নিজস্ব সংবাদদাতা: কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলল টানা ৭দিনের মাথায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের দৈনিক সংক্রমন নামল ৪০০ নিচে। ১০ই মে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সংক্রমন নামল ৪০০ নীচে। ৩রা মে জেলার দৈনিক সংক্রমন ছিল ৩৬৪ যা পরের দিনই ৫৭৭ পৌঁছে যায়। তারপরের দিন ৫ই মে ভয়াবহ সংক্রমনে পড়ে জেলা, ৫৮৮জন। এখনও অবধি জেলায় এটাই সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমনের রেকর্ড। এরপর ৬ইমে ৫৭৫ এবং ৭ই মে ৫৫৯! ৮ই মে সামান্য কমে
সংক্রমন দাঁড়ায় ৪৮৩ জনে কিন্তু পরের দিনই ফের ৫১৪জন হয়ে যায়। এরপর ১০ই মে সংখ্যাটা কিছুটা আশা ব্যঞ্জক হয়ে ৩৮৩ জন। এদিন আরটি/পিসিআর পরীক্ষা থেকে ১৪৪, আ্যন্টিজেন থেকে ২২৮ এবং ট্রুনাট থেকে ২১জনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। যদিও আরটি/পিসিআর আর আ্যন্টিজেন ফলের এই বিপুল তারতম্য বলে দিচ্ছে জেলায় আরটি/পিসিআর পরীক্ষার হার ফের কমেছে। এই পরীক্ষা বাড়াতে পারলে ফলাফল কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো বলা যায়না।
যদিও জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের এই হিসাব যথেষ্টই মাথা ব্যথার কারন হয়ে দাঁড়াচ্ছে মেদিনীপুর শহর বাসীর কারন গত ২দিন ধরে মেদিনীপুর শহরের সংক্রমন যে হারে লাফিয়ে বেড়েছে এদিনও তার ব্যতিক্রম তো ঘটেই নি বরং অনেকটাই বেশি বলে প্রমাণিত হচ্ছে ৮ এবং ৯মে জেলায় ৫০০ ছুঁয়ে থাকা সংক্রমন থেকে মেদিনীপুর শহর থেকেই ১৭৫ জন করে দৈনিক আক্রান্ত পাওয়া গেছিল। ১০ই মে ৪০০ছুঁয়ে থাকা সংক্রমনের মধ্যে শুধু মেদিনীপুর শহর থেকেই নূন্যতম ১৫০জন আক্রান্ত পাওয়া গেছে। শতাংশের হিসাবে বলতে গেলে আগের দু’দিন জেলার মোট আক্রান্তের ৩৫% ছিল মেদিনীপুর শহরে আর পরের দিন সোমবার সেটা দাঁড়িয়েছে ৩৭.৫%। অর্থাৎ জেলা সদরে আক্রান্তের হার বাড়ছে।
এদিন ৩৬ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে যাঁরা শহরে বাস করলেও স্বাস্থ্যদপ্তরের নথিতে তাঁদের নির্দিষ্ট ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশ লাইন থেকে ৪জন এবং জেলা শাসকের আবাসন থেকে ২জন আক্রান্ত পাওয়া গেছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে ২৫জন আক্রান্ত পাওয়া গেছে। শহরে সর্বোচ্চ আক্রান্ত পাওয়া গেছে কুইকোটা এলাকা থেকে, ১১জন। গত কয়েকদিন ধরেই এই এলাকা হট বেড হয়ে রয়েছে। লাগোয়া আবাস থেকে ১০জন, হবিববপুর থেকে ২জন, কোতবাজার থেকে ৬জন এবং তোড়াপাড়া থেকে ৪জন আক্রান্ত পাওয়া গেছে। বরিশাল কলোনী থেকে ২ জন ছাড়াও তলকুই, কামারআড়া থেকেআক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। আরও একটু এগিয়ে খাপরেলবাজার, রাজারবাজার ধরে শহরের উত্তর অংশ যথেষ্টই খারাপ জায়গায় রয়েছে।
মেদিনীপুর শহরের কর্নেলগোলা থেকে ৬ জন এবং ধর্মা এবং মির্জাবাজার থেকে ৪জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। ৩জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছে অরবিন্দ নগর, মিরবাজার থেকে। নূন্যতম ২জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছে রবীন্দ্রনগর, নজরগঞ্জ, বক্সীবাজার, কেরানীতলা, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় আবাসন সহ রাঙামাটি, বার্জটাউন থেকে। ন্যূনতম ১জন আক্রান্ত হাঁসপুকুর, ফকিরকুয়া, জগন্নাথমন্দির, নতুনবাজার, শরৎপল্লী, প্রমথনগর, সুজাগঞ্জ, টাউন কলোনী, পাহাড়িপুর,বাড় মানিকপুর এলাকা থেকে।
