নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর শহরের পর এবার খড়গপুর গ্রামীনও জুড়ে গেল করোনার সাথে। গ্রামীন থানা এলাকার এক ৫৬ বছর বয়সী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। শনিবার তাঁর কিছু রুটিন টেস্ট করা হয়েছিল যার মধ্যে ছিল করোনার পরীক্ষাও। সেই টেস্ট পজিটিভ হয়েছে বলেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। ঘটনায় ওই গৃহবধূর পরিবার সহ প্রায় ১৫ জনের নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে করোনা পরীক্ষার জন্য। ফলাফল না আসা অবধি এঁদের সব্বাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশ চন্দ্র বেরা।
জানা গেছে গত ১৮ এপ্রিল ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত ওই গৃহবধূকে নিয়ে একটি আ্যম্বুলেন্সে তাঁর স্বামী ও মেয়ে এবং মেয়ের স্বামী হাওড়ার নারায়নী মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ওই গৃহবধূর কেমো থেরাপি ও অন্যান্য চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসার কারনেই নানা বিধ পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছিল ওই গৃহবধূর। এরই মাঝে কিন্তু নতুন উপসর্গ দেখা দেওয়ায় শনিবার আনুষঙ্গিক পরীক্ষার সাথে তাঁর কোভিড ১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়। এরপরই তাঁর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে। সাথে সাথে বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর দৃষ্টিতে নিয়ে আসে নারায়নী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাজ্য সতর্ক করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে।
এরপরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই মহিলার স্বামী,মেয়ে জামাই, ছেলে ও বৌমা এবং তাঁদের সন্তানাদি, আ্যম্বুলেন্সে চালক,তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের এবং যেহেতু আ্যম্বুলেন্সের মালিক মাঝে মধ্যে আ্যম্বুলেন্স চালাতেন তাঁর পরিবারের সমস্ত সদস্যকে নিয়ে যায় কোভিডের নমুনা সংগ্রহের জন্য। সংখ্যাটি সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ জন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি হাওড়ার হাসপাতালে ওই মহিলার চিকিৎসা ও পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকেরই নমুনা সংগ্ৰহ করা হচ্ছে। মহিলার পরিবার ও আ্যম্বুলেন্সের চালক ও মালিকের পরিবারের মতই হাসপাতালের ওই স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলের ওপর এঁদের পরবর্তী অবস্থান ঠিক হবে।
আক্রান্ত মহিলা খড়গপুর বা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার হলেও কোভিড আক্রান্ত হিসাবে তাঁর সংখ্যা বিবেচ্য হবে হাওড়া জেলার তালিকায় যেহেতু হাওড়াতে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। দ্বিতীয় যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা’হল ওই মহিলা কিভাবে, কোন সূত্রে আক্রান্ত হলেন তা খুঁজে বের করা। হাওড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর দু’তরফেই আক্রান্ত মহিলার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করে সেই সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। কারন আক্রান্তের উৎস না খুঁজে পাওয়া গেলে ফের সন্ক্রমনের সম্ভবনা থেকে যাবে।
জেলায় দাসপুর আর ঘাটালের মোট চারজন ছাড়া খড়গপুর শহরের আরপিএফ জওয়ানদের সন্ক্রমনের ঘটনার পর এবার গ্রামীনের নাম জুড়ে গেল করোনার সাথে। যদিও এই ঘটনায় আতঙ্কের কিছুই নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁরা আবারও জানিয়েছেন, বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে ভয়ের কিছুই নেই।