবজন্তুর মত খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে হাসপাতালে। সে খাবার নিম্নমানের, বাসি, অর্ধ সেদ্ধ ইত্যাদি ইত্যাদি। অভিযোগ বাথরুম ব্যবহারের অযোগ্য, নোংরা, দুর্গন্ধময়, জলে ভর্তি। রোগিরা দাবি করেন এই হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হোক তাঁদের।
এদিকে ওই বেসরকারি হাসপাতালের মালিক নন্দদুলাল দাসের বক্তব্য , ” দু’দিন ধরে নানা কারণে সমস্যা হয়েছে ঠিকই কিন্তু খাবার ও পরিষেবা নিয়ে ধারাবাহিক নিম্নমানের অভিযোগ ঠিক নয়।’ দাসের দাবি, ‘হাসপাতালের মধ্যে এক শ্রেণীর রোগি মাদকাসক্ত। তাঁদের ভেতরে নেশায় বাধা দিলে পরিকল্পিত সমস্যা তৈরি করছে।’
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায় বলেন,’ সমস্যা হয়ত আছে কিন্তু করোনা আক্রান্ত রোগীদের এভাবে আন্দোলনে নামা বিপজ্জনক ঘটনা। আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি। সেরকম হলে রোগিদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করবে প্রশাসন।’