নিজস্ব সংবাদদাতা: জীবন মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করে অসম লড়াইয়ে নেমেছেন ৮০ হাজার লাল সেনানি। বাংলা জুড়ে করোনা যুদ্ধে যাঁদের ভূমিকা আজ সর্বত্রই। মেদিনীপুর শহরে লাল সেনানি বা রেড ভলান্টিয়ারদের হাতে যুদ্ধজয়ের বর্ম তুলে দিয়ে নিজেদের পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্য নৈতিক ব্যানার্জীর জন্য শুভেচ্ছা কামনা করলেন তার পরিবারের সদস্যরা।
মেদিনীপুর শহরের মানিকপুর জোড়া পুকুর এলাকার বাসিন্দা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তনকর্মী গৌতম মুৎসুদ্দী ও গৃহবধূ সুনিতা মুৎসুদ্দীর, কন্যা ব্যাঙ্ককর্মী শ্রুতি ব্যানার্জী ও জামাতা ব্যাঙ্ককর্মী সৌরভ ব্যানার্জীর পুত্র নৈতিকের জন্মদিন ছিল শুক্রবার। একটি পাবলিক স্কুলের ক্লাস ওয়ানের ছাত্র নৈতিক শুক্রবার ছ’বছর পূর্ণ করে সাত বছরে পা’দিল। সেই উপলক্ষ্যে নৈতিকের পরিবারের পক্ষ থেকে মেদিনীপুর শহর রেড ভলান্টিয়ারর্সদের হাতে কোভিড মোকাবিলায় পিপিই কিটস, গ্লাভস, মাস্ক, স্যানিটাইজার সহ ১৮ হাজার টাকা মূল্যের সুরক্ষা সামগ্রী তুলে দেন নৈতিকের পরিবার।
নৈতিকের দাদু গৌতম ব্যানার্জী জানান, ‘ রেড ভলেন্টিয়াররা যে কাজ করছেন তাকে মূল্যদিয়ে মাপা যায়না। এই অতিমারির কবলে যখন মানবজাতির অস্তিত্বই চ্যালেঞ্জের মুখে তখন তাঁরা এগিয়ে এসেছেন সেই বিপন্নতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এমনই একদল নির্ভীক দয়ালু সংগঠনের সদস্যদের কাছে আমরা নৈতিকের জন্য তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা চেয়ে নিয়েছি। তাঁদের লড়াইয়ে সামান্য কিছু অংশীদারিত্ব নিয়ে আমরা গর্বিত।”
ভলেন্টিয়ারদের পক্ষে এই সুরক্ষা সামগ্রী গ্রহণ করতে এসে এসএফআই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদি জানিয়েছেন, ” লড়াইটা আমরা শুরু করেছিলাম শুধু মানসিক জোর আর মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছাশক্তিকে সম্বল করেই। এখন বিভিন্ন মানুষ, সংগঠন আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন সাধ্যমত সাহায্য নিয়ে। ফলে কিছুটা শক্তি বাড়ছে আমাদের। আমরা এই পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই শুধু আমাদের নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। ছোট্ট নৈতিকের জন্য আমাদের অনেক শুভেচ্ছা রইল।”
এই দিনই অর্থাৎ শুক্রবার মেদিনীপুর শহর রেড ভলেন্টিয়ার শাখাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে শতাব্দী প্রাচীন বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)। শহরের রবীন্দ্রনগরে সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে এক অনাড়ম্বর কর্মসূচির এবিটিএ সদর মহকুমা শাখার অন্তর্গত মেদিনীপুর শহর, মেদিনীপুর গ্রামীণ, কেশপুর, শালবনী এই চারটি আঞ্চলিক শাখা ও অন্যান্যদের পক্ষ থেকে রেড ভলান্টিয়ারর্সদের হাতে নগদ পঁচিশ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। এবিটিএ’র পক্ষে জেলা সম্পাদক বিপদতারণ ঘোষ জানিয়েছেন, ” বিপন্ন এই সময়ে এই তরুণ সেনানীরা যেভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁকে স্যালুট জানায় এবিটিএ। সেই লড়াইকে আরও শক্তিশালী করতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা কিছু সাহায্য করেছেন যা আমরা এই সেনানীদের হাতে তুলে দিলাম।”