ওয়েব ডেস্ক : প্রতি ২৪ ঘন্টায় নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায়। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা এবং কমছে সুস্থতার হার কিন্তু সরকার বলছে নিয়ন্ত্রনের মধ্যেই রয়েছে পরিস্থিতি। শনিবারই রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই রাজ্যের মোট আক্রান্তের তুলনায় অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা অনেকটাই কম৷ মুখ্যসচিবের এই ঘোষণার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বিগত দিনের সব রেকর্ডকে ধূলিসাৎ করে রাজ্যে গত একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ২,১৯৮ জন। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪০,২০৯ জন।
শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮৯৪ জন। অর্থাৎ একদিনে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৩০৪ জন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আক্রান্তের সংখ্যা যে উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। এদিকে শুধু আক্রান্ত নয় সেই সাথে মৃতের সংখ্যাও প্রতিদিন রেকর্ড হারে বাড়ছে। রাজ্য সরকারের বুলেটিন অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১,০৭৬ জনের। বৃহস্পতিবারের বুলেটিন অনুযায়ী আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮। শুক্রবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬। এদিকে শনিবারে বুলেটিন অনুযায়ী সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ অর্থাৎ গত ৩ দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ৯ জন। তার মধ্যে সংক্রমণ ও মৃতের নিরিখে এগিয়ে রয়েছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা।
শুক্রবার কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৬৩। শনিবার তা বেড়ে হয়েছে ৬৪৮ জন। অর্থাৎ ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র কলকাতাতেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ৮৫ জন। শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনায় মারণ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিল ৪৪৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪৮ জন। অর্থাৎ একদিনে ১১১ জন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে বেড়েছে৷ এদিকে মুখ্যসচিব বলছেন রাজ্যে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রনেই রয়েছে। অন্যদিকে প্রতিদিন রেকর্ড হারে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা। পাশাপাশি, সরকারের তরফে বারংবার বলা হচ্ছে হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত বেড রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকদের তরফে দাবি করা হচ্ছে সরকারি ওয়েব সাইটে রীতিমতো ভুল তথ্য দিচ্ছে সরকার। যত সংখ্যক বেড দেখানো হচ্ছে আদতে তত বেডই হাসপাতালগুলিতে নেই। অনেকক্ষেত্রে তাও ভর্তি। ফলে চিকিৎসকদের দাবি, সরকারের এই ভুল তথ্যের কারণে রোগী পরিবারের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ফলে বোঝাই যাচ্ছে গাফিলতির কারণে বারংবার হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য সচিব দাবি করেন রাজ্যে যতজন আক্রান্ত তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার উপসর্গহীন। ফলে তারা বাড়িতে ও সেফ হোমে রয়েছেন এবং সংকট জনক ও সামান্য আক্রান্ত মিলিয়ে ১৯০০ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদি তাই হয় তবে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৭০ টা হাসপাতালে বেড সংকট দেখা দিচ্ছে কেন? কেন বেড না পেয়ে বিনা চিকিৎসায় মরতে হয়েছে রাজ্যের সাধারণ মানুষ থেকে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে? এটাই এখন বড়ো প্রশ্ন।