নিজস্ব সংবাদদাতা: দেরিতে ব্যাট করে এ রাজ্যে যেন ছক্কা হাঁকাচ্ছে করোনা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রান তথা করোনা আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা। এবং যে হারে বাড়তে শুরু করেছে, তাতে এবার রীতিমতো কপালে ভাঁজ পড়ছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। সাধারণ মানুষের মধ্যেও বাড়ছে আতঙ্ক। আক্রান্তের সংখ্যায় শুক্রবার নতুন রেকর্ড রাজ্যের। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। যা এ যাবৎ সর্বাধিক বৃদ্ধি। রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এই মুহূর্তে ১৬৭৮। আর গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৯ জন। ফলে রাজ্যে মোট কোভিডে মৃত্যু দাঁড়াল ৮৮। শুক্রবার সন্ধেয় রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের তরফে প্রকাশিত বুলেটিনে এমনটাই জানা যাচ্ছে।
শুক্রবারের বুলেটিন বলছে, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৪৮। আরও ১৩০ জন আক্রান্ত হওয়ায় সেই মোট সংখ্যা হয়েছে ১৬৭৮। এখনও পর্যন্ত সেরে উঠেছেন মোট ৩২৩ জন। ৮৮ জন কোভিডে মারা যাওয়া ছাড়াও, আরও ৭২ জন করোনা সংক্রামিত ব্যক্তি মারা গেছেন কো-মর্বিডিটির কারণে। অর্থাৎ করোনা সংক্রমণ শরীরে থাকা অবস্থায় এ রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৬০ জনের। এই মুহূর্তে করোনা অ্যাকটিভ কেস অর্থাৎ শরীরে করোনার জীবাণু সক্রিয় রয়েছে ১১৯৫ জনের।
তবে সব কিছুর মধ্যেই লাগাম ছাড়া হাওড়া ও কলকাতা।শুক্রবারের বুলেটিনে জেলাওয়াড়ি যে তথ্য প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ভবন, তাতে দেখা যাচ্ছে, কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪৬। আজ আরও ৬৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন শহরে,
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতায় এখনও পর্যন্ত করোনার কারণে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের। ৫২ জন কোভিড-১৯ আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে কোমর্বিডিটির কারনে। কলকাতায় এখনও পর্যন্ত রোগমুক্ত হয়েছেন ১৬৭ জন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জন। শহরে এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭২ জন।
কলকাতার মতো হাওড়ার পরিস্থিতিও উদ্বেগ বাড়িয়েছে সরকারের। কারণ, হাওড়ায় এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬২ জন এবং শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী চিকিৎসাধীন ৩১৮ জন। অর্থাৎ হাওড়ায় রোগমুক্ত হওয়ার সংখ্যা কলকাতার তুলনায় অনেকটাই কম। গোটা রাজ্যে ডিসচার্জ রেট বা রোগমুক্ত হওয়ার হার ১৯.২৫ শতাংশ। কিন্তু হাওড়ায় সেই হার ১ শতাংশেরও কম। কলকাতায় রোগমুক্তির হার ১৪.১৩ শতাংশ।
বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৩৭ এবং হাওড়ায় ৩৬। উত্তর ২৪ পরগনায় এই সংখ্যা ১১। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলিতে ১-২টি করে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও পূর্ব মেদিনীপুরে সক্রিয় আক্রান্ত গত ২৪ ঘন্টায় বেড়েছে ৫। পশ্চিম মেদিনীপুর সহ বাদবাকি জেলা থেকে নতুন আক্রান্তের খবর নেই।