নিজস্ব সংবাদদাতা-শাসক দলের নেতা মন্ত্রীরা যখন আকছার যেখানে সেখানে যাচ্ছেন, ভিড় জমিয়ে ত্রান বিলি করছেন তখন এক নির্বাচিত সাংসদকে ‘লকডাউন’য়ের তাঁরই সাংসদ এলাকার কয়েকটি গ্রামে যেতে দেওয়া হলনা এমনই অভিযোগ করলেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম। শুধু তাই নয়, হেমব্রম অভিযোগ করেন, পুলিশ যে কায়দায় তাঁর গাড়ি আটকছে এবং তাঁকে প্রথমে বেলপাহাড়ী ঢুকতে বাধা দিয়েছে তাতে মনে হচ্ছিল তিনি একজন দাগী অপরাধী বা ক্রিমিনাল।
সাংসদ জানান, ‘বেলপাহাড়ী এলাকার কাঁকড়াঝোর সংলগ্ন গাঢ়পাহাড়, বারুডি সহ কয়েকটি পাহাড় ঘেরা গ্রাম থেকে আমার কাছে অভিযোগ আসে যে সেই এলাকায় তীব্র পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে, কয়েকটি রেশন দোকান নিয়ম মত খাদ্য সরবরাহ করছেনা। আমি ঠিক করেছিলাম কয়েকটি গ্রামে যাব এবং বিনপুর-২য়ের বিডিওর সাথে কথা বলব। সেই মত আমার সহায়ক আমার যাত্রার কথা বিনপুর ও বেলপাহাড়ীর পুলিশ আধিকারিক ও বিডিওর সঙ্গে কথা বলে। বেলা ১২টা নাগাদ রাস্তায় আমার সঙ্গে বিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের সঙ্গে দেখা হয়। উনি প্রথমে আমাকে বলেন, লকডাউন চলছে আপনি যেতে পারবেননা । আমি বলি আমি ত্রান নিয়ে বা অনেক লোক নিয়ে যাচ্ছিনা। এরপর উনি আমাকে ছেড়ে দেন।”
সাংসদের ভাষায় , ” এরপর বেলপাহাড়ী ঢোকার রাস্তায় আমাকে আটকান ওখানকার আই.সি। আমাকে বলেন, আপনাকে বেলপাহাড়ী ঢুকতেই দেবনা। বারংবার উনি ওই একই কথা বলতে থাকেন। আমি ওনাকে বলি কোন আদেশ বলে আপনি আমাকে ঢুকতে দেবেননা সেই কাগজ দেখান। উনি কাগজ দেখানোর পরিবর্তে একই কথা বলতে থাকেন, ‘আপনাকে বেলপাহাড়ী ঢুকতে দেবনা।”
সাংসদ জানান, এরপরই আমি গ্রামে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বদলাই এবং বলি যে শুধু বিডিওর সঙ্গে দেখা করেই অভিযোগ জানিয়ে আসব। তারপরই আমাকে ছাড়া হয় শুধু বিডিওর সঙ্গে দেখা করার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে বিডিও আমার সঙ্গে দেখা করার সময় পাননি। কোথাও চাল দেওয়া হচ্ছিল উনি তার তদারকি করছিলেন। ২০মিনিট অপেক্ষা করে আমি ফের থানায় আসি এবং আই.সি সাহেবকে মানু্ষের অভিযোগ জানিয়ে আসি। যদিও এই একই অভিযোগ অর্থাৎ গ্রামগুলির পানীয়জল না পাওয়া আমি ২মাস আগেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।”
সাংসদ আরও জানান, ”সবচেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেছি পুলিশের আচরন দেখে। ব্যক্তি আমির কথা বাদ দিন কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধিকে এরা নূন্যতম সৌজন্য দেখাননা, সামান্য নমস্কার করতেও এঁদের কত কষ্ট!”
যদিও সাংসদের এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ”লকডাউনের নিয়ম মেনেই ওনাকে গ্রামে যেতে না বলা হয়েছিল। কোনও দুর্ব্যবহার করা হয়নি ওনার সঙ্গে। সংশ্লিষ্ট আইসি মনযোগ দিয়েই ওনার কথা শুনেছেন এবং প্রতিকার করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বেলপাহাড়ীর ইনসপেক্টর ইনচার্জ দয়াময় মাজী বলেন, ” যদি ওনাকে আটকানোই হয়, তাহলে উনি বেলপাহাড়ী থানায় এলেন কি করে?”ঘটনা অবশ্য এটা যে এর আগেও বেশ কয়েক জায়গায় বিজেপি সাংসদ জন বারলা, জয়ন্ত রায়ের মত বিজেপি সাংসদদেরও আটকানোর অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। বিজেপির অভিযোগ রাজ্যে জুড়ে তৃণমূলের অপদার্থতা ঢাকার দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ।