ওয়েব ডেস্ক : করোনা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্বই এক মাত্র পথ, একথা বারংবার বলছে চিকিৎসকরা। এই পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৫০ জনের বেশি উপস্থিত থাকা যাবে না এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সে কথা শুনছে কে? সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে জাঁকজমক করে বিয়ের আয়োজন করার অপরাধে জরিমানা গুনতে হল এক পরিবারকে। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানের ভিলওয়ারা জেলায়। তবে শুধু যে নিয়ম ভেঙেছেন তাই নয় সেই সাথে করোনায় আক্রান্তও হয়েছে বর সহ পরিবারের আরও ২ আত্মীয়।
করোনা সংক্রমণ দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে গোটা দেশে৷ এই পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই শ্রাদ্ধ কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি উপস্থিত না থাকার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে৷ রাজস্থান সরকারের তরফেও একই বিষয় জানানো হয়। কিন্তু আদতে সামাজিক দূরত্বের গুরুত্বই বুঝতেই চাইছেন না সাধারণ মানুষ। ঠিক যেমনটা হয়েছে এই বিয়ের অনুষ্ঠানে। সরকারি নির্দেশিকাকে পাত্তা না দিয়েই স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই গত ১৩ জুন ২৫০ জনকে আমন্ত্রণ জানায় এক পরিবার। আমন্ত্রিতদের কারো মুখে নেই মাস্ক, হাতে নেই গ্লাভস আর স্যানিটাইজারের তো বালাইই নেই। সেই অনুষ্ঠান তো ভালোভাবেই মিটে গিয়েছিল বিপদ এল দিন কয়েক পরেই।
কয়েকদিন পরেই জানা গেল, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন খোদ বর। করোনা সংক্রমণে মারা গিয়েছে ঠাকুরদা৷ এছাড়াও আক্রান্ত বরের আরও দুই আত্মীয় । তবে শুধু যে সংক্রমণ বরের পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তা কিন্তু নয়। সংক্রমণ ছড়িয়েছে অনুষ্ঠানে আসা পায় ১৫ জন আমন্ত্রিতদের শরীরে। ইতিমধ্যে সকলকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসায় ইতিমধ্যেই আমন্ত্রিতদের মধ্যে প্রায় ১৫০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। তবে কনে ও তাঁর বাড়ির ১৮ জন সদস্যের নমুনা পরীক্ষা করা হলে তাদের প্রত্যেকের রিপোর্টই নেগেটিভ আসে।
এদিকে এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় প্রশাসনের তরফে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই বরের বাবাকে একটি নোটিস পাঠানো হয়েছে। যাতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, যেহেতু তার পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেই এত মানুষ আক্রান্ত হয়েছে সেকারণে আক্রান্তদের দেখাশোনার দায়িত্ব তাদের পরিবারকেই নিতে হবে। সেকারণে কোয়ারেন্টাইনে থাকার খরচ এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা বাবদ মোট ৬ লক্ষ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা তিনদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দিতে হবে।
তবে এখানেই শেষ নয় করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করার অপরাধে এরপর মহামারী আইনে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে আরও জরিমানা করা হবে বলেও সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। ফলে বিধিভঙ্গের ফল এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রাজস্থানের পরিবারটি।