খড়গপুর শহরে কিছুটা হলেও এদিন সংক্রমন কমেছে। সংখ্যাটা কমবেশি ৬০ জন। এরমধ্যে রেল কর্মী পরিবার থেকে রয়েছেন ২০জন। ১০ জন আক্রান্ত শহর বাসীর নির্দিষ্ট ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি। এদিন সর্বাধিক আক্রান্ত ইন্দা এলাকাতেই। কমলাকেবিন, বালিকা বিদ্যালয়, গোবিন্দনগর, রবীন্দ্রপল্লী ও মধুকর কলোনী সহ ইন্দা এলাকায় আক্রান্ত ১০জন যার মধ্যে মূল ইন্দায় ৪জন। আইআইটি খড়গপুর ক্যাম্পাস, কৌশল্যা, তালবাগিচায় ৪জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। মালঞ্চ, মিরপুর, খরিদা থেকে ৩জন করে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। দু’জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছে সুভাষপল্লী, সুকান্তপল্লী, হিজলী, মথুরাকাটি ও কয়েকটি রেল আবাসন থেকে। নূন্যতম ১জন আক্রান্ত ওল্ড সেটেলমেন্ট, ছোট ট্যাংরা, ভগবানপুর, ভবানীপুর, বিধানপল্লী, সাঁজোয়াল, প্রেমবাজার, তলঝুলি, আরপিএফ ব্যারাক, পুরাতনবাজার, গিরিময়দান, ঝাপেটাপুর মাইতিপাড়া থেকে।
খড়গপুর গ্রামীনের কলাইকুণ্ডায় ৩জন আক্রান্ত। বড়কলায় আক্রান্ত ২জন। বাকিরা গেড়িয়াশোল, বাড়গেড়ি, ঘাগরা, ধঢেমনা, শ্যামসুন্দরপুর, আমলিচক, চাঙ্গুয়াল, শ্রীকৃষ্ণপুর, কুচলাচাটি, সালুয়া ও রাউৎমনি এলাকার।
খড়গপুর মহকুমার ডেবরা থানার ডেবরা সদরেই আক্রান্ত ৭জন, বরাগড় থেকে ৩জন । বাকিরা আকালপৌষ, কুসুমদা, মোহনপুর, পদিমা ডুয়া, রঘুনাথপুর, পসঙ, বালিচক, সত্যপুর, আলিশানগর, চকখানজাদি, মানসিংহপুর, রুইগেড়িয়া এলাকার। পিংলা থানা এলাকার পিংলা সদর ছাড়া জামনা, নয়া, ছোটখেলনা, আকনা (২), নারাঙ্গাদীঘি, কুসুমদা, বানেশ্বরপুর, মালিগ্রাম থেকে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। সবংয়ের সদর থেকেই মিলেছে ৩ আক্রান্তের খোঁজ। দুবরাজপুরে আক্রান্ত ২জন। পাইকা দক্ষিনবাড় ও বলরামপুর থেকেও আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
বেলদা থানার ঠাকুরচক, বিনোদপুর, জগৎপুর, বেনাডিহা, শ্যামসুন্দরপুর, ও লালপুর সাউরিতে নতুন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। কেশিয়াড়ী থানাতেই আক্রান্ত ৩জন এছাড়া ওই থানার কাশিপুর, গোপালপুর, মামুদপুর ও সিংপুর চাকলা থেকে ১জন করে আক্রান্ত। মোহনপুরের তনুয়ায় আক্রান্ত ১জন।
মেদিনীপুর সদরের গ্রামীনে হরিশপুর, পাঁচখুরি, চাঁদড়া, গোপগড়, দেপাড়া, মালবাঁধি, সাঁকাডাঙা ছাড়াও গুড়গুড়িপালে ৩ জন ও চিলগোড়ায় আক্রান্ত ২। শালবনী থানার শালবনী সদরে আক্রান্ত ৪জন। এছাড়াও মাদারপুর, ভাদুতলা, তিলাখুলি, সাপকাটাতে ১জন করে আক্রান্ত। গোদাপিয়াশাল ও ডাঙরপাড়ায় ২জন করে আক্রান্ত। গড়বেতার চন্দ্রকোনা রোড সাতবাঁকুড়া,রায়পাড়া, রাধানগর, লাপুরিয়া, লেদাগামার, কুমারবাগান, পদ্মরপাড়া,মংলাপোতা ও গড়বেতায় ১জন করে আক্রান্ত। বাঁশডিহা ও শ্যামপুরে ২জন করে আক্রান্ত। গোয়ালতোড়ের পিংবনীতে আক্রান্ত ৫জন। গোয়ালতোড়, বুলানপুর ও যাত্রাবিষ্ণুপুরে ১জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছে।
কেশপুর থানার কেশপুর সদর, আনন্দপুর লাউড়িয়া তে ২জন করে আক্রান্ত। আক্রান্ত পাওয়া গেছে মইপুরতোড়িয়া, ধামাস, নয়াপাড়া, আমডাংরা তে ১জন করে আক্রান্ত। আক্রান্ত হাসপাতালের ১জন নার্সও।
১০ই মে ঘাটাল মহকুমার তিনটি থানায় সংক্রমন রীতিমতো কম। সাকুল্যে ৩৫জন। চন্দ্রকোনা থানার ক্ষীরপাই পৌরসভায় আক্রান্ত ৫জন। এছাড়া দেউলবেড়িয়ায় আক্রান্ত ২জন। বাকি ১জন করে আক্রান্ত বসনছড়া, গোঁসাইবাজার, বিরসিংহপুর, গোপালপুর, চাঁদা, বানপুর, দিনাপুরে।
ঘাটাল থানার ঘাটাল সদরেই আক্রান্ত ২জন। ২জন আক্রান্ত খড়িকাতে। বেলপুকুর, কাতান, আলমগঞ্জ, শীতলপুর, হরিসিংহপুর, কুসমান ও খড়ারে ১জন করে আক্রান্ত। অন্যদিকে দাসপুর থানার দাসপুর ও পাঁচবেড়িয়ায় ২জন করে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। আক্রান্ত মিলেছে সুজানগর, পলাশপাই, চাইপাট, ভুঁইয়াড়, অরিত, হরিনারায়নপুর ও কমলপুর থেকে